কিশোরীকে লাগাতার গণধর্ষণের অভিযোগ
হুমকি দিয়ে দিনের পর দিন যৌন অত্যাচারের তালিকায় উঠে গেল হাওড়ার নামও। হাওড়ার গোলাবাড়ি এলাকায় ভয় দেখিয়ে এক নাবালিকা কিশোরীকে প্রায় দু’মাস ধরে বারবার গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে চার যুবকের বিরুদ্ধে। মূল অভিযুক্তের বাবা দিল্লি পুলিশের কর্মী আর তার দাদা আছেন সেনাবাহিনীতে। ১৫ বছরের ওই কিশোরী শুক্রবার গোলাবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
হাওড়ার সিটি পুলিশের এডিসি (উত্তর) রশিদ মুনির খান বলেন, “গণধর্ষণের অভিযোগ পেয়ে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে। চতুর্থ জনের খোঁজ চলছে। নিয়ম মেনে ইতিমধ্যেই নাবালিকা মেয়েটির মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিও দিয়েছে সে।” ওই এলাকার একটি ক্লাবের দাবি, মূল অভিযুক্ত তাদের কাছে অপরাধ কবুল করেছে এবং মুচলেকাও দিয়েছে।
ওই নাবালিকা কিশোরীর পরিবার গোলাবাড়ি এলাকার ঘিঞ্জি বস্তির মধ্যে একটি তেতলা বাড়ির একতলায় ভাড়া থাকে। মেয়েটি পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে। বাড়ির দোতলায় থাকে বাড়িওয়ালার পরিবার। মেয়েটি থানায় অভিযোগ করেছে, বাড়িওয়ালার ১৯-২০ বছরের ছেলে মুকেশ পাণ্ডে তাকে ছাদের ঘরে নিয়ে গিয়ে ভয় দেখিয়ে শারীরিক অত্যাচার করত। মুকেশের সঙ্গে অত্যাচার চালাত তার তিন বন্ধু সুশীল চৌধুরী, সুনীল তিওয়ারি ও গোবিন্দ পোদ্দার। পুলিশ জানায়, চার অভিযুক্তের মধ্যে মুকেশ, সুনীল ও সুশীলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিষয়টি জানা গেল কী ভাবে?
মেয়েটির দিদি এ দিন বলেন, “ওই যুবকেরা আমার বোনকে ছাদের ঘরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করত। এই বাড়িরই অন্য একটি ঘরের বাসিন্দা সম্প্রতি ঘটনাটি দেখে ফেলেন। তিনি এলাকার একটি ক্লাবে গিয়ে সব জানান। ক্লাবের ছেলেরা আমার ভাইকে ডেকে ওই ঘটনার কথা বলে। তার পরে আমরা বোনকে জিজ্ঞাসা করে নির্যাতনের কথা জানতে পারি।” দু’মাস ধরে অত্যাচার চলে থাকলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে এত দেরি হল কেন? মেয়েটির দিদি বলেন, “কাউকে কিছু বললে খুন করা হবে বলে বোনকে ভয় দেখিয়েছিল মুকেশরা। তাই ও মুখ খুলতে সাহস করেনি।” ওই কিশোরী পুলিশের কাছেও হত্যার হুমকির কথা জানিয়েছে।
স্থানীয় ক্লাবটির সদস্য চন্দন সাউ এ দিন জানান, বুধবার সন্ধ্যায় অভিযুক্তদের ক্লাবে ডেকে পাঠিয়ে ঘটনার কথা জিজ্ঞাসা করা হয়। চন্দনের দাবি, তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে একটি মুচলেকা দেয়। মেয়েটির দিদির অভিযোগ, এই ঘটনার পরে বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত যুবকদের আত্মীয়েরা এসে তাঁর বোনকেই মারধর করেন। তিনি বলেন, “বোনের কোনও দোষ নেই। তবু প্রথম থেকে আমরা ওকেই মারধর করছি, বকাবকি করছি। আর অভিযুক্তদের বাড়ির লোকেরাও তাঁদের ছেলেদের কিছু না-বলে আমার বোনকেই দোষারোপ করেন। সেই সঙ্গে মারধরও করতে থাকেন।”
বাড়িটির ছ’ফুট বাই ছ’ফুটের ঘরে বাবা-মা ও ভাইবোনের সঙ্গে থাকে ওই নাবালিকা কিশোরী। তার বাবা অ্যালুমিনিয়ামের বাসন ফিরি করেন। মা করেন গৃহ পরিচারিকার কাজ। তিন দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে।
মেয়েটির ঘরের ঠিক উপরের তলাতেই থাকে মূল অভিযুক্ত মুকেশ। এ দিন দুপুরে মুকেশের বাড়িতে গিয়ে দেখা হল তার দিদির সঙ্গে। তিনি বলেন, “বছর দশেক হল, মেয়েটির পরিবার আমাদের বাড়িতে ভাড়া আছে। আমার বাবা দিল্লি পুলিশে চাকরি করেন। বড় ভাই সেনাবাহিনীতে আছে। মুকেশ ছোট। কেন যে ওই পরিবারটি এ ভাবে আমার ভাইকে অভিযুক্ত করল, বুঝতে পারছি না।” দিদি জানান, মুকেশ একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সে কলেজ আর কোচিং নিয়েই ব্যস্ত থাকে বলে দিদির দাবি। এই ঘটনায় মুকেশের সঙ্গে অন্য যে-দুই যুবককে ধরা হয়েছে, তাদের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের বন্ধুত্ব ছিল না বলেও দাবি করেন ওই তরুণী।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.