|
|
|
|
মহিলা ভোট টানতে মহিলা বিলই হাতিয়ার রাহুলের
শঙ্খদীপ দাস • নয়াদিল্লি
২৪ জানুয়ারি |
সংসদের আসন্ন অধিবেশনে ফের মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশের কসরৎ করে কংগ্রেসের অনুকূলে প্রগতিশীল ভোটের ঢেউ তুলতে চাইছেন রাহুল গাঁধী।
দ্বিতীয় ইউপিএ জমানায় ২০১০ সালেই রাজ্যসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিলটি পাশের জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন সনিয়া গাঁধী। সেখানে পাশ হলেও রাজনৈতিক সর্বসম্মতির অভাবে বিলটি লোকসভায় আর পাশ করানো যায়নি। সরকারের স্থায়িত্বের কথা ভেবে লোকসভায় বিলটি পাশ করার ঝুঁকি আর নেননি সনিয়া। কারণ মুলায়ম সিংহ, লালুপ্রসাদ, নীতীশ কুমারের মতো নেতারা মহিলা সংরক্ষণ বিলের ঘোর বিরোধী।
কিন্তু ভোটের আগে সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে এখন আর উদ্বেগ নেই কংগ্রেসের। সে কারণেই সামগ্রিক ভাবে মহিলা ও প্রগতিশীলদের বার্তা দিতে রাহুল চাইছেন বিলটি পাশ করাতে আবার তৎপর হোক সরকার। মহিলা সংরক্ষণ বিলে বিজেপির আপত্তি নেই। অসম্মতি নেই বামেদেরও। ফলে বাকি রাজনৈতিক দলগুলি সংসদে যতই হইচই করুক, এই ত্রিশক্তি এক হলে লোকসভায় মহিলাদের জন্য এক তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণ কোনও বাধা হবে না। রাহুল শিবিরের বক্তব্য, অতীতের মতো লালু-মুলায়ম-নীতীশরা সংসদে বিল ছিঁড়ে, ওয়েলে গড়াগড়ি খেয়ে সভা ভণ্ডুল করার চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু তা হলেও কংগ্রেস বলতে পারবে ‘রাহুলজি আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন বিল পাশ করাতে’।
কংগ্রেসের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ভোটারদের মধ্যে মহিলারা প্রায় অর্ধেক। সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল হলে গ্রামাঞ্চলে হয়তো খুব বেশি সাড়া পড়বে না। কিন্তু শহরের মহিলারা এতে খুশিই হবেন। সে কথা মাথায় রেখেই ক’দিন আগে কংগ্রেসের অধিবেশন মঞ্চ থেকে মহিলাদের ক্ষমতায়ন নিয়ে দীর্ঘ বক্তৃতা দিয়েছেন রাহুল। জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক মহিলাকে প্রার্থী করবে কংগ্রেস। সেই সঙ্গে কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যগুলির মধ্যে অর্ধেক রাজ্যে মহিলাদের মুখ্যমন্ত্রী করবেন তিনি।
সরকারের মন্ত্রী-আমলারা অবশ্য বলছেন, বিষয়টা শুনতে ভাল হলেও বাস্তবায়নটা সহজ নয়। অতীতে সংসদে মহিলা বিল উঠতেই সভা পণ্ড হয়েছে। হিন্দি বলয়ের আঞ্চলিক দলগুলি সর্বশক্তি দিয়ে বিল রুখে দিয়েছে। তা ছাড়া ভোটের আগে কংগ্রেসকে মহিলা বিল পাশ করাতে দিয়ে বিজেপিরই বা লাভ কী। নানা অছিলায় তারাও অধিবেশন ভণ্ডুল করে দিতে পারে।
সংসদের আসন্ন অধিবেশনে কিন্তু সময় বাড়ন্ত। বাজেট ও রেল বাজেট পাশের পর যেটুকু সময় বাঁচবে, তার মধ্যে দুর্নীতি-বিরোধী ৬টি বিল পাশের জন্য এর মধ্যেই রাহুল ফরমান দিয়ে রেখেছেন। মহিলা বিল লোকসভায় পাশ করানোর সময় বের করা সহজ নয়। তবে রাহুল শিবিরের বক্তব্য, দুর্নীতি-বিরোধী বিলগুলি এক সঙ্গে পাশ করানোর পর মহিলা বিল আনা হোক লোকসভায়। পাশ হলে ভাল, না হলেও হাতে অস্ত্র পাবে কংগ্রেস। |
|
|
|
|
|