|
|
|
|
অসমে গাড়িতে বিস্ফোরণ, হত দুই জঙ্গি
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি
২৪ জানুয়ারি |
প্রজাতন্ত্র দিবসে গুয়াহাটিতে নাশকতার ছক কষছে আলফা স্বাধীনএমনই আশঙ্কা করছে পুলিশ।
আজই অসমের রাজধানী যাওয়ার পথে বিস্ফোরণে জঙ্গিদের একটি গাড়ি ধ্বংস হয়েছে। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দুই জঙ্গির। পুলিশের দাবি, গুয়াহাটিতে হামলার জন্য ওই গাড়িতে বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
শুধু আলফাই নয়, ২৬ জানুয়ারির আগে বড়োভূমিতে এনডিএফবি-র সংবিজিৎ গোষ্ঠী ও নামনি অসমে কেএলও সংগঠনের গতিবিধি নিয়েও চিন্তায় অসম পুলিশ। আজ জঙ্গি সংগঠনগুলির শীর্ষ নেতাদের নামে ‘পুরস্কার’ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
গোয়ালপাড়ায় জঙ্গিদের সঙ্গে পুলিশ সংঘর্ষে আলফা স্বাধীন দলের সদস্য সন্তোষ রাভার মৃত্যুর পর তাকে ‘অমর শহিদ’ বলে চিহ্নিত করেছিল জঙ্গিরা। প্রতিশোধের হুমকিও দিয়েছিল। এরপরই আজ গাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনার জেরে নিরাপত্তা জোরদার করতে তৎপর রাজ্য সরকার। পুলিশ জানায়, গত রাতে সাড়ে ৮টা নাগাদ, ডিমা হাসাও জেলার উমরাংশুতে বিস্ফোরণ হয়। রাজ্য পুলিশের আইজি এস এন সিংহ জানান, গুয়াহাটিতে নাশকতার জন্যই বিস্ফোরক নিয়ে আসা হচ্ছিল। কিন্তু কোনও কারণে মাঝরাস্তায় ‘টাইম-বোমা’টি ফেটে যায়। মৃত্যু হয় লংকার বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন ও নখুঁটির বাসিন্দা গাড়িচালক আমিনুদ্দিনের।
অসম পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) এ পি রাউত জানান, আলফার পাশাপাশি রাজ্যের চিন্তার কারণ এনডিএফবি (সংবিজিৎ) ও কেএলও সংগঠনগুলিও। এনডিএফবি গোষ্ঠীর প্রধান সংবিজিৎ-সহ ২২ জন নেতা ও কর্মীর নামে পুরস্কার ঘোষণা করেছে অসম পুলিশ। ওই ১৫ জনের ছবি প্রকাশ করে জানানো হয়, দলের সেনাধ্যক্ষ ও সভাপতি সংবিজিৎ ইংতি কাথার, সাধারণ সম্পাদক বি সাওরাইগাওরা, সামরিক সচিব সি রিখা ও মুখপাত্র রঞ্জিৎ বসুমাতারির অবস্থান বা গতিবিধির ব্যাপারে নিশ্চিত খবর দিলে মিলবে ১০ লক্ষ টাকার ইনাম। উপ-সেনাধ্যক্ষ জি বিদাই ও অন্য ১০ জন নেতার খবর দিলে পুরস্কার ৫ লক্ষ টাকা করে। এনডিএফবি-র নেতা-সদস্যদের ঠিকানা জানালে মোট ১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকার পুরস্কার ঘোষণা হয়েছে।
কেএলও সংগঠনের নেতাদের খবর দিলেও ইনাম দেবে অসম পুলিশ। রাউতের মতে, ওই দলের রাশ এখন সাধারণ সম্পাদক কৈলাস কোচের হাতে। কৈলাস ওরফে কেশব বর্মণ ওরফে গুরু ওরফে শিরোই এখন অসম পুলিশের কাছে কেএলও-র এক নম্বর নেতা।
কোকরাঝাড় জেলার ভাওরাগুড়ির আদি বাসিন্দা কৈলাসের নামে ৫ লক্ষ টাকার ইনাম রাখা হয়েছে। একই পরিমাণ পুরস্কার ঘোষণা হয়েছে দলের সেনাধ্যক্ষ নিত্যানন্দ সরকার ওরফে শ্যাম রায় ওরফে জামাই ওরফে অভয় ওরফে দীপকের নামে। দলের সহকারী সাংগঠনিক সচিব লালচাঁদ ডেকা ওরফে লালু সিংহ ওরফে হরেশ্বর বর্মণ ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক দিগম্বর রায় ওরফে জীবন কোচের নামেও রয়েছে ৫ লক্ষ টাকার পুরস্কার। সংগঠনের আরও সাত সদস্যের নামে ৩ লক্ষ টাকা করে পুর,্কার ঘোষণা করেছে অসম পুলিশ। প্রকাশ করা হয়েছে সেনাধ্যক্ষ নিত্য ও হিরণ্য রায় নামে এক ক্যাডারের ছবি।
তবে, কেএলও সভাপতি জীবন সিংহ, সহকারী প্রচার সচিব সুদীপ সরকার ও প্রচার সচিব রাজীব কাথাই বা টম অধিকারীদের নাম ওই তালিকায় ঠাঁই পায়নি। পুলিশের মতে, জীবন-সহ বাকি জঙ্গি নেতারা দলে আগের গুরুত্ব হারিয়েছেন। টমের নাম করে যে সব ফোন আসে তার সবগুলিই করে সংগঠনের অর্থ সচিব মঞ্চলাল সিংহ।
আইজি এস এন সিংহ জানান, অসম ও পশ্চিমবঙ্গে সক্রিয় কেএলও সদস্যের সংখ্যা বড়জোর শ’দেড়েক। তারা আলফার কাছ থেকেই অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ পাচ্ছে। তবে, মাওবাদীদের সঙ্গে কেএলওর যোগাযোগের কোনও প্রমাণ নেই।
তবে কৈলাস কোচ নিজে বলছেন, “জীবন নিজের জায়গাতেই রয়েছেন। আপাতত দলের সিদ্ধান্ত জানানোর দায়িত্ব রয়েছে আমার উপরে। প্রয়োজন হলেই ফের জীবন সিংহ কথা বলবেন।” |
|
|
|
|
|