বাইপাসে রুবি হাসপাতালের সামনে, ৪৭বি বাসস্ট্যান্ডের কাছে ওয়াটার পার্ক তৈরির প্রকল্পটি আপাতত রূপায়িত হচ্ছে না। কারণ, একটি বড় পুকুর-সহ প্রায় ৩০ বিঘা কেএমডিএ-র এই জমিটি জবরদখল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এই জমি কী ভাবে পুনরুদ্ধার করা হবে এবং অন্য কোনও প্রকল্প করা হবে কি না তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এর আগে বাঘাযতীনে একটি অত্যাধুনিক ওয়াটার পার্ক তৈরি করেছে কেএমডিএ। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানান, সরকারি এবং বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে এই জলাভূমিতে ওয়াটার পার্ক তৈরির পরিকল্পনা ছিল। পরে, কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ
বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রকল্পের জন্য এই জমি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এই জলাভূমি বেদখল হওয়ায় কোন সংস্থা এটি নিতে চায়নি। তাই এই প্রকল্প আপাতত বন্ধ রয়েছে। কেএমডিএ-র মুখ্য বাস্তুকার প্রিয়তোষ ভট্টাচার্য বলেন, “বর্তমানে এখানে কোনও ওয়াটার পার্ক তৈরির পরিকল্পনা নেই।” |
জবরদখল বহাল। আপাতত বাতিল প্রকল্প। —নিজস্ব চিত্র। |
এই ওয়াটার পার্ক তৈরির পরিকল্পনা করেছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্প হবে। প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছিল এই বড় ঝিলে যাবতীয় বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। ঝিলের মধ্যেই নৌকায় ভ্রমণ, রেস্তোরাঁ, নানা ধরনের জলক্রীড়া, মাছধরা, এমনকী ঝিলের পাশের জমিতেই থাকার ব্যবস্থা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী নকশাও তৈরি হয়েছিল। প্রকল্পটি রূপায়িত হলে এটি শহরের অন্যতম আধুনিক ওয়াটার পার্ক হত বলে কেএমডিএ-র দাবি। এর থেকে কিছু অর্থ রোজগার হবে বলেও পরিকল্পনা ছিল। এখানে প্রবেশের জন্য
টিকিটের ব্যবস্থা করার কথাও ভাবা হয়েছিল।
কেএমডিএর এক আধিকারিক জানান, আলোচনার পর দরপত্র ডেকে একটি সংস্থাকে এই কাজের বরাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে, সংস্থাকে জমি হস্তান্তর করা হয়নি। কারণ, এলাকা পরিদর্শন করার পরে দেখা যায় এই ঝিলের চারধারেই রয়েছে প্রায় শ’পাঁচেক ঝুপড়িবাসী। কেএমডিএ-র পক্ষ থেকে এখানে অভিযান চালিয়ে ঝুপড়িবাসীদের সরিয়ে দিয়ে এলাকাটি টিন দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। কেএমডিএ এখানে ‘ওয়াটার পার্ক’ তৈরি হবে বলে একটি বোর্ডও লাগিয়ে দেয়। কিছু দিনের মধ্যেই ঝুপড়িবাসীরা ফের টিনের সীমানা ভেঙে পুনরায় বাস করতে শুরু করেন।
এই ঝিলের ধারটিতে আবর্জনার স্তূপ। ঝুপড়িবাসীরা জানান, কেএমডিএ বহু বার সরে যেতে বললেও বিকল্প জায়গা না পাওয়ায় অন্যত্র যাওয়া সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে পুরসভা কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?
পুরকর্তৃপক্ষ জানান, শহরের অনেক ঝুপড়িবাসীদেরই কেন্দ্রীয় সরকারের দরিদ্র দূরীকরণ প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। নির্দিষ্ট ভাবে এখানকার ঝুপড়িবাসীদের ব্যাপারে কলকাতা পুরসভার কিছু করার নেই। যেহেতু এরা কেএমডিএর জমিতে বসবাস করছে কেএমডিএকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। |