|
|
|
|
পূর্বে প্রতি ব্লকে নার্সারি জেলা পরিষদের
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
জেলার প্রতিটি ব্লকে একটি করে মডেল নার্সারি, শিশু উদ্যান ও পিকনিক স্পট গড়ার উদ্যোগ নিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। বুধবার জেলা পরিষদের বন ও ভূমি সংক্রান্ত স্থায়ী সমিতির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা পরিষদের সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল। জেলা সভাধিপতি বলেন, “আগামী দু’এক মাসের মধ্যেই নার্সারি গড়ার কাজ শুরু হেবে। শিশু উদ্যান ও পিকনিক স্পট গড়ার কাজ ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরের মধ্যে রূপায়ণ করা হবে। সরকারি খাস জমিতেই প্রকল্পগুলি গড়া হবে। এই প্রকল্পে অর্থসংস্থান করবে জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি। তবে প্রয়োজনীয় অর্থের কিছুটা অংশ জেলা প্রশাসনও ব্যয় করবে।” সভায় জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বন ও ভূমি দফতরের আধিকারিকরাও।
আগামী ১৪-২০ জুলাই জাতীয় পরিবেশ সপ্তাহ পালনের অঙ্গ হিসেবে বনমহোৎসব কর্মসূচি নিয়েছে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মৃণালকান্তি দাস বলেন, “পরিবেশ সপ্তাহ উপলক্ষে প্রতিটি ব্লকে এক লক্ষ করে ফুল, ফল ও অন্য গাছের চারা বিনামূল্যে বিলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই মডেল নার্সারিগুলিতেই এই চারা উৎপাদন করা হবে। স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের চারা প্রতিপালনের কাজে লাগানো হবে।” তিনি জানান, পঞ্চায়েত সমিতির ঠিক করে দেওয়া জমিতেই এই প্রকল্প গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজনে এক্ষেত্রে বন দফতরের প্রযুক্তিগত সহায়তা নেওয়া হবে। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর পরিবেশ সপ্তাহ উপলক্ষে চারা বিলির কর্মসূচি নেয় বন দফতর। বন দফতরের উৎপাদিত চারার সংখ্যা কম হয়। ফলে পরিকাঠামোর অভাবে চারা বিলি করতে গিয়ে হিমসিম খেতে হয় বন দফতরকে। তাই ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের মাধ্যমে চারা বিলি করেও লক্ষ্য মাত্রা পূরণ করা যায় না। ফলে বনসৃজনের ক্ষেত্রে ঘাটতি থেকে যায়। এক্ষেত্রে নার্সারিগুলিতে চারা প্রতিপালনের কাজ করলে সেই সমস্যা মিটবে। পাশাপাশি সারা বছর নার্সারিতে উৎপাদিত চারা বিক্রি করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাও আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।
জেলা আধিকারিক নিতাই সাহা বলেন, “গতবার আমরা প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার চারা বিলির জন্য তৈরি করেছিলাম। এবছর একশো হেক্টর জমিতে এনআরইজি প্রকল্পে স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে এই পরিমাণ চারা তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের পক্ষে ২৫ লক্ষ চারা উৎপাদন সম্ভব নয়। তাই চারা উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরা জেলা পরিষদকে প্রয়োজনে সহযোগিতা করব।” মৃণালকান্তিবাবু জানান, পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকে ওই প্রকল্পের জন্য দ্রুত জমি চিহ্নিত করে সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) জমা দিতে বলা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, শিশু উদ্যান ও পিকনিক স্পটের জন্য ন্যূনতম ১০ লক্ষ টাকার প্রতিটি প্রকল্প তৈরি করতে হবে। এই দুই ক্ষেত্রে সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি পানীয় জল, ছোট ঘর ও অন্য পরিকাঠামো গড়ার কাজও করা হবে। বন দফতর ও পর্যটন দফতরের থেকেও আর্থিক সহায়তা মিলবে।
পঞ্চায়েত সমিতিগুলির সূত্রে খবর, প্রতিটি ব্লক সদরে একটি করে শিশু উদ্যান গড়ার জন্য স্থানীয়া বাসিন্দারা দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছেন। তাছাড়া প্রতিটি ব্লকেই কোনও বড় পুকুর, খাল, নদী বা প্রাচীন স্থাপত্যের পাশে সরকারি জমি পড়ে রয়েছে। ছুটির মরসুমে স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে পিকনিক করতে আসেন। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় ওই স্থানগুলি আকর্ষণ হারাচ্ছে। তাই জেলা পরিষদ ও প্রশাসনের উদ্যোগে ওই সব জায়গার উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা হলে স্থানীয় বাসিন্দারা বিশেষ করে শিশুরা বিনোদনের সুযোগ পাবে। |
|
|
|
|
|