আইসিসি বনাম বিসিসিআই
‘প্রাপ্য’ আদায়ের লড়াইয়ে বোর্ডের সিলমোহর

২৩ জানুয়ারি
ক্রিকেট বিশ্বের ক্ষমতা লাভের প্রশ্নে আইসিসি-র বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ভারতের যে চার দফা দাবি নিয়ে বোর্ড-আইসিসি সঙ্ঘাত, প্রত্যাশিত ভাবেই তা বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে পাশ হয়ে গেল। অনুমোদন পেয়ে গেল শ্রীনিবাসনের ‘প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ও। চলতি মাসের শেষে (২৮-২৯) দুবাইয়ে আইসিসি-র এগজিকিউটিভ কমিটির বৈঠক আছে। সেখানে যদি প্রস্তাবিত দাবি না মানে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা, তা হলে আইসিসি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারে ভারত।
এ দিন ভোরে মা প্রয়াত হওয়ায় শ্রীনিবাসন বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। তাঁর জায়গায় চেন্নাই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট শিবলাল যাদব। বৈঠক শেষে বোর্ডের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, তাদের কোনও দাবি ক্ষমতা আদায়ের কথা ভেবে নয়। ক্রিকেট বিশ্বে ভারতের যা অবদান, তার প্রেক্ষিতে প্রাপ্য চেয়ে নেওয়া হচ্ছে।
“ক্রিকেটীয় কার্যকলাপ এই কারণে কোনও ভাবেই প্রভাবিত হবে না। ভারত যে মুনাফার ব্যবস্থাটা করে তার স্বীকৃতি হিসেবেই আইসিসিতে এই বদলটা দরকার,” এ দিন বৈঠক শেষে বলে দেন বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেল। তাঁর আরও সংযোজন, “এখনও পর্যন্ত এই প্রস্তাবের বিরোধিতা হয়নি। আর এটা ক্ষমতা আদায়ের জন্য হচ্ছে না। এটা পুরোটাই বোঝাপড়ার ব্যাপার। আমরা ঠিক ততটুকুই চাইছি, যতটা আমাদের প্রাপ্য।”
সরকারি ভাবে বোর্ড সচিব এই বক্তব্য পেশ করলেও ঘটনা হল, ভারতীয় বোর্ড যুদ্ধের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। প্রসঙ্গত, আইসিসি-র কাছে চারটে দাবি পেশ করতে চলেছে ভারত। আইসিসি-র আয়ের থেকে ভারতের প্রাপ্য ভাগ আরও বাড়াতে হবে। কারণ আইসিসি-র মুনাফা দিন দিন বাড়ছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের জন্য। কিন্তু বাকি সদস্য দেশগুলো যা পায়, ভারত-ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াকেও ওই একই অংশ দেওয়া হয়। তা ছাড়া আইসিসি-র প্রেসিডেন্ট পদের সঙ্গে সমান্তরাল আরও একটা পদ তৈরি করা দরকার। আইসিসি চেয়ারম্যান পদ। যাঁর ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের চেয়েও শক্তিশালী হবে। আরও দু’টো দাবি আছে। প্রতি তিন বছর অন্তর ভারতে কোনও আইসিসি টুর্নামেন্ট দিতে হবে। আর ফিউচার ট্যুর অ্যান্ড প্রোগামে অনেক বেশি প্রাধান্য দিতে হবে ভারত-সহ তিন দেশের ইচ্ছেকে।
কিন্তু আইসিসি বৈঠকে এই দাবি পাশ করাতে গেলে দশ পূর্ণসদস্য দেশের মধ্যে সাতের সমর্থন দরকার। বিরোধী পক্ষে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মনে করা হচ্ছে, এ নিয়ে ভোটাভুটি হলে বাংলাদেশ এবং জিম্বাবোয়ের ভোট খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। এ দিনই আবার ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা জিম্বাবোয়ে ক্রিকেট বোর্ডকে প্রস্তাব দিল যে, তারা টেস্ট খেলতে জিম্বাবোয়ে সফরে যেতে চায়। যে পদক্ষেপকে মনে করা হচ্ছে স্বপক্ষে জিম্বাবোয়ের ভোট পাওয়ার কৌশল।
বোর্ডের কেউ কেউ আবার এই সঙ্ঘাতের প্রভাব আসন্ন আইপিএলের উপরেও পড়তে দেখছেন। দু’টো মত পাওয়া যাচ্ছে। এক দলের বক্তব্য, সাধারণ নির্বাচনের কারণে জেরে যদি আসন্ন আইপিএল দেশে করা না যায়, তা হলে ক্রিকেট বিশ্বে এই নতুন সঙ্ঘাতের কারণে সমস্যা হতে পারে। ভারতের পরিবর্ত কেন্দ্র হিসেবে এত দিন ভাবা হচ্ছিল শ্রীলঙ্কাকে। কিন্তু বর্তমান যুদ্ধে শ্রীলঙ্কা বোর্ড শ্রীনিবাসনদের ‘শত্রুপক্ষ’। বলা হচ্ছে, দেশে হলে তো কথাই নেই। কিন্তু আইপিএল সেভেন যদি শেষ পর্যন্ত দেশের বাইরে নিয়ে যেতে হয়, তা হলে আপাতত নামটা শ্রীলঙ্কা হওয়া মুশকিল। বরং বরাত নাকি খুলে যেতে পারে ইংল্যান্ডের। কিন্তু আর এক দলের বক্তব্য, ইংল্যান্ডে নিয়ে গেলে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বোঝানোর গুরুদায়িত্বও তখন বোর্ডকেই নিতে হবে। আর শ্রীলঙ্কা বোর্ড যদি রাজি থাকে টুর্নামেন্ট করতে তা হলে বোর্ডের উপর ফ্র্যাঞ্চাইজিদের চাপ বাড়বে বই কমবে না।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.