পুর উন্নয়নে তিন লক্ষ টাকা দান করলেন কাটোয়া পুরসভার কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ। পুরপ্রধান শুভ্রা রায়ের হাতে তিনি ওই টাকা তুলে দেন। বৃহস্পতিবার পুরপ্রধান বলেন, “কাটোয়া পুরসভা পরিচালিত বিসি রায় পলিক্লিনিকে সিটি স্ক্যান যন্ত্র কেনা হয়েছে। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর দেওয়া টাকা ওখানেই কাজে লেগেছে।”
মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ।
|
এ দিন বিকালে সিটি স্ক্যান যন্ত্রটির উদ্বোধন করেন এসডিও (কাটোয়া) আর অর্জুন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের তহবিল থেকে অর্থ অনুদানের পাশাপাশি পুর উন্নয়ন তহবিলের টাকায় যন্ত্রটি কেনা হয়েছে। কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক ও কাউন্সিলর রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সিটি স্ক্যান যন্ত্রের চাহিদা দীর্ঘ দিন ধরেই ছিল। এর সাহায্যে কাটোয়ার চিকিৎসা পরিষেবা আরও উন্নত হবে।”
২০০৫ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত মৃত্যুঞ্জয়বাবু কাটোয়া পুরসভায় কাউন্সিলর ছিলেন। হাওড়া-ব্যান্ডেল শাখায় রেলের সিগন্যাল বিভাগে কাজ করতেন তিনি। অবসর নেওয়ার কয়েক বছর আগে রেলের তরফে ‘সেরা কর্মী’র পুরস্কারও পান। অবিবাহিত মৃত্যুঞ্জয়বাবু কাটোয়ার গোয়ালপাড়ার বাড়িতে একমাত্র ভাইঝির সঙ্গে থাকেন। মৃত্যুঞ্জয়বাবু বলেন, “সাধারণ মানুষের জন্য কিছু একটা করা দরকার বলে মনে হচ্ছিল। যখন শুনলাম, সিটি স্ক্যান মেশিন কেনার জন্য টাকা জোগাড় করার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে তখনই ঠিক করে নিয়েছিলাম, যতটা সম্ভব সাহায্য করব। তারপরেই এই উদ্যোগ নিই।”
কাটোয়ার বাসিন্দারা জানান, শহরের একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সিটি স্ক্যানের ব্যবস্থা থাকলেও তা বেশিরভাগ দিনই খারাপ থাকে। ফলে সিটি স্ক্যান করানোর প্রয়োজন হলে ৬০ কিলোমিটার দূরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছুটতে হয় রোগীদের। কাটোয়া হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক সিদ্ধেশ্বর গুপ্ত বলেন, “অনেক সময় সিটি স্ক্যানের জন্য রোগীদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হয়।”
মৃত্যুঞ্জয়বাবু বলেন, “আমি শুনেছি, বর্ধমানে গিয়েও অনেক সময় পরিষেবা পান না রোগীরা। ফলে বাইরে থেকে বেশি টাকা দিয়ে সিটি স্ক্যান করাতে হয়। আমার মনে হয়, স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নয়নে টাকা দিলে মানুষকে সবচেয়ে বেশি সেবা করা যাবে।” এর আগেও তিনি পুরসভার বিসি রায় পলিক্লিনিকে ডিজিট্যাল এক্স-রে কেনার জন্য দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “আশা করি মৃত্যুঞ্জয়বাবুর মতো শহরের উন্নয়নের জন্য আরও অনেকে এগিয়ে আসবেন।”
মৃত্যুঞ্জয়বাবু যে সময় কাউন্সিলর ছিলেন, তখন কাটোয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা ছিলেন সিপিএমের কৌশিক চট্টোপাধ্যায়। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর এমন পদক্ষেপের প্রশংসা করছেন তিনিও। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সিটি স্ক্যান যন্ত্র কেনার জন্য মৃত্যুঞ্জয়বাবুর সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়ও সাহায্য করেছেন। |