সম্পাদক সমীপেষু...
বোটানিক্যাল গার্ডেনের দুর্দশা
শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন বাধর্ক্যের ভারে জরাগ্রস্ত, হাড়ে-মজ্জায় জরাজীর্ণতা প্রকট। ১৯৮৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আর্মি অফিসার রবার্ট কিড হাওড়ার শিবপুরে গঙ্গাপারে বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রতিষ্ঠা করার পর থেকে আজ ২০১৪ সালে তার বয়স দুশো ছাব্বিশ বছর। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পরিচর্যার মধ্যে কর্তৃপক্ষের তরফে যে আন্তরিকতার একান্ত প্রয়োজন, তার বড়ই অভাব। ২০০৯ সালের ২৫ জুন মহাসমারোহে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর স্মরণে শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস ইন্ডিয়ান বোটানিক গার্ডেন। গার্ডেনের অবস্থা যে পরিমাণ অযত্নের সাক্ষ্য বহন করে, তাতে তো আচার্য জগদীশচন্দ্রের প্রতি সম্মান প্রদর্শন হচ্ছে না বলেই মনে হয়।
ভিতরে ঢুকলে চোখে পড়বে কেবল শুকনো পাতার জঞ্জাল, অজস্র তাজা গাছ গুঁড়ি থেকে কাটা, ফুলগাছের বিড়ম্বনা, বিধ্বস্ত কাচে ঘেরা অর্কিড হাউস, ক্যাকটাস হাউস। ঐতিহ্যবাহী বটগাছ আপন ক্ষমতায় দাঁড়িয়ে আছে বটে, কিন্তু ক্রমশ তা যত্নের অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। গঙ্গাপারে চেয়ারে বসে জলের দিকে তাকিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার কোনও চেষ্টা না-করাই ভাল। কারণ, একে তো আগাছার জঞ্জালে গঙ্গার জল দেখাই যায় না। তার উপরে বসার চেয়ারগুলি অধিকাংশই ভাঙা। নেই কোনও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শৌচালয়। নেই একটু চা-কফি, হাল্কা টিফিনের ব্যবস্থা। অথবা একটা ক্যান্টিন, যেখানে সকাল থেকে কলকাতা শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে আসা যাত্রীরা দুপুরবেলা একটু ঝোল-ভাত খেয়ে নিতে পারেন। আছে শুধু প্রবেশ মূল্য আর প্রবেশ পথে জলের বোতল, প্লাস্টিকের প্যাকেট বর্জনের বাড়াবাড়ি।
আমরা এমন নির্লিপ্ত কেন
সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরীর ‘বিরোধীদের নিয়েই কিন্তু চলতে হবে’ (১৬-১) প্রবন্ধটি পড়ে মনে হল, এ রকম প্রবন্ধ কেন কেউ লেখেন না “বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রাণ-সম্পত্তি-ইজ্জত কিন্তু রক্ষা করতে হবে”?
গোটা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যত বিদেশি আছেন তাঁদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয় হিন্দুদের নিকটতম আত্মীয় বাংলাদেশের হিন্দুরা, যাঁদের নাম আমাদের মতোই দাস-মণ্ডল-সাহা-সরকার-ব্যানার্জি-রায়-ঘোষ। কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দুদের ভয়াবহ অবস্থা সম্বন্ধে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের (যাঁদের এক বিশাল অংশ ধর্মীয় অত্যাচারের ফলে বাংলাদেশ তথা পূর্ব পাকিস্তান থেকে বিতাড়িত) এক অদ্ভুত নির্লিপ্তি আছে, সাধারণ বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা করা কঠিন। তুলনীয়, শ্রীলঙ্কায় যখন তামিলদের উপর অত্যাচার হয় তখন ভারতীয় তামিলরা ফুঁসে ওঠেন, এবং কেন্দ্রীয় সরকারের উপর এমন চাপ সৃষ্টি করেন যে তার ফলে দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত নভেম্বর ২০১৩-তে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ সম্মেলন বয়কট করতে বাধ্য হন, এবং ভারতের চাপে মরিশাস ও কানাডা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে অস্বীকার করে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন যান বটে, কিন্তু শ্রীলঙ্কা সরকারকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাবার জন্য তামিল-অধ্যুষিত জাফনায় সফর করে আসেন। অথচ বাংলাদেশে হিন্দুর অনুপাত ২৯% (১৯৪১) থেকে নেমে এল বর্তমানের ৯%, শহরগুলো হিন্দুশূন্য হয়ে গেল, দুটো বড় আকারের গণহত্যা হল: ১৯৫০ এবং ১৯৭১। এ ছাড়া ছোট মাপের গণহত্যা হয়েছে ১৯৬৪ সালে (হজরতবাল মসজিদ কাণ্ড), ১৯৮৮ সালে (ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা), ১৯৯২ সালে (অযোধ্যাকাণ্ড) এবং ২০০১ (খালেদা জিয়ার নির্বাচনী জয়)। এই রকম গণহত্যা এই মুহূর্তে আবার হচ্ছে: মীরেরসরাই (চট্টগ্রাম), ঠাকুরগাঁও, অভয়নগর (যশোর), এ রকম বহু জায়গায়। সঙ্গে চলেছে হিন্দুমন্দির ধ্বংস, এবং হিন্দুনারীকে ধর্ষণ। ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণ, রাজনৈতিক দল, সংবাদমাধ্যম (ব্যতিক্রম আছে) নির্বিকার, নির্লিপ্ত, উদাসীন।
আমার প্রশ্ন, এই নির্লিপ্তির কারণ কী? এ কি হিন্দু-বাঙালির নেহরুবাদী বামপন্থী ভাবধারায় সম্পৃক্ত হয়ে যাওয়া— যে ভাবধারা আমাদের শিখিয়েছে, ভিয়েতনাম, কিউবা, ইরাক সব নিয়ে গলা ফাটাতে হবে, কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দুদের সম্বন্ধে ঠোঁঠে কুলুপ? না কি এটা হরপ্রসাদ শাস্ত্রী-কথিত বাঙালির আত্মবিস্মৃতি?
মেয়েদের কামরা
ব্যাঙ্কে কাজ করার সুবাদে দুর্গাপুরে থাকি। সম্প্রতি আমার একান্ত প্রিয়জন মারা যাওয়ায় বাঁকুড়ায় থাকতে হচ্ছে। কলকাতা থেকে বাঁকুড়ায় আসার জন্য হাওড়া স্টেশন থেকে প্রথম বার পুরুলিয়া এক্সপ্রেস ট্রেন ধরে আমি অবাক। এই ট্রেনে কোনও লেডিজ কামরা নেই। চার ধারে মহিলাদের উপর এত কিছু অঘটন হচ্ছে, তবুও একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনে রেল কর্তৃপক্ষ কেন মেয়েদের জন্য পৃথক কামরার ব্যবস্থা করবে না?
দেখলাম, পুরুলিয়া এক্সপ্রেসে কী নিদারুণ ভাবে মেয়েদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। পুরুষদের সঙ্গে ওঠা-নামায় পাড়ছে না বলে অনেককেই দাঁড়িয়ে যেতে হচ্ছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.