সাময়িক মুক্তি মিলেছিল। কিন্তু ফের মেরুঝড় আর তুষারপাতের কবলে আমেরিকা। ঝড়ের দাপটে গত সোমবার থেকে কার্যত স্তব্ধ উত্তর-পূর্ব আমেরিকার বিস্তীর্ণ এলাকা।
ওয়াশিংটন থেকে নিউ ইংল্যান্ড। বিপর্যস্ত কয়েক লক্ষ মানুষ। সোমবার ছুটি ছিল। কিন্তু গত কালও সব কর্মীকে ছুটিতে পাঠিয়েছিল হোয়াইট হাউস। আজ প্রায় দু’ঘণ্টা দেরিতে খোলে সব সরকারি অফিস। তবু সামগ্রিক উপস্থিতির হার ভীষণই কম। ওয়াশিংটন মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সপ্তাহের কাজের দিনে যে ভিড় থাকে, গত কয়েক দিনে সেই সংখ্যাটা প্রায় অর্ধেকে ঠেকেছে। ওয়াশিংটনের প্রাণকেন্দ্রে অন্যান্য দিনের মতো ব্যস্ত রাস্তায় চেনা ভিড়টাও উধাও।
রাজধানীর মতো উত্তর-পূর্বের বাকি শহরগুলির অবস্থাও প্রায় একই রকম। নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, পেনসিলভেনিয়া, ভার্জিনিয়া, কেন্টাকি। সর্বত্র প্রায় একই ছবি। জনমানবহীন সুনসান রাস্তায় জমে পুরু বরফ। |
ঠান্ডা থেকে বাঁচতে শীত-পোশাকে টেরিয়ার। নিউ ইয়র্কের সেন্টাল পার্কে বুধবার। ছবি: এ এফ পি। |
ঝড়ে বিধ্বস্ত প্রায় সব শহরেই বেশ কয়েক দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল।
শিকাগোতে তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে শূন্যের থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে। আজ সকালে প্রায় ১৪ ইঞ্চি বরফ জমতে পারে বলে সতর্ক করেছে নিউ ইয়র্কের স্থানীয় প্রশাসন। তাই খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোনোর উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন শহরের নতুন মেয়র বিল দো ব্লাসিও। বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত শহর এখন কার্যত ঘরবন্দি। “কিছু ক্ষণের জন্য তুষারপাত ভাল লাগে। কিন্তু এটা অসহ্য”, নিউ ইয়র্কের এক সাবওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে বললেন বিরক্ত ক্যাথরিন হিউজেস। প্রবল ঠান্ডা হাওয়ায় নিজের ছাতার সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ করছিলেন ক্যাথরিন।
এই প্রতিকূল আবহাওয়ায় সাধারণত যে ভাবে উড়ান পরিষেবা ব্যাহত হয়, এ বারও ঠিক তেমনটাই হয়েছে। শুধুমাত্র সোমবারই বাতিল হয়েছে প্রায় তিন হাজার বিমান। বিমানবন্দরের রানওয়ে কয়েক ইঞ্চি করে পুরু বরফে ঢেকে রয়েছে। ওয়াশিংটন থেকে নর্থ ক্যারোলাইনা যাওয়ার কথা ছিল সুমিত কপূরের। তাঁর কথায়, “বরফ ঠেলে কোনও মতে বিমানবন্দর পৌঁছলাম। কিন্তু এসেই শুনলাম বিমান বাতিল হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস আছে। মনে হচ্ছে সময়ে পৌঁছতে পারব না।”
তবে মানুষ যতই বিরক্ত হোন না কেন, আবহাওয়া অফিস কিন্তু আশার খবর শোনায়নি। তাদের বক্তব্য, আগামী কয়েক দিন উত্তর-পূর্ব আমেরিকায় মেরুঝড়, তুষারপাতের এই তাণ্ডব চলবে।
|