পরিচালন সমিতি নিয়ে জট, থমকে স্কুলের কাজ
ক দিকে সরকারি নিয়মে বহাল রয়েছে পুরনো পরিচালন সমিতি, অন্য দিকে নতুন পরিচালন সমিতিও গড়া হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, দুইয়ের টানাপোড়েনে থমকে গিয়েছে কাটোয়ার সীতাহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের কাজ। এ দিকে মার্চ মাসের মধ্যে স্কুল উন্নয়নের কাজ শেষ করতে না পারলে টাকা ফেরত চলে যাবে সর্বশিক্ষা অভিযানের ঘরে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সীতাহাটি উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারি স্পনসর্ড বলে ঘোষণা করে স্কুল শিক্ষা দফতর। নির্দেশ ছিল, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত যারা স্কুল পরিচালনা করেছে নতুন নিয়মে পরিচালন সমিতি গঠিত না হওয়া পর্যন্ত তারাই দায়িত্বে থাকবে। ফলে নতুন পরিচালন কমিটি গড়া হয়ে গেলেও পুরনো কমিটিকেই বহাল রাখতে বাধ্য হন প্রধান শিক্ষক শিবসাধন সাহা। পুরনো কমিটির নেতৃত্বে শ্রেণিকক্ষ ও শৌচাগার তৈরির জন্য টেন্ডারও ডাকা হয়। অভিযোগ, সদ্য নির্বাচিত তৃণমূলের অভিভাবক প্রতিনিধিদের চাপে সেই টেন্ডার বাক্সবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্য সম্প্রতি স্কুল শিক্ষা দফতরেও গিয়েছিলেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
সীতাহাটি উচ্চ বিদ্যালয়। —নিজস্ব চিত্র।
তবে কাটোয়ার ভারপ্রাপ্ত স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বিপদভঞ্জন মণ্ডল বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী পুরনো কমিটিই স্কুল পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। ওই প্রধান শিক্ষক নতুন কমিটি গঠন করে সমস্যা তৈরি করেছেন।” কাটোয়ার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যয়েরও দাবি , “আমি নিজে ফোন করে নতুন কমিটি গঠন করতে বারণ করেছিলাম। তা সত্বেও ওই প্রধান শিক্ষক স্কুল পরিচালনার জন্য নতুন কমিটি গঠন করেছেন।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফোন পাওয়ার পরে প্রধান শিক্ষক শিবসাধানবাবু নতুন কমিটি গড়তে চাননি। কিন্তু তৃণমূলের ওই অভিভাবক প্রতিনিধিরা প্রধান শিক্ষকের উপর ‘চাপ’ দেওয়ায় বাধ্য হয়ে ২৬ নভেম্বর নতুন সদস্যদের নিয়ে পরিচালন সমিতি গড়া হয়। এরপরেই ওই স্কুলের আজীবন সদস্য, তৃণমূল নেতা শ্যামল মুখোপাধ্যায় এসডিও (কাটোয়া)-র কাছে লিখিত ভাবে জানান, সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করে পরিচালন সমিতি গড়েছেন প্রধান শিক্ষক। চিঠি পাওয়ার পরে এসডিও আর অর্জুন চিঠি দিয়ে বিপদবাবুকে বিষয়টি দেখতে বলেন। বিপদবাবু সরকারের নতুন নিয়ম জানিয়ে প্রধান শিক্ষককে চিঠি দেন।
ওই চিঠি পাওয়ার পরে প্রধান শিক্ষক ফের পুরনো কমিটির সদস্যদের ডেকে স্কুল পরিচালনার ভার নিতে বলেন বলে স্কুল সূত্রে জানা খবর। এপ্রিল মাসে স্কুলে শ্রেণিকক্ষ ও শৌচাগার তৈরির জন্য ৮ লক্ষ ৮ হাজার টাকা দেয় সর্বশিক্ষা অভিযান দফতর। পঞ্চায়েত ভোট, পুজোর ছুটি, তারপরে স্কুলে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য ওই টাকা খরচ করতে পারেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। পুরনো কমিটি ফের স্কুল পরিচালনার ভার নিয়ে ওই টাকা কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়। গত ২৬ ডিসেম্বর দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। দরপত্রও জমাও পড়ে। কিন্তু ২ জানুয়ারি দরপত্র খোলার কথা থাকলেও তা খোলা যায়নি। পরিচালন সমিতির সম্পাদক সোমনাথ দাসের অভিযোগ, দরপত্র না খোলার জন্য নির্বাচিত অভিভাবক প্রতিনিধিরা বারবার বলছিলেন। বিতর্ক এড়ানোর জন্য আমরা দরপত্র খুলিনি। পরিচালন সমিতির সভাপতি সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় বলেন, “আমরা সবাই একই দলের। তা সত্ত্বেও এত বিতর্ক হচ্ছে কেন বুঝতে পারছি না। এর ফলে আসল কাজটাই হচ্ছে না।” নতুন কমিটিতে যিনি সভাপতি হয়েছিলেন, নৈহাটি গ্রামের সেই অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, “সমস্ত গোলমাল প্রধান শিক্ষকের জন্য। উনি কমিটি গঠন করালেন, আবার কয়েকদিন পরে বললেন নতুন কমিটি বাতিল। উনি নিজেই ঠিক করে নিয়ম জানেন না। ফলে স্কুলের উন্নয়নের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।” প্রধান শিক্ষক শিবসাধন সাহার অবশ্য সাফ জবাব, “সমস্যার কিছু নেই। যা আছে নিয়ম অনুযায়ী মেটানো হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.