|
|
|
|
আত্মহত্যা বা খুন, সব দিক মাথায় রেখে সুনন্দা-তদন্ত
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২১ জানুয়ারি |
ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট বলছে, বিষক্রিয়াতেই মৃত্যু হয়েছে শশী তারুরের স্ত্রী সুনন্দা পুষ্করের। তবে সুনন্দার শরীরে কী ভাবে এই বিষক্রিয়া ঘটল, তা তদন্তের জন্য দিল্লি পুলিশকে আজ নির্দেশ দিয়েছেন সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট অলোক শর্মা। আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা বা খুন সব ক’টিকেই সন্দেহের তালিকায় রেখে তদন্ত চালাতে বলেছেন তিনি। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখে দিল্লি পুলিশ অবশ্য সন্দেহ করছে, এক সঙ্গে অত্যধিক ওষুধ খেয়ে ফেলাতেই শশী-পত্নী মারা গিয়েছেন।
শুক্রবার রাতে দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেলে সুনন্দার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তার ঠিক আগেই পাকিস্তানি সাংবাদিক মেহর তারারের সঙ্গে তারুরের সম্পর্ক নিয়ে পারিবারিক বিবাদ ট্যুইটারের সৌজন্যে প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে সুনন্দার। মৃতদেহে কিছু আঘাতের চিহ্নও মেলে। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়। সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সুনন্দার দুই হাতে ডজন খানেক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তাঁর বাঁ গালেও হালকা আঁচড় রয়েছে, যা কোনও ভোঁতা বস্তুর আঘাতে হতে পারে। তবে এই সব আঘাতের কারণে যে সুনন্দার মৃত্যু হয়নি, তা-ও বলা হয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট।
তা হলে কী ভাবে মৃত্যু হল সুনন্দার?
দিল্লি পুলিশের সূত্র বলছে, বেশ কিছু দিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন সুনন্দা। অবসাদ কাটানোর ওষুধও খেতেন তিনি। সুনন্দার হোটেলের ঘরে সেই ট্যাবলেটের দু-দু’টি খালি পাতা মিলেছিল। তখনই পুলিশের সন্দেহ হয়, এক সঙ্গে অনেকগুলো ট্যাবলেট হয়তো খেয়ে ফেলেছিলেন সুনন্দা। অনেক ক্ষণ খালি পেটেও ছিলেন। হোটেলের কর্মীদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, শুক্রবার সারা দিন হোটেলের ঘরে থাকলেও কোনও খাবার অর্ডার করেননি সুনন্দা। ময়নাতদন্তে তাঁর পাকস্থলীতে যে খাবারের নমুনা মিলেছে, তা বহু ক্ষণ আগে খাওয়া হয়েছিল। কেরলের একটি হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষায় যক্ষ্মাও ধরা পড়েছিল সুনন্দার। বহু ক্ষণ না খেয়ে থাকা, এক সঙ্গে প্রচুর ওষুধ খেয়ে ফেলা, এই সব মিলিয়েই ৫২ বছরের সুনন্দার শরীরে প্রাণঘাতী বিষক্রিয়া ঘটে বলে পুলিশের অনুমান।
কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী তারুর ইতিমধ্যেই তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রবিবার নিজের বিবৃতিও নথিভুক্ত করান তিনি। দিল্লি পুলিশ সরকারি ভাবে খুনের দিকটি খতিয়ে দেখলেও তারুরকে সন্দেহের ঊর্ধ্বেই রাখা হচ্ছে। কারণ শুক্রবার সকালেই হোটেল থেকে বেরিয়ে শশী তালকাটোরা স্টেডিয়ামে এআইসিসি-র অধিবেশনে চলে যান। হোটেলের কর্মীরা জানিয়েছেন, তার দু’ঘণ্টা পরেও সুনন্দাকে দেখা গিয়েছে।
সুনন্দার মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে আজ শশী তারুরের পদত্যাগ দাবি করেছে বিজেপির কেরল শাখা। কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য তারুরের পাশেই রয়েছেন। সুনন্দার অন্তিম সংস্কারের পরেই সনিয়া গাঁধী তারুরের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। প্রতিমন্ত্রীর পাশাপাশি তারুরকে আজ দলের অন্যতম মুখপাত্রের দায়িত্বও দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। |
পুরনো খবর: মাদকেই মৃত্যু: রিপোর্ট |
|
|
|
|
|