নিজেদের নিরাপত্তা প্রাথমিক ভাবে নিজেদেরই রক্ষা করতে হবে। এই ভাবনা থেকেই পুর এলাকার একটি গোটা ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের উদ্যোগে বসল ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিধাননগরের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির এমনই একটি প্রকল্পের সূচনা করে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘নিরাপত্তা জোরদার করতে বাসিন্দাদের পুলিশ-প্রশাসনকে সহযোগিতা করা প্রয়োজন। বিধাননগরে বাসিন্দাদের এই প্রচেষ্টা উদাহরণ হয়ে থাকবে।’’ এর জন্য বাসিন্দাদের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
বিধাননগরে কমিশনারেট হওয়ার পরে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির বহর কমলেও, থামেনি। সল্টলেকে প্রতিদিন কমপক্ষে দেড় লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। অস্থায়ী ভাবে অনেকে বসবাসও করেন বিধাননগরে। কিন্তু সেই তথ্য অনেকটাই অজানা প্রশাসনের। খোদ মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে তথ্যভাণ্ডার তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রশাসনকে। সে কাজ চলছে পুরোদমে। পাশাপাশি, নজরদারিও জোরদার হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। তবুও আটকানো যায়নি চুরি, ছিনতাই।
এ ছাড়া, আগে প্রায় অধিকাংশ ব্লকেই নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করত ব্লক কমিটি। নানা সমস্যায় বহু জায়গাতেই সেই প্রথা বন্ধ।একাধিক ক্ষেত্রে ব্লকের রক্ষীদের সঙ্গে পুলিশের সমন্বয়ের অভাবও প্রকট হয়েছে। এর পরই সব দিক বিবেচনায় রেখে ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওয়েজ জেনারেশন ফান্ড থেকে ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প হল। দেড় মাস অন্তর সিসিটিভির ফুটেজ দেওয়া হবে পুলিশকে।’’ বাসিন্দাদের বক্তব্য, এর দ্বারা অপরাধীদের শনাক্ত করা যাবে। শুধু একটি ওয়ার্ডে নয়, সারা বিধাননগরেই এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করুক প্রশাসন। যে সংস্থা এই সিসিটিভি বসাল, তার অন্যতম কর্ণধার অনির্বাণ মিশ্র জানান, রাতেও এর নজরদারি চালু থাকবে। নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি মানুষ একত্রে থাকলে অ্যালার্ম বেজে ওঠার মতো উন্নত ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ওয়ার্ডের একাধিক প্রবেশ পথে এই নজরদারি থাকবে। ফলে বাসিন্দারাই তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।
আবাসিক সংগঠন বিধাননগর (সল্টলেক) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থা খুবই কাজে লাগবে। সার্বিক ভাবে গোটা বিধাননগরে দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করতে পরিকল্পনার প্রয়োজন, না হলে এই ধরনের বিক্ষিপ্ত ব্যবস্থার সুফল নেওয়া যাবে না।’’ এক পুলিশকর্তা জানান, জনসংযোগ বাড়াতে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশনারেট। সে ক্ষেত্রে বাসিন্দাদের এই প্রচেষ্টা নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার করতে কাজে লাগবে। তথ্যসংগ্রহেও বিশেষ সুবিধা মিলবে।
|