প্রসব বেদনায় ছটফট করছিলেন খারিজা জামালদহদের বাসিন্দা শ্যামলী বর্মন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জামালদহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকে তাঁকে রেফার করা হয় মাথাভাঙা হাসপাতালে। এর পরে নিশ্চয় যানের খোঁজ শুরু করেও হতাশ হয়ে পড়েন স্বামী সুশীল বর্মন। পরে টাকা ধার করে গাড়ি ভাড়া করতে হয়। সন্তান প্রসবের পরে সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে বাসে চেপে ফিরতে হয় দম্পতিকে। একই ঘটনা ঘটেছিল খরখরিয়ার বাসিন্দা গোপাল রায়ের সঙ্গেও। মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতাল থেকে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয় তাঁর স্ত্রীকে। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়ালে শেষরক্ষা হয়। শুধু এক-দু’জন নয়, প্রতিদিন-অ মেখলিগঞ্জে আবেদন করেও গর্ভবতী মহিলারা নিশ্চয় যান পাচ্ছে না বলে অভিযোগ। মেখলিগঞ্জের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়দীপ সরকার বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “মেখলিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ২ টি নিশ্চয়তা যান চালু রয়েছে। চাহিদার বেড়ে যাওয়ায় সবাইকে ওই প্রকল্পে সাহায্য করা হচ্ছে সম্ভব হচ্ছে না।” প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলার প্রত্যন্ত এলাকা মেখলিগঞ্জ। যেখান থেকে জেলা শহর ১০০ কিলোমিটার দূরে। মেখলিগঞ্জ ব্লকে মহকুমা সদর হাসপাতাল ছাড়াও চ্যাংরাবান্ধায় একটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। জামালদহ ও কুচলিবাড়িতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে শুধুমাত্র মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ২টি নিশ্চয় যান রয়েছে। সেই দুটি দিয়েই ব্লকে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর খানেক আগে ওই প্রকল্পে গাড়ি ভাড়া নিয়ে সমস্যার জেরে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়। ছ’মাস আগে বাসিন্দাদের আন্দোলনের জেরে ফের তা চালু করা হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই ব্লকে প্রতি মাসে গড়পরতা ১৮১ জন শিশু সরকারি হাসপাতালে জন্মায়, এ ছাড়াও বাড়িতে জন্ম নেয় আর অনেক শিশু।
এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে মৃন্ময় ঘোষ বলেন, “সরকারি আধিকারিকদের গাফিলতির জন্য এমন ঘটনা ঘটছে। নামেই ওই প্রকল্প চালু রয়েছে। গরিব মানুষ কোনও সুবিধে পাচ্ছেন না।” |