বর্ষার ধাক্কায় টোম্যাটোর ফলন। এ বারে বর্ষা বিদায় নিতে মাসখানেক দেরি হয়েছে। তার জেরে হলদিবাড়ি এলাকার টম্যাটোর ফলনের সময়ও পিছিয়ে গিয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে টম্যাটোর ফলন শুরু হয়ে গেলেও, এবারে ফলন পেতে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ গড়িয়ে যাবে বলে কৃষি দফতর সূত্রেও জানানো হয়েছে। উৎপাদনের সময় পিছিয়ে যাওয়ায় উত্তর ভারতের টম্যাটো বাজার হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষকরা। শুধু তাই নয় ফলন পিছিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে জোগান কমে যাওয়ায়, টম্যাটোর দামও বাড়তে শুরু করেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
হলদিবাড়ি ব্লকের কৃষি আধিকারিক সঞ্জীব মৈত্রী বলেন, “সাধারণত বর্ষা যাওয়ার পর জমি একটু শুকোলে টম্যাটোর চারা রোপণের কাজ শুরু হয়। এ বার বর্ষা দেরিতে বিদায় নেওয়ায় সেই কাজটা শুরু হয়েছে এক মাস পরে নভেম্বর মাসে। তার ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ফলনের সময়ও পিছিয়ে যাবে।” ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে, প্রতি বছর উত্তরবঙ্গের বাজারে এ সময়ে হলদিবাড়ির টম্যাটো ঢুকে যায়। এ বার তা না হওয়ায় জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ির খুচরো বাজারে টম্যাটোর দাম কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে রয়েছে। যা কিনা অনান্য বছরের থেকে খানিটকা বেশিই।
হলদিবাড়ির হুদুমডাঙ্গা ফার্মার্স ক্লাবের সম্পাদক ইসমাইল মহম্মদ এবং উত্তর বড় হলদিবাড়ির প্রগতিশীল ফার্মার্স ক্লাবের সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “ফলনে একমাস সময় পিছিয়ে যাওয়ায় দামের অনেক হেরফের হয়ে যায়। পর উৎপাদন হলে দাম পাওয়া যায় না।” হলদিবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সত্যেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “সময়ে মরসুম শুরু না হওয়ার জন্যে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” হলদিবাড়ি পাইকারি সব্জি বাজারে জানুয়ারীর মাঝামাঝি টমেটো উঠে যায়। ট্রাকে চাপিয়ে টম্যাটো উত্তর ভারতে চলে যায়। কৃষকদের আশঙ্কার কারণ ফেব্রুয়ারি মাসে টম্যাটো উৎপাদন শুরু হলেও উত্তর ভারতের বাজারে চাহিদা থাকবে না। ফলে হলদিবাড়ি পাইকারি বাজারেও টম্যাটোর দাম কমে যায়।
পাইকারী সব্জি ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি তরুণ দত্ত বলেন, “ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশে টম্যাটো ওঠা আরম্ভ হলে, উত্তর ভারতে হলদিবাড়ির টোম্যাটোর চাহিদা থাকবে না। কৃষক, ব্যবসায়ী সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” যদিও, সমিতির সহ সভাপতি আবাস বন্দ বলেন, “আবহাওয়ার কারণে উত্তর বারতেও টোম্যাটোর উৎপাদন পিছিয়ে গিয়েছে। তাই, এ বছর হলদিবাড়িতে টোম্যাটো দেরিতে উঠলেও, আশায় রয়েছি।” |