২৪ ঘণ্টায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু মেডিক্যালে
কই দিনে পাঁচ শিশুর মৃত্যুতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মৃত শিশুদের প্রায় সকলেই সদ্যোজাত। এক জনের বয়স শুধু ন’মাস। সদ্যোজাতের চিকিৎসায় মেদিনীপুর মেডিক্যালে ‘সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট’ (এসএনসিইউ) গড়ে উঠেছে। সেখানে চিকিৎসক, নার্স আছেন। সাধারণত এক মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের এই বিশেষ ইউনিটে রেখে চিকিৎসা করা হয়। মেদিনীপুর মেডিক্যালে এসএনসিইউ থাকা সত্ত্বেও মাত্র ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ শিশুর মৃত্যুতে তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে কোনও ক্ষেত্রেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠেনি।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষও ওই শিশুদের চিকিৎসায় কোনও রকম গাফিলতি হয়েছে মানতে নারাজ। এ ক্ষেত্রে তাঁদের ব্যাখ্যা, মেদিনীপুর মেডিক্যালে দিনে গড়ে ২-৩ জন শিশুর মৃত্যু হয়। এটাই স্বাভাবিক গড়। চিকিৎসকদের মতে, অনেক সময় সব ধরনের চেষ্টা করেও গুরুতর অসুস্থ শিশুদের বাঁচানো যায় না। এ ক্ষেত্রে কম ওজন, ফুসফুসে সংক্রমণ এবং শ্বাসকষ্টজনিত কারণেই শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
এ প্রসঙ্গে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার যুগল কর বলেন, “চিকিৎসায় গাফিলতির কোনও ব্যাপার নেই।” এসএনসিইউ চালুর ফলে কি মেডিক্যালে শিশু মৃত্যু কমেছে? সুপারের জবাব, “কমেছে। ওই ইউনিট চালুর ফলে গুরুতর অসুস্থ শিশুদের সব সময়ে বিশেষ নজরে রাখা সম্ভব হচ্ছে।” কী ভাবে শিশু ওয়ার্ডের সার্বিক পরিকাঠামোর আরও উন্নতি করা যায়, তা দেখা হচ্ছে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন যুগলবাবু।
২৪ ঘণ্টায় যে পাঁচ শিশুর মৃত্যু ঘিরে চাপানউতোর শুরু হয়েছে তাদের ৪ জনের বয়সই এক মাসের মধ্যে। আর এক জনের বয়স ৯ মাস। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশিরভাগ সদ্যোজাতের ওজনই বেশ কম ছিল, দেড় থেকে আড়াই কেজির মধ্যে। আর ৯ মাসের শিশুটির ওজন ছিল সাড়ে ৬ কেজি। চলতি মাসের গোড়ায় দু’দিনে ১১ জন শিশুর মৃত্যুর জেরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। তখন চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে সরব হয় বিভিন্ন মহল। একটি রাজনৈতিক দল সুপারের দফতরের সামনে বিক্ষোভও দেখায়। তারপর থেকে পরিস্থিতি ঠিকই ছিল। কিন্তু ১৮ জানুয়ারি রাত ১২টা থেকে ১৯ জানুয়ারি রাত ১২টার মধ্যে পাঁচ জন শিশুর মৃত্যু হয়। এই পাঁচ জনের মধ্যে দু’জনকে অন্য হাসপাতাল থেকে মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। বাকি তিন জনের অবশ্য মেদিনীপুর মেডিক্যালেই চিকিৎসা চলছিল। হাসপাতালের এক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, “এতে উদ্বেগের কিছু নেই। কারণ, মৃত্যুর হারের সামান্য হেরফের হয়েছে।” ওই আধিকারিকের যুক্তি, “যে ২৪ ঘন্টায় ৫ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঠিক তার আগের ২৪ ঘন্টায় ২ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ, গত ৪৮ ঘন্টায় ৭ জন শিশু মারা গিয়েছে।” তবে এই পাঁচ শিশুর মৃত্যুকে গুরুত্বহীন ভাবে দেখছেন না কর্তৃপক্ষ। মেদিনীপুর মেডিক্যালের তরফে জানানো হয়েছে, কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
রবিবার ছুটির দিন ছিল। হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, ওই দিন শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসকের সংখ্যা কম ছিল। ফলে, পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই দাবি খারিজ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, এমন অভিযোগ ঠিক নয়।
এক সময় মেদিনীপুর মেডিক্যালে হামেশাই শিশু মৃত্যু হত, উঠত গাফিলতির অভিযোগ। এসএনসিইউ চালু পরে ছবিটা খানিকটা বদলেছে। কিন্তু পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলায় মেডিক্যাল কলেজের শিশু ওয়ার্ডে যে পরিকাঠামো থাকার কথা, যে সংখ্যক চিকিৎসক-নার্স থাকার কথা, তা কি রয়েছে? এখনও কেন ‘মা ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্রে’র কাজ শুরু হল না? সদুত্তর মেলেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। তাঁদের বক্তব্য, পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যেই কাজ হচ্ছে।
এক নজরে
বয়স * ওজন#
২ দিন ১.৮২০
৭ দিন ২.২৫০
২৪ দিন
২৭ দিন ১.২৫০
৯ মাস ৬.৫০০
(*মৃত শিশুর বয়স)
#ওজন কিলোগ্রামে



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.