আমাদেরও চাই উন্নয়ন পর্ষদ,
দরবার শুরু হল বিমানবন্দরেই
“লেপচা সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা উন্নয়ন পর্ষদ হয়েছে, তা হলে আমাদের জন্য কেন উন্নয়ন পর্ষদ হবে না?” এই প্রশ্নে নানা সম্প্রদায়ের আর্জি জমা পড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সোমবার দুপুরে বাগডোগরা বিমানবন্দরে ঘটল এমনই ঘটনা। সেখানে পাহাড়ের লিম্বু, ভুটিয়া ও শেরপা এবং সমতলের আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা মুখ্যমন্ত্রীকে ‘স্বাগত’ জানিয়ে ওই আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী সকলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আলাদা ভাবে হলেও সকলকেই একই সুরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সবাই ভাল থাকুন। উন্নয়ন করতেই আমি আসি। সকলেরই উন্নয়ন হবে। এটাই আমার লক্ষ্য।”
মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বাগডোগরা বিমানবন্দরে ভিড়। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
এ দিন সকাল থেকেই বাগডোগরা বিমানবন্দরের প্রবেশ পথ ছিল বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নানা রঙের পতাকায় ছয়লাপ। লেপচাদের নীল রং থেকে আদিবাসী সংগঠনের গাঢ় সবুজ পতাকা। সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাই নিজেদের চিরাচরিত পোষাক এবং বাদ্যযন্ত্র সব বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। দুপুর দু’টো নাগাদ বিমানবন্দরের দৈত্যাকার লোহার গেট খুলে দুধ সাদা স্করপিও গাড়িটা বের হতেই সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লিম্বু সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা ঢোল বাজিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীতে গাড়িটা বের হওয়ার উপক্রম করতেই দু’দিকে দাড়ানো লিম্বু এবং ভুটিয়া সম্প্রয়াদের বাসিন্দারা ‘দিদি’ বলে চিৎকার শুরু করে দেন। গাড়ি থেকে নেমে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। একটি শিশুকে কোলেও তুলে নেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে ভিড়, নিরাপত্তাকর্মীদের ঠেলাঠেলির মধ্যেই দুই সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা “আমাদের উন্নয়ন করতে হবে”, “ছেলে-মেয়েরা এতদিন কাজ পায়নি” বলে ক্ষোভ জানাতে থাকেন। বিমানবন্দরের মূল গেট থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় ছাড়ে। কিছুটা দূরেই বেসরকারি গাড়ি স্ট্যান্ডের কাছাকাছি অপেক্ষা করেছিলেন লেপচা সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা। সেখানে ফের নিজের গাড়ি থেকে নেমে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। ঢোলের তালে তালে স্লোগান ওঠে, ‘কিংচম ডারমিট’ জিন্দাবাদ।
দার্জিলিংয়ের লেডং গোর্খা স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভার
প্রস্তুতি। সোমবার রবিন রাইয়ের তোলা ছবি।
গত সেপ্টেম্বরে কালিম্পঙে লেপচাদের সংগঠনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘কিংচম ডারমিট’ বা ‘ভাগ্যের দেবী’ বলে ঘোষণা করা হয়। লেপচা সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের থেকে খাদা পরে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে কিছুটা পথ হেটেই এগিয়ে যান। লেপচা সম্প্রদায়ের মিরিক কমিটির সহ সভাপতি নরদেন লেপচা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে আগে আমাদের ভাগ্য বিধাতা বলে ঘোষণা করেছি। তিনি উত্তরবঙ্গে এসেছেন, তাই তাঁকে স্বাগত জানাতে এসেছিলাম। আরও উন্নয়নের দাবি জানিয়েছি। উনি আমাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।”
বিমানবন্দর থেকে অন্তত তিনশো মিটার দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন আদিবাসী মহাসভার প্রতিনিধিরা। হাতে সবুজ পতাকা আর লালপাড় সাদা শাড়ির তরুণীদের দেখেই মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে যান। মহাসভার বাগডোগরার নেতা আলেক্সিয়াস কুজুর বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে, তরাই এলাকার আদিবাসীদের উন্নয়নের আর্জি জানিয়েছি।” বিমানবন্দরে আসা ভুটিয়া ওয়েলফেয়ার জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির উপদেষ্টা সোনাম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, “লেপচাদের মতো আমরাও পৃথক উন্নয়ন কাউন্সিল চাই। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে সেই দাবিও জানিয়েছি। উনি আশ্বাস দিয়েছেন।”

উৎসব মঞ্চে হঠাৎ আঁধার, চোট পেলেন প্রসেনজিৎ
উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চে প্রসেনজিৎ ও বাপ্পি লাহিড়ির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী।
শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে।—নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধনের মঞ্চ ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেরিয়ে যেতেই সোমবার সন্ধ্যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের দক্ষিণ দিকের ফ্লাড লাইট নিভিয়ে দেওয়া হয়। তাতে হঠাৎই স্টেডিয়ামের একটি বড় অংশ আলো-আঁধারি হয়ে যায়। আচমকা এই অবস্থায় হুড়োহুড়ি পড়ে যায় দর্শকদের মধ্যে। অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় তখন মঞ্চ থেকে নেমে বেরিয়ে যাওয়ার পথে। সেই সময়ে কিছু দর্শক তাঁকে দেখে ছুটে আসেন। ভিড়ের ভিতর থেকে বেরোতে গিয়ে তখনই আঙুলে চোট পান প্রসেনজিৎ। তবে তাঁর চোট গুরুতর কিছু নয় বা তার জন্য চিকিৎসকের প্রয়োজন পড়েনি বলে উৎসব কমিটি সূত্রে জানানো হয়েছে। তবে আগাম বলে রাখা সত্ত্বেও এ ভাবে অনুষ্ঠান শেষের আগেই কেন কিছু আলো নিভিয়ে দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন উৎসব কমিটির কর্মকর্তারা। যে বা যারাই এ কাজ করে থাকুন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তুলেছেন তাঁরা। আয়োজক কমিটির কার্যকরী সভাপতি অরবিন্দ ঘোষ বলেন, “অনুষ্ঠান শেষ হতে সন্ধ্যা হবে বলে ফ্লাড লাইটের ব্যবস্থা আগেই করা হয়েছে। সেই মতো স্টেডিয়াম কমিটিকে টাকাও দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও তাদের কর্মীরা অনুষ্ঠান শেষের আগেই কেন এ ভাবে আলো নেভালেন, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।” স্টেডিয়াম কমিটির অন্যতম তথা মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষ জানান, তাঁরা বিস্তারিত খোঁজ খবর নিচ্ছেন।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.