বছর তিনেকের এক শিশু-সহ বাড়ির লোকজনের গায়ে কেরোসিন ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে লুঠপাট চালাল দুষ্কৃতীরা। ফ্রিজ থেকে জলের বোতল নিয়ে ঘরে বসেই সঙ্গে আনা মদ খায় তারা। রান্নাঘর থেকে গ্লাস, বিস্কুট-চানাচুরও বের করে। পরিবারের দাবি, বেশ কয়েক ভরি সোনা-রূপোর গয়না, নগদ টাকা তো বটেই, মাটির ঘট ভেঙে সেখান থেকে কিছু খুচরো পয়সাও নিয়ে গিয়েছে ডাকাতেরা। এমনকী, পালানোর আগে কয়েকটি খেলনাও ব্যাগে ভরে নেয় এক দুষ্কৃতী।
সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের সাতবেড়িয়ায়। স্টেশন-লাগোয়া এলাকায় বাড়ি জিয়ারুল মণ্ডলের। তিন দিকে ফাঁকা চাষের জমি। নিকটতম প্রতিবেশীর বাড়িও প্রায় দু’শো মিটার দূরে। রাতে ঘন কুয়াশাও পড়েছিল। সব মিলিয়ে ঘণ্টা তিনেক ধরে ডাকাতেরা তাণ্ডব চালালেও আশপাশের কেউ টুঁ শব্দটিও পাননি। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ডাকাতির মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে।
জিয়ারুলের স্ত্রী ও তিন বছরের ছেলে ছাড়াও ওই বাড়িতে থাকেন পেশায় ব্যবসায়ী জিয়ারুলের ভাই লিটন। তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন, রাত ১টা নাগাদ গ্রিলের তালা ভাঙার শব্দ পেয়ে কাঠের দরজা খুলে বারান্দায় বেরিয়ে আসেন লিটন। দুষ্কৃতীরা তাঁর দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে সদর দরজা খুলতে বাধ্য করে।
ঘরে ঢুকে জিয়ারুলকে চড়থাপ্পর মারে ডাকাতেরা। তাঁর বছর তিনেকের ছেলে সলমনের মাথায় বন্দুক ঠেকায়। জিয়ারুলের স্ত্রী টুকটুকি জানান, ডাকাতেরা মোবাইল ফোনগুলি কেড়ে নেয়। তারপরে দা দিয়ে তিনটি আলমারি খুলে ফেলে টাকা-গয়না বের করে নেয়। ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে টুকটুকিকে গায়ের গয়না খুলে ফেলতেও বাধ্য করে। লুঠপাট চালানোর সময়ে কয়েক জন ডাকাত হঠাৎই রান্নাঘরে ঢুকে কেরোসিন-ভর্তি জ্যারিকেন বের করে নিয়ে আসে। সকলের গায়ে ছিটিয়ে দেয়। চিৎকার করলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ঘণ্টা তিনেক ধরে লুঠপাট চালিয়ে পিঠটান দেয় ডাকাতেরা। |