উর্বর নদী চরে চাষাবাদের উদ্যোগ
ক চিলতে জমির জন্য হাহাকার রাজ্য জুড়ে। অথচ, পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইল ব্লকের রোহিনীতে ডুলুং ও সুবর্ণরেখার সঙ্গমে একরের পর একর জমি পড়ে রয়েছে অব্যবহৃত অবস্থায়। অবশেষে উর্বর ওই নদীর চরে চাষাবাদে উদ্যোগী হল প্রশাসন। একশো দিনের প্রকল্পের রাজ্যের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার গত শুক্রবার ওই জমি দেখতে যান। সঙ্গে ছিলেন বিশেষজ্ঞরাও। কমিশনারের কথায়, “একশো দিনের প্রকল্পের সঙ্গে অন্য প্রকল্পের সমন্বয় করে এখানে কী কী কাজ করা যেতে পারে তা দেখতেই এসেছি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই নদীর সংযোগস্থলে ওই চর বহু দিনের পুরনো। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ একর জমি। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শশাঙ্ক হাটুইয়ের বয়স প্রায় ৫০ ছুঁই ছুঁই। তাঁর কথায়, “বাপ ঠাকুরদার আমলেও এই চর ছিল। তবে তখন ছিল ঘন জঙ্গল। বাঘও ছিল বলে ঠাকুমার কাছে গল্প শুনেছি।” এখন অবশ্য জঙ্গল নেই। দুষ্কৃতীরা গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছে। রয়ে গিয়েছে শুধু কিছু কাঁটা ঝোপ।

নদীর চর ঘুরে দেখছেন প্রশাসনিক কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার প্রশাসনিক দলের সঙ্গে ওই জমি দেখতে গিয়েছিলেন ঝাড়গ্রামের বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মিনি পদুভাল। তাঁর মতে, “এখানে কিছু হোক না হোক ভাল কুল চাষ সম্ভব। এমনিতেই টক কুলের প্রচুর গাছ রয়েছে। সহজেই সঙ্করায়ন পদ্ধতিতে তা উন্নত কুলে পরিণত করা যায়। এলাকায় কুলের বাজারও রয়েছে।” কল্যানী বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক অরবিন্দ মিত্রের কথায়, “ভীষণ উর্বর মাটি। এখানে কাজু, আম, সবেদা-সহ নানা ধরনের ফলের চাষ হতে পারে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা উদ্যান পালন আধিকারিক রণজয় পাত্রের কথায়, “বড় গাছ লাগানোর পাশাপাশি দ্রুত কিছু আয়ের জন্য তরমুজও চাষ করা যাবে।” ভবিষ্যতে এখানে গোপালনও সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিডিও সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “প্রথমে আমরা চেষ্টা করব দু’শো একরের মতো জমি কাজে লাগাতে। তার আগে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতেই সকলকে আহ্বান জানিয়েছিলাম। যাতে প্রকল্পটি সফল ভাবে রূপায়িত করা যায়।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন স্তরের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরিকল্পনা রিপোর্ট তৈরি করানো হচ্ছে। তারপর প্রাথমিক ভাবে ১০০ জনকে অর্থাৎ ১০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিয়ে সেই কাজ শুরু করানো হবে। প্রকল্পটি লাভজনক হলে ধীরে ধীরে আরও বিস্তার ঘটানো হবে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরমা পাত্রের আশ্বাস, এই প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার দরিদ্র মানুষদের হাল ফেরানো হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যে এলাকার অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর আমূল পরিবর্তন হতে পারে তা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় মানুষও। স্থানীয় বাসিন্দা বিপুল হাটুই, কল্পনা মাহাতোদের কথায়, “আমাদের ব্লকের এক দিক পাথুরে। ফলে ভাল চাষ হয় না। আর ওই চরে জলের সমস্যা নেই। এমন জায়গায় সরকারি সাহায্যে কিছু করলে তো ভাল হবেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.