|
|
|
|
দেখাতে চেয়েছিলাম বাংলা ১১৪-র টিম নয়: ঋদ্ধি |
পিচকে একহাত নিলেন বাংলা কোচ
রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায় • ইনদওর |
মহারাষ্ট্রের কাছে তিন দিনে হেরে হোলকর স্টেডিয়ামের পিচকে একহাত নিয়ে রাখলেন বাংলার কোচ অশোক মলহোত্র। পরিষ্কার বলে দিলেন, যে পিচে প্রথম দু’ঘণ্টায় ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায়, সেই পিচে রঞ্জি সেমিফাইনাল দেওয়াই উচিত হয়নি!
রঞ্জির নকআউট থেকে নিরপেক্ষ কেন্দ্রে ম্যাচ দিচ্ছে বোর্ড। পিচও হচ্ছে স্পোর্টিং উইকেটের ব্যাপার মাথায় রেখে। কিন্তু হোলকরের যে পিচে সেমিফাইনাল খেলতে হল, তা নিয়ে বাংলা শিবির ক্ষুব্ধ। বাংলা অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল সরাসরি পিচকে আক্রমণ করেননি। শুনিয়ে গিয়েছেন যে, সেমিফাইনালের ভাগ্য নির্ধারণটা তাঁর টস হারার সঙ্গে সঙ্গেই হয়ে গিয়েছে। অশোক সেখানে প্রবল আক্রমণাত্মক, “রঞ্জি সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ এমন পিচে কেন হবে? দু’ঘণ্টায় ঠিক হয়ে গেল কারা জিতছে। হোলকরের পিচের ইতিহাসটাই এ রকম। প্রথম দু’ঘণ্টা কেউ খেলতেই পারে না। টস প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। পরিষ্কার বলছি, টস জিতলে ম্যাচটা আমরাই জিততাম। বছর কয়েক আগে দলীপ ট্রফির ম্যাচে দিন্দা সাত উইকেট নিয়ে মধ্যাঞ্চলকে শুইয়ে দিয়েছিল। ওই প্রথম দু’ঘণ্টায়। মহারাষ্ট্র সেই অ্যাডভান্টেজটা তুলল এখানে।”
সোমবার ম্যাচের ফাঁকে উপস্থিত জাতীয় নির্বাচক রজার বিনি এবং রাজিন্দর সিংহ হংসের কাছে চলে যান অশোক। দিন্দা-লক্ষ্মীদের জন্য সরাসরি সওয়ালও করে আসেন। শোনা গেল, অশোক পরিসংখ্যান নিয়ে বলেছেন যে, লক্ষ্মীদের বদলে জাতীয় দলে যে সব ক্রিকেটারকে নেওয়া হচ্ছে, তাঁদের চেয়ে বাংলার ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভাল। তবু কেন নেওয়া হচ্ছে না? পরে অশোক বলছিলেন, “কাউকে না কাউকে তো স্পষ্ট করে বলতে হবে। এখানে সিএবি-র কেউ নেই, আমিই বললাম।”
আর ঋদ্ধিমান সাহাতিনি কী বলছেন? বাংলাকে সম্মানজনক বিদায়ের মঞ্চ তৈরি করে দিয়ে? “প্রথম দিকে আমি একটু নড়বড়ে ছিলাম। সেট হতে সময় লাগছিল। পরে সেঞ্চুরি করলাম। শিবশঙ্কর আমাকে তখন বলল যে, ইনিংসে হারটা এখন বাঁচানো যেতে পারে। তখন সেই রাস্তায় গেলাম,” ম্যাচ শেষের পর বলছিলেন ঋদ্ধিমান। সঙ্গে সংযোজন, “এক একটা সেঞ্চুরির এক এক রকম গুরুত্ব হয়। দু’বছর পর সেঞ্চুরি পেলাম আমি। জীবনে অনেক করেছি। কোনওটা টিমকে জিতিয়েছে। কোনওটা বাঁচিয়েছে। আজকেরটা টিমের সম্মানরক্ষা করল। এটাও তাই স্পেশ্যাল। আমি শুধু দেখাতে চেয়েছিলাম বাংলা ১১৪ রানের টিম ছিল না। দেখাতে চেয়েছিলাম যে বাংলাও সাড়ে তিনশো করতে পারে।”
রঞ্জি ট্রফি থেকে বিদায়ের পরে শোনা গেল বাংলা ড্রেসিংরুমে কোনও কোনও ক্রিকেটার প্রায় কেঁদে ফেলেছিলেন। পরে কথাবার্তাতেও সেই মেজাজ পাওয়া গেল। ঋদ্ধি যেমন বলছিলেন, “আমি তো সব সময়ই চেষ্টা করি জুনিয়রদের শেখাতে। ওদের টেকনিক ভাল। কিন্তু অ্যাপ্লিকেশনটাও সমান জরুরি। শুধু টেকনিক দিয়ে কী হবে?” সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দেখা গেল অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল-র। কখনও আফসোস করছেন, কখনও প্রায় বিলাপ। “সবচেয়ে খারাপ লাগছে এটা ভেবে যে, আজ ঋদ্ধির ব্যাটিংয়ের সময়টা ছাড়া তিন দিনে একবারের জন্যও আমরা ম্যাচে ছিলাম না। কী করব, আমার টিমে আমি আর ঋদ্ধি বাদে ব্যাটিংয়ে কোনও ম্যাচ উইনার নেই। আমি না পারলে এমন কেউ নেই যে একদিনের জন্যও লঙ্মীরতন শুক্ল-র মতো খেলে দেবে। তবু বলব, আমার টিমের জন্য আমি গর্বিত। আমরা ফাইনালে যাওয়ার যোগ্যও ছিলাম। কিন্তু আমার কপালে সেমিফাইনাল পর্যন্ত-ই ছিল, ফাইনাল বোধহয় ছিলই না!” |
|
|
|
|
|