ভরা মাঘে ভ্যাপসা গরম!
গত সপ্তাহে তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। ভাবা গিয়েছিল মাঘে জাঁকিয়ে শীত পড়বে কলকাতায়। কিন্তু কোথায় কী! শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে সোমবার পৌঁছে গিয়েছে ১৬ ডিগ্রির উপরে। আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি অনেকক্ষণ। তাই মাঙ্কি ক্যাপ আর মাফলার জড়িয়ে যাঁরা প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ঘেমেনেয়ে একশা। দিন যত এগিয়েছে, হাওয়ায় ভ্যাপসা ভাব ততই অস্বস্তি বাড়িয়েছে।
শীতের হলটা কী? ঘনঘন পশ্চিমী ঝঞ্ঝায় এ বার প্রথম থেকেই শীত মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। তাপমাত্রা কখনওই স্থায়ী ভাবে নামতে পারেনি। ওঠানামা করেছে। পরিমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ঢুকে পড়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রার বদলে নেমেছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। তার জেরে কয়েক দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রির নীচে নেমে গেলেও, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিন্তু ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁতে পারেনি এক রাতের জন্যও। ফলে শীতটা উপভোগই করা গেল না তেমন ভাবে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আপাতত বিদায় নিলেও রাজস্থান থেকে মধ্যপ্রদেশ পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত থাকায় বাতাসে ঢুকতে শুরু করেছে জলীয় বাষ্প।
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথেষ্ট না নামায় শহরে বেড়েছে নানা রোগের জীবাণু এবং তাদের বাহকদের দাপট। ঘরে ঘরে সর্দিকাশি, জ্বর। টাইফয়েড, ইনফ্লুয়েঞ্জার পাশাপাশি কোথাও কোথাও ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির উপসর্গও দেখা যাচ্ছে। যে সব শিশুর সাতসকালে স্কুল, তাদের নিয়ে বিপদে পড়ছেন অভিভাবকেরা। মাফলার, মাঙ্কিক্যাপ, একাধিক সোয়েটারে শিশুদের হাসফাঁস অবস্থা। আবার সাতসকালে যে ভাবে আকাশ কুয়াশায় ঢাকা পড়ে যাচ্ছে, তাতে গরম জামায় ছেলেমেয়েদের না পরিয়ে স্কুলে পাঠানোর ঝুঁকিও কেউ নিতে পারছেন না।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, আজ, মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা কমে ১৫ ডিগ্রির আশপাশে আসতে পারে। তার মানেই যে শীত এসে গেল, সেই গ্যারান্টি কিন্তু আবহবিদেরা দিতে পারছেন না। অলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক আবহবিদের কথায়, “উত্তরপশ্চিম ভারতে মঙ্গলবারই একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার কথা আছে। সেটি মধ্য ভারতের দিকে সরে আসার কথা। ওই ঘূর্ণাবর্ত মধ্য ভারতে এলে ফের গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়তে পারে জলীয় বাষ্প। তাতে তাপমাত্রা ফের বাড়ার আশঙ্কা থাকবে।” ওই ঘূর্ণাবর্তের গতিপ্রকৃতির উপরেই নির্ভর করছে মাঘের বাকিটা শীত কেমন থাকবে। |