কর্মী সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়, কার্যত সিভিক পুলিশের উপরেই অনেকটা ভরসা করে থাকতে হয়। সে সমস্যার কথা বিবেচনা করেই প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। ১০০ ডায়াল, আলাদা করে কন্ট্রোল নম্বরের পাশাপাশি ফেসবুকেও অভিযোগ নেওয়া শুরু হয়েছে আগেই। এ বার প্রি-পেড ট্যাক্সি ও ট্যাক্সি রিফিউজাল সংক্রান্ত বিষয়ে দ্রুত পথচারীদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এসএমএস পদ্ধতির ব্যবহার করতে চলেছে বিধাননগর কমিশনারেট। তার জন্য চালু হবে একটি নির্দিষ্ট ফোন নম্বর। রাজ্য সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ও কমিশনারেটের যৌথ উদ্যোগে দ্রুত এই প্রকল্প কার্যকরী করতে চলেছে কমিশনারেট।
কমিশনারেট সূত্রে খবর, এসএমএস করার জন্য নির্দিষ্ট একটি ফোন নম্বর দেওয়া হবে। পাশাপাশি, অভিযোগ জানানোর জন্যও নির্দিষ্ট একটি ফরম্যাট তৈরি করা হচ্ছে। সেটি সাধারণ মানুষের জ্ঞাতার্থে প্রকাশ করা হবে। সেই ফরম্যাট অনুযায়ী ট্যাক্সি রিফিউজাল কিংবা প্রিপেড ট্যাক্সি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ জানানো যাবে।
কলকাতার ধাঁচে বিধাননগর কমিশনারেটেও পৃথক ট্রাফিক দফতর তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু কলকাতার মতো আজও পরিকাঠামো পর্যাপ্ত আকারে তৈরি হয়নি। পরিকাঠামোর পরিকল্পনা থাকলেও বিধাননগর, এয়ারপোর্ট, নিউ টাউনের মতো কয়েকটি জায়গা ছাড়া কমিশনারেটের ৯টি থানা এলাকার সর্বত্র তা কার্যকর করা যায়নি। ফলে রাস্তায় যানবাহন সংক্রান্ত অভিযোগ থেকে দুর্ঘটনার মতো পরিস্থিতির খবর দ্রুত পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। পাশাপাশি দেখা গিয়েছে সকলেই ফেসবুক ব্যবহার করেন এমনটাও নয়। তাই আমজনতার কথা মাথায় রেখেই এসএমএস পদ্ধতির ব্যবহারের কথা জানান এক ট্রাফিক কর্তা।
সূত্রের খবর, পুলিশের দেওয়া নির্দিষ্ট নম্বরে এসএমএস করলে প্রথমে তা চলে যাবে পুলিশ কন্ট্রোলে। সেখান থেকে তা পাঠানো হবে এক অফিসারকে। তিনি সাতদিনের মধ্যে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন এসএমএসের মাধ্যমেই আবার তা জানিয়ে দেওয়া হবে। সাতদিনের মধ্যে পদক্ষেপ না করা গেলে এসএমএসটি চলে যাবে উচ্চপদস্থ কর্তার কাছে। তিনিও কিছু দিন সময় পাবেন। তার মধ্যে অভিযোগ নিয়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না হলে এসএমএস চলে যাবে ট্রাফিকের শীর্ষস্তরের কর্তাদের কাছে।
এমন পরিকল্পনা কার্যকরী হবে বলেই মত পথচারী থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের। সল্টলেকবাসী নির্মলেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভিআইপি রোড, রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়ে থেকে সল্টলেকের ভিতরের রাস্তায় সর্বত্র ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা মুশকিল। উপরন্তু কিয়স্ক খুঁজে গিয়ে অভিযোগ জানানোও সময়সাপেক্ষ। তার চেয়ে এসএমএস-এ তাড়াতাড়ি কাজ হবে।”
তবে বাসিন্দাদের সংগঠন সল্টলেক (বিধাননগর) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “পুলিশ নতুন প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু সাধারণ মানুষকেও আরও বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হয়ে প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করা প্রয়োজন।”
বিধাননগরের এসিপি (ট্রাফিক) অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপাতত প্রি-পেড ট্যাক্সি ও ট্যাক্সি রিফিউজাল সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। পরে অন্যান্য যানবাহন বা দুর্ঘটনা সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ জানানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।” |