ছাদ থেকে ভেঙে পড়েছে চাঁই। বাড়ির গায়ে গজিয়ে উঠেছে অশ্বত্থ গাছ। নষ্ট হয়ে গিয়েছে সেপটিক ট্যাঙ্ক। ফলে শৌচাগারের নোংরা সরাসরি নর্দমায় এসে পড়ছে। কর্মীর অভাবে সেই নর্দমা আবার নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। বিকল হয়ে গিয়েছে জলের কল। এই রোজনামচাতেই দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে চলছে আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারের কারারক্ষীদের থাকার ব্যারাক ও কর্মী আবাসন।
আসানসোল আদালতের গা ঘেঁষে রয়েছে বিশেষ সংশোধনাগার। কারারক্ষীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে সেখানে ৩৮ জন কারারক্ষী ও ৬ জন কারা অধিকর্তা রয়েছেন। সংশোধনাগারের পাশেই রয়েছে কারারক্ষীদের থাকার জন্য মোট পাঁচটি আবাসন। এর মধ্যে চারটি আবাসনে কারারক্ষীরা পরিবার নিয়ে থাকেন। একটিতে শুধু কারারক্ষীরাই থাকেন। এই আবাসনটি ‘সিপাই ব্যারাক’ নামে পরিচিত। আবাসনগুলির বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিটি আবাসনেরই দীর্ঘ দিন কোনও সংস্কার হয়নি। সিপাই ব্যারাকটিতে মোট আটটি শৌচাগার রয়েছে। তার মধ্যে চারটি ব্যবহারের অযোগ্য। প্রতিটি আবাসনেরই সেপটিক ট্যাঙ্ক নষ্ট হয়ে গেলেও সেগুলির মেরামত করা হয়নি। সংশোধনাগারের ভিতরে জেল হাসপাতাল, কারা সেল থেকে কর্মী আবাসন সাফাইয়ের জন্য মাত্র দু’জন সাফাইকর্মী রয়েছেন। |
ফলে সংশোধানাগারের আবাসন চত্বর প্রায় সব সময়েই নোংরা হয়ে থাকে। সেপটিক ট্যাঙ্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সাফাইকর্মীরা প্রত্যেকটি শৌচাগারের নোংরা ফেলার পাইপের মুখ সরাসরি আবাসনের পিছনের দিকের নর্দমার দিকে করে দেওয়ায় মলমূত্র আর্বজনা সবই এসে পড়ছে নর্দমায়।
সমস্যা রয়েছে আরও। আবাসনের পাশে রয়েছে একটি খেলার মাঠ। সেটি প্রায়ই জল কাদা জমে থাকায় ওই মাঠ মাঝে মধ্যেই ব্যবহার করা যায় না। আবাসনের এক বাসিন্দার অভিযোগ, ওই মাঠে সব সময়ই শুয়োর ঘোরাফেরা করে। তারা মাটি খুঁড়ে দেয়। ফলে মাঠে খেলা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আবাসনে যাওয়ার রাস্তাটিরও বেহাল দশা। জলের কল বিকল হয়ে যাওয়ায় বাসিন্দাদের জল আনতে যেতে হয় একটু দূরে।
আবাসনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারাকর্মীদের একাংশের দাবি, আবাসনগুলি রক্ষণাবেক্ষণের দাবিতে যত বার কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে তত বারই কোনও না কোনও কারাকর্মীদের বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে শো কজ করা হয়েছে। এর ফলে প্রায় বসবাস অযোগ্য হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কারাকর্মীরা ওই আবাসনগুলিতেই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। আসানসোলের জেল সুপার শমীক সরকার বলেন, “আমার এ নিয়ে কিছু বলার এক্তিয়ার নেই।”আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |