করিম বেঞ্চারিফা: ট্রফির কথা ভাবছি না। আমাদের লক্ষ্য এখন শুধুই সালগাওকর ম্যাচ জেতা।
সঞ্জয় সেন: পঁচাশির পর ফেড কাপে ভাল কিছু করার সুযোগ এসেছে মহমেডানের সামনে। ফুটবলাররা সবাই চাইছে কিছু করতে।
ইস্টবেঙ্গলে যখন আধো অন্ধকারে। সেমিফাইনাল যাওয়ার জন্য অন্য টিমের উপর নির্ভরশীল, তখন মোহনবাগান, মহমেডানে আলোশেষ চারে যাওয়ার সহজ পথে দাঁড়িয়ে।
মর্গ্যান-জমানা থেকে সপ্তাহ তিনেক আগেও এই দৃশ্য কল্পনাতেও আনা যেত না। লাল-হলুদের সাফল্যের পাশে অন্য দুই প্রধানকে দেখাত চূড়ান্ত ব্যর্থ, বিবর্ণ। ফেড কাপ সব ওলটপালট করে দিয়েছে। পরপর ড্র আর হেরে আর্মান্দোর ইস্টবেঙ্গল ধুঁকছে। আর করিম এবং সঞ্জয়ের টিম পরপর জিতে নিজেদের গ্রুপে শীর্ষে। মহমেডান কাল জিতলে শেষ চারে পৌঁছে যাবে। মোহনবাগানের চাই ড্র। ডার্বি থেকে টানা জয়ের হ্যাটট্রিক, শক্তিশালী লাজংকে হাফ ডজন গোল দেওয়া মোহনবাগানকে ফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে অন্যতম দাবিদার হিসাবে দেখতে শুরু করেছে ফুটবলপ্রেমীরা। সেটা এতটাই জোরাল যে, বাগানের মরক্কান কোচকে টিমের ফোকাস ঠিক রাখতে বলতে হচ্ছে, “আমরা এখানে পাঁচটা ফাইনাল খেলতে এসেছি। সবে দু’টো হয়েছে। এখনও তিনটে বাকি। অনেক পথ যেতে হবে। ট্রফির কথা উঠছে কেন?” ট্রফির কথা তুললেই চটে যাচ্ছেন করিম। কিন্তু তাতেও আটকানো যাচ্ছে না, সাড়ে তিন বছর পর বাগানে ট্রফি আসার হাওয়া উঠে যাওয়াকে। আপনি তো কখনও ফেড কাপ পাননি? এ বার হবে? “আমি সুস্থ আছি। চোটমুক্ত। নিজের লক্ষ্যে ফোকাসড্। পুরো টিমের খিদে রয়েছে ট্রফির জন্য,” বলছেন ওডাফা-ই।
টিম মিটিংয়ে করিম আবার সতর্ক করছেন ডেনসনদের। “আত্মতুষ্টি ঢুকতে দিও না। ফোকাসড্ থাকো। সালগাওকর ম্যাচ জিততে হবে। গ্রুপের সব ম্যাচ জিতেই শেষ চারে যেতে হবে। এটা মাথায় রেখো।” রবিবার অনুশীলন হয়নি। শুধুই সাঁতার কেটেছেন ওডাফারা। তার পর কেউ শপিং মলে, কেউ হোটেলের ঘরে টিভির সামনে সময় কাটিয়েছেন। আইবরকে নিয়ে শপিং মল ঘুরতে যাওয়া ক্রিস্টোফার বললেন, “আমার তিনটে গোল হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আরও গোল করতে হবে। গোল চাই গোল। তবেই না ট্রফি জিতব।”
শেষ ম্যাচে ড্র করলেও বাগানের সমস্যা নেই। নবিদের কিন্তু শেষ চারে উঠতে গেলে জিততেই হবে ডেম্পোর বিরুদ্ধে। “আমরা যা খেলছি, ডেম্পোকে হারিয়ে দেব,” অনুশীলন শেষে বললেন ডাকাবুকো রহিম নবি। বহু চাপের ম্যাচ জেতার অভিজ্ঞতা আছে পান্ডুয়ার জাতীয় ফুটবলারটির। জানেন ডেম্পো-বধের জন্য কতটা মানসিক প্রস্তুতি দরকার। আর্থার পাপাসের টিমের বিরুদ্ধে মহমেডানের সবচেয়ে বড় সুবিধা পেন-জোসিমার-লুসিয়ানোর মতো বিদেশিদের দলে পাওয়া, নবি-নির্মল-ইসফাক-অসীমদের মতো ভারতীয়দের অভিজ্ঞতা। “ডেম্পোর পাঁচ-ছ’জন আমার কোচিংয়ে আগে খেলেছে। ওদের খেলা আমি জানি। তবে ভাল টিম। কিন্তু আমরাও তৈরি,” বললেন ময়দানের নামী কোচ সঞ্জয়।
কাল নারায়ণ দাস, হোলিচরণ, প্রণয় হালদার, অলউইন জর্জ ডেম্পোর তরুণ ব্রিগেডকে আটকাতে নিজের দলে কিছু পরিবর্তন আনছেন মহমেডান কোচ। জেরি ঢুকতে পারেন টিমে। বেটোর জন্য জোনাল মার্কিংয়ের চিন্তাও ঘুরছে সঞ্জয়ের মাথায়। “বেটো এখনও পেনাল্টি বক্সের আশপাশে ভয়ঙ্কর,” বললেন তিনি। ডেম্পোয় সদ্য যোগ দেওয়া টোলগেকে অবশ্য এই ম্যাচে গ্যালারিতে থাকতে হবে। মহমেডান অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারকে রিলিজ দেওয়ার সময় শর্ত দিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে কোনও টুর্নামেন্টে খেলানো যাবে না। অতএব টোলগে বনাম মহমেডান হচ্ছে না। |