এক বধূকে খুনের অভিযোগে শনিবার সকালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ। স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা চালায় স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের গাড়িতেও। উত্তর দিনাজপুরের জেলা পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদী বলেন, “এক মহিলার দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে। নিহত বধূর পরিবারের পক্ষ থেকে ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সেই অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। বিক্ষোভ সামাল দিতে পুলিশ কর্মীরাও জখম হয়েছেন।”
পুলিশ জানায়, মৃত ওই মহিলার নাম সুচিত্রা ঘোষ (৩৫)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী রাধারমণ ঘোষের বাড়িতে এ দিন সকালে বাইরের দিকের এক শৌচাগারে দোকানের কয়েকজন কর্মী সুচিত্রাদেবীর দগ্ধ দেহ দেখতে পান বলে বাসিন্দারা দাবি করেছেন। ঘটনার খবর ছড়াতেই এলাকার লোকেরা বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বাড়ি ও ব্যবসায়ীর গাড়িও ভাঙচুর করে জনতা। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিবারের লোকেদের বিক্ষোভ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখায় বাসিন্দারা। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। দু’জন পুলিশ কর্মীও আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। |
পুলিশ ও পরিবার সূত্রের খবর, ১৯৯৯ সালে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা সুচিত্রার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জের বাসিন্দা পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী রাধারমণ ঘোষের। বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে অত্যাচার চালানো হয় বলে অভিযোগ। গত বছর বধূ নির্যাতনের একটি অভিযোগও দায়ের করে ওই মহিলা ও তার বাপের বাড়ির সদস্যরা। পরে অবশ্য অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়েছিল। নিহত বধূর দাদা অজিতবাবু অভিযোগ করে বলেন, “প্রতিদিনই ওকে মারধর করা হত। পাড়ার কারও সঙ্গে ওকে মিশতেও দিত না।” ওই দম্পতির তিন ছেলে মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী, অন্যজন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। ছোট ছেলের বয়স ৩ বছর বলে জানা গিয়েছে। ঘরের দরজা জানলা বন্ধ করে তারা সকলেই ভিতরেই ছিল। নিহত বধূর মা অমিয়প্রভাদেবী তাঁর মেয়েকে খুন করার অভিযোগে জামাই সহ ওই পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত স্বামী রাধারমণ, শ্বশুর ক্ষীরোদ ঘোষ এবং শাশুড়ি মালতি ঘোষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। |