|
|
|
|
হাসিতে বুঝতে পারিনি কোন দলের সাপোর্টার
বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায় |
...অরোরা স্টুডিওতে নিজের বন্দি অবস্থায় সুচিত্রা সেনকে সামনাসামনি প্রথম দেখেছিলাম। কথা বলেছিলাম। সেটা ১৯৫২ সাল। সুচিত্রা সেন তখনও সুচিত্রা সেন হননি। কারণ শ্যামবাজারের ওই স্টুডিওতে যে ছবির শ্যুটিংয়ে সুচিত্রাকে দেখেছিলাম, সেটাই তাঁর প্রথম সিনেমা। ‘সাত নম্বর কয়েদি’। খুব মজার একটা ঘটনার মাধ্যমে আমাদের সেই দেখা হয়েছিল। বালিতে আমার মামার খুব বন্ধু ছিলেন জহর গঙ্গোপাধ্যায়। বাহান্নতে আমি লিগে বিএনআরে দারুণ খেলায় আইএফএ শিল্ডে মোহনবাগান আমাকে লিয়েনে নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তখন কলকাতা ফুটবলে সে রকম নিয়ম ছিল। কিন্তু বিএনআরও আমাকে ছাড়বে না। আমি শিল্ডে ওদের প্রথম ম্যাচ হায়দরাবাদ পুলিশের সঙ্গে খেলতে গেলাম না। ধীরেনদা (দে), কুমারদা (উমাপতি কুমার) জহর গঙ্গোপাধ্যায়ের সাহায্য নিয়ে আমাকে অরোরা স্টুডিওতে লুকিয়ে রেখে দিয়েছিলেন শিল্ড শুরুর আগে। ঠিক মোহনবাগানের ম্যাচের আগে আমাকে বার করে সই করিয়ে মাঠে নামাবেন। জহর গঙ্গোপাধ্যায় তখন মোহনবাগানের হকি সেক্রেটারি। এক দিন অরোরা স্টুডিওতে আমার লাঞ্চের পর উনি আমাকে চিৎকার করে ডাকছেন, “শু্যটিং দেখবি? এ দিকে চলে আয়।” গিয়ে দেখি এক অপরূপ সুন্দরী, গ্ল্যামারাস মহিলা নায়িকার ভুমিকায় অভিনয় করছেন। সিনটা আবার তাঁর বিয়ের ছিল। তিনিই সুচিত্রা সেন। কিন্তু তখনও তো আর তিনি মহানায়িকা হননি। সবে প্রথম সিনেমা। আমার সঙ্গে জহরদা আলাপ করিয়ে দিলেন। দু’একটা কথাবার্তা হয়েছিল। আমি মোহনবাগানে খেলব শুনে হাসলেন। ঠিক বুঝতে পারিনি, মোহনবাগান না ইস্টবেঙ্গল কোন ক্লাবের সাপোর্টার! বা আদৌ সাপোর্টার কি না। পরে আমার স্ত্রী তপতী সুচিত্রার সঙ্গে অনেক সিনেমা করেছে। ‘শাপমোচন’, ‘সাগরিকা’-এ তপতীর তো বেশ বড় রোল ছিল। সেই সময় স্টুডিওতে তপতীকে অনেক বার আনতে গিয়ে সুচিত্রাকে দেখেছি। কিন্তু আর কখনও সে ভাবে কথাবার্তা হয়নি। তত দিনে তিনিও সেই ডাইমেনশনে, সেই উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছেন, যার জন্য তাঁকে সিনেমা জগত ‘ম্যাডাম সেন’ বলে থাকে ... |
|
|
|
|
|