|
|
|
|
ধোনির মতো স্পোর্টসবাইকে সওয়ার হবেন, স্বপ্ন ফালাহর
রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায় • ইনদওর |
তিনি মাঝে মধ্যে লম্বা গোঁফ রাখেন, চুল বাড়িয়ে ‘ক্যারিশমা’ বাড়ানোর চেষ্টা করেন, ও সব ছাড়া নাকি চলে না। আবার রাতারাতি সব উড়িয়ে দেন বে-খেয়ালে।
তিনি মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে পছন্দ করেন, এমএসডি-র বড় ভক্তও বটে। ক্রিকেটের ব্যস্ত শিডিউলের ফাঁকে যে সময়টা বেরোয়, সেটা বরাদ্দ থাকে ইন্টারনেটে ধোনি নিয়ে খোঁজাখুঁজিতে। ইউ টিউবে ভারত অধিনায়কের ব্যাটিং ভিডিও নয়, মন দিয়ে খোঁজেন ধোনির স্পোর্টস বাইকের নিত্যনতুন তথ্য! তার পর সোজা বন্ধুবান্ধদের থেকে বাইক ধার করে আনেন, এবং নিজেই মুহূর্তে ‘মহেন্দ্র সিংহ ধোনি’! জীবনে একটা স্বপ্নও আছে। ধোনির মতো নিজেরও একটা স্পোর্টস বাইক থাকবে। ক্রিকেটের উপার্জন থেকে তিনি যেটা কিনবেন, কিনে উড়বেন গতির পৃথিবীতে।
তিনি আবার ক্রিকেটটাও খেলেন। ভাল বল করেন। প্রচুর উইকেট নেন। কিন্তু ইচ্ছে হলে দু’-তিন বছরের জন্য ক্রিকেটের নেশা ছেড়ে দিতেও দু’বার ভাবেন না!
ইনি সামাদ ফালাহ। শনিবার যাঁর সুইং বাংলা ব্যাটিংকে চূর্ণ করল যেমন, তেমনই এক বর্ণময় চরিত্রেরও সন্ধান দিয়ে গেল! যে চরিত্রকে পাগলাটে, খামখেয়ালি যে কোনও কিছু বলা যায়।
কত যে অদ্ভুত গল্প আছে মহারাষ্ট্র পেসারকে নিয়ে। জন্মসূত্রে পারস্য দেশীয়, অর্থাৎ ইরানের। বাবা-র পুনে-তে ক্যাফেটেরিয়া আছে। এবং সেখানে বিদঘুটে একটা ব্যাপারও আছে। ফালাহর পিতৃদেব মহম্মদ হাসান ছেলেকে রঞ্জি খেলতে দেখে আর ক্যাফেতে মেনু কার্ড বলে কোনও বস্তু রাখেননি। ছেলের ক্রিকেট-পরিসংখ্যান বড় বড় করে বোর্ডে চার দিকে টাঙিয়ে দিয়েছেন! “আরে, আমার বাবা ভাবতেই পারেনি আমি আবার ক্রিকেট শুরু করব। তাই আনন্দের চোটে যা ইচ্ছে তাই করেছে। মাঝে দু’তিনটে বছর ছেড়ে দিয়েছিলাম। টেনিস বলে ক্রিকেট খেলতাম। লেদার বল পোষাচ্ছিল না,” শনিবার বাংলার বিরুদ্ধে সাত উইকেট নেওয়ার পর বলে দিলেন ফালাহ।
এবং তাঁর ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের কাহিনিও বেশ রোমাঞ্চকর। সব ছেড়ে দিয়ে বেশ কিছু দিন বসেছিলেন। তার পর ওপেন ট্রায়ালে গিয়ে মহারাষ্ট্র-র রঞ্জি টিমে অতিরিক্ত সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে যান। কিন্তু মূল টিমে ডাক না পাওয়ায় আবার সব ছেড়েছুড়ে ক্লাব ম্যাচে যোগ আর ওই ম্যাচেই দশ উইকেট! “বাবা, মা ছাড়া আমার এক বন্ধু আছে। যে অনবরত খুঁচিয়ে যেত এটা বলে যে, আমাকে দিয়ে নাকি ক্রিকেট ছাড়া আর কিছু হবে না। ওয়াসিম আক্রমের একটা শিবিরও করেছিলাম। ওঁর মতো বোলিংটাও করার চেষ্টা করি,” বলে দিচ্ছেন ফালাহ।
যিনি নিজ মুখেই স্বীকার করেন, তিনি বড় বেশি কথা বলেন! শুনিয়ে দেন, তিনিই টিমের পয়লা নম্বরের ‘প্র্যাঙ্কস্টার’। আর বিষাক্ত সুইং বোলিংটা আসে নিজের উপর বিশ্বাস থেকে। যে দিন বিশ্বাসটা আসে না, বোলিংও নির্বিষ হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, তাঁর তিনটে ভিন্ন রান আপও আছে! ব্যাটসম্যানকে চমকে দিতে যে প্রবল ইচ্ছে করে। অক্লেশে বলেও দেন, ‘আয়্যাম আ ক্যারেক্টার।”
সত্যি, চরিত্র বটে! |
|
|
|
|
|