সুচিত্রা-উত্তমের স্মৃতি নিয়ে পড়ে জীর্ণ তোপচাঁচি পার্ক

১৮ জানুয়ারি
কানে কানে শুধু একবার বলো, তুমি যে আমার’।
এমন বাঙালি হয়তো হাতে গোনা, যাঁরা ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে প্রিয়জনকে এই গান শোনাননি। সাদা-কালো পর্দায় আজও সেই গানের দৃশ্য দেখা গেলে ভেসে ওঠে বধূ বেশে সুচিত্রা সেন গান শোনাচ্ছেন উত্তম কুমারকে। ‘হারানো সুর’ ছবির দৃশ্য। সুচিত্রার মৃত্যুতে শোক প্রবাসেও। শোক ছুঁয়ে গেছে প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ডের বাঙালিদের। বিশেষত ধানবাদের বাঙালিদের। কারণ ‘হারানো সুর’-সহ সুচিত্রা সেনের অন্তত তিনটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছবির শুটিং হয়েছিল ধানবাদের আশপাশেই। সেই সূত্রে ধানবাদের প্রবীণ বাঙালিরা খুঁজছেন সেই হারিয়ে যাওয়া সুর।
তোপচাঁচি পার্ক। ছবি: চন্দন পাল।
ধানবাদের বাঙালিদের উদ্যোগে অনেক আগে জনপ্রিয় বাংলা ছবি এখানে সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে দেখানো হত। অবশ্যই দাপট ছিল সুচিত্রা-উত্তমের। ‘হারানো সুর’, ‘বিপাশা’ কিংবা ‘হসপিটাল’-এর শু্যটিং-এর সময় তোপচাঁচি, মাইথন কিংবা টুন্ডুতে উপচে পড়ত বাঙালিদের ভিড়। সুচিত্রা-উত্তমের সৌজন্যে কলকাতার বাঙালিরা ধানবাদ অঞ্চলে বেড়াতে গেলে ঢুঁ মারতেন তোপচাঁচি, টুণ্ডু। আদিবাসী গাইডরা দেখাতেন কোথায় কোন সিনেমার শু্যটিং হয়েছে।
স্টিল অথরিটি অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন কোল অফিসার, ধানবাদের বাসিন্দা অশ্বিনী নন্দী। বিরাশি বছরের অশ্বিনীবাবুর কথায়, “সুচিত্রা সেন কিংবা উত্তম কুমারের প্রতি আমাদের দুবর্লতা একটু বেশি। তার কারণ আমরা তাঁদের খুব কাছ থেকে দেখেছি। এখানে তাঁরা শুট্যিং করেছেন। এখানকার ঝরিয়া মাইনসের গেস্ট হাউসে থাকতেন তাঁরা। সেই শুট্যিং দেখতে আমরা ভিড় জমাতাম ওই সব জায়গায়। আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের অনেকেই আজ নেই। তাঁদের কাছে উত্তম-সুচিত্রার অটোগ্রাফ-ও ছিল।”
আজ সুচিত্রার প্রয়াণের পরে মলিন হয়ে আসা সেই সব স্মৃতি হাতরাচ্ছেন ধানবাদ, তোপচাঁচির বাঙালিরা। তাঁরাই জানান, হারানো সুরের সেই বিখ্যাত গান ‘কানে কানে শুধু’-র শুট্যিং হয়েছিল তোপচাঁচির পার্কে। তোপচাঁচি লেকের পাশেই জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে পার্কটি। তোপচাঁচি অবশ্য উত্তম কুমারের বরাবরের প্রিয় জায়গা ছিল। উত্তম কুমার পরবর্তী কালে সেখানে জমিও কেনেন। সুচিত্রা-উত্তম অভিনীত ‘বিপাশা’-র শুট্যিং হয় মাইথনে। ডিভিসির গেস্ট হাউস, মাইথন বাঁধের উপরের লক গেটে অনেক দৃশ্যের লোকেশন ফেলা হয়েছিল। কাতরাসের কাছে টুন্ডু হল্ট স্টেশনে টুন্ডু হাসপাতাল। সুচিত্রা-অশোক কুমার অভিনীত ‘হসপিটাল’ ছবির জন্য এক সময় স্থানীয় মানুষের কাছে বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল এই হাসপাতাল। মহানায়িকা ওই সিনেমায় ডাক্তারের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। কলকাতা থেকে পর্যটকরা বেড়াতে এলে টুন্ডু হাসপাতালও থাকত বাঙালির পর্যটন মানচিত্রে। ধানবাদের বেঙ্গলি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি সহ-সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চন দে’র আদি বাড়ি কাতরাসে। তাঁর কথায়, “আজ এখানে, প্রবাসে প্রবীণ বাঙালিদের স্মৃতি রোমন্থনের দিন।’’


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.