|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
যল্লিখিতম্ তচ্ছাপিতং চলিতেছে |
বইপোকা |
‘অ্যানেকডোটস’-এর বাংলা প্রতিশব্দ কী? চণ্ডী লাহিড়ী মশাই বলিয়াছিলেন ‘চলমান প্রসঙ্গ’, ‘কড়চা’ও বলিয়া থাকেন কেহ কেহ। কিন্তু ‘অ্যানেকডোটস’-এর যে মধুর রস (কখনও কিঞ্চিত্ অম্লমধুরও) তাহা কোনও বঙ্গীয় প্রতিশব্দেই অদ্যাবধি ধরা যায় নাই। যাইবার কথাও নহে। কারণ বাংলা সাহিত্যে অ্যানেকডোটস খুব বেশি লেখা হয় নাই। বিষয়টিই যেখানে প্রবলপ্রচল নহে শব্দটি সেখানে স্বতোত্সারিত হইবে কী করিয়া? তবে ইদানীং, বেশ কিছু স্মৃতিকথায় উপভোগ্য কিছু অ্যানেকডোটস মিলিতেছে। তেমনই একটি, পশুপতি ঢাকাইয়ের কড়চা (দে পাবলিকেশনস)। লেখক তরুণকুমার রায় নোয়াখালির সন্তান, যৌবনের অধিকাংশে কৃষ্ণনাগরিক। তাঁহার রচনায় বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের নিকট হইতে দেখার স্মৃতি। সেই স্মৃতি সর্বত্র প্রণত নহে, এইটি বিশেষ করিয়া উল্লেখ করিবার। তরুণ লিখিতেছেন, ‘অনেকবার কোর্টের কাজের দিনে সেখানে হাজির থেকে এজলাসে বসে-থাকা অন্নদাশঙ্করকে ন্যায় বিতরণে লিপ্ত দেখেছি। দায়রার মামলার সওয়াল জবাবের ফিরিস্তি তিনি আপিস থেকে সরবরাহকৃত পেন হ্যান্ডেল দোয়াতে ডুবিয়ে লিখতেন এবং পকেট থেকে ঘনঘন রুমাল বের করে তাতে থুথু ফেলে আবার সেটা যত্ন করে পকেটে পুরে রাখতেন। মানবদরদী অন্নদাশঙ্করকে কিন্তু কোনোদিন কাঠগড়ার আসামিকে বসতে বলতে দেখিনি।’ ইহার পরে অবশ্য আসামিদের কষ্ট লইয়া যে সকল কথা আছে সে সব ছাঁটিবার প্রয়োজন ছিল। তাহাতে ওই পর্যবেক্ষণের তীব্রতা অটুট থাকিত। অবশ্য বইপাড়ায় মুড়ি হইতে মিছরি সকলই যল্লিখিতং তচ্ছাপিতং করাই এখনও দস্তুর। |
|
|
|
|
|