বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন কলেজ নির্বাচনে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র তুলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে সরব হল এসএফআই এবং এবিভিপি (অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ)। টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে গুন্ডামির অভিযোগ তুলে কলেজ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দিয়েছে এসএফআই। টিএমসিপি নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জেলাশাসক বিজয় ভারতীও বলেন, “প্রতিটি কলেজেই নির্বাচনের জন্য ব্যাপক পুলিশি বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে। লিখিত ভাবে অভিযোগ পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মনোনয়নপত্র তোলার সময় কোথাও বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।”
বৃহস্পতিবার থেকে বাঁকুড়া জেলার ২৫টি কলেজের মধ্যে ২৩টি কলেজে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র তোলার কাজ শুরু হয়েছে। তার মধ্যে এ বারও বাঁকুড়া সারদামণি গার্লস কলেজে নির্বাচন হচ্ছে না। অন্য দিকে ছাতনা চণ্ডীদাস কলেজে প্রশাসক নিয়োগ করা রয়েছে। এই দু’টি কলেজে নির্বাচন না হলেও জেলার বাকি কলেজগুলিতে আগামী ২৮ জানুয়ারি নির্বাচন হওয়ার কথা। বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজ বাদে জেলার বাকি ২২টি কলেজে শুক্রবারই ছিল মনোনয়নপত্র তোলার শেষ দিন। বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলির অভিযোগ, শাসকদলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-র সদস্যরা জেলার অধিকাংশ কলেজেই সন্ত্রাস চালিয়ে বিরোধীদের মনোনয়নপত্র তোলা বা জমা দিতে দিচ্ছেন না।
এসএফআইয়ের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক ধর্মেন্দ্র চক্রবর্তীর অভিযোগ, “এ দিন আমাদের সংগঠনের সদস্যেরা শালতোড়া নেতাজি সেন্টেনারি কলেজ, শালডিহা কলেজ ও খাতড়া আদিবাসী মহাবিদ্যালয়ে, রাইপুর ব্লক মেমোরিয়াল ও রাইপুর বীরসা মুন্ডা, সারেঙ্গার পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু কলেজে মনোনয়নপত্র তুলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু টিএমসিপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের বাধা দিয়েছে। কলেজের সামনে হাজার হাজার লোকের জমায়েত করে এসএফআই সদস্যদের ঘিরে রাখা হয়।” তাঁর দাবি, কলেজ নির্বাচনের নামে প্রহসন হচ্ছে। তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে গতবারের মতো এ বারও আমরা কলেজ নির্বাচন থেকে সরে আসতে পারি। আগামী সোমবার সাংগঠনিক বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন এবিভিপি বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক অনুপ সাহার অভিযোগ, “প্রতিটি কলেজের ছাত্র সংসদ গায়ের জোরে দখল করতে চাইছে টিএমসিপি। তাই ওরা অন্যদের মনোনয়নপত্র তুলতেই দেয়নি। পরিস্থিতি যা তাতে বাধা দিলে নিরীহ ছাত্রছাত্রীদের প্রাণহানির সম্ভাবনা থাকায় আমরা শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি।”
টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জেলায় উন্নয়নের কাজকর্ম দেখে কলেজ পড়ুয়ারা সকলেই আমাদের সংগঠনকে দু’হাত তুলে সমর্থন করছেন। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী সংগঠনগুলি উঠে যাচ্ছে। প্রার্থী না পেয়ে ওরা এখন মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।” |