প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠল উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায়। গাতপুরিয়ার বাসিন্দা ভবানীশঙ্কর প্রসাদ নামে এক বৃদ্ধ ওই প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বরের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাতে বাগদা থানায় ওই অভিযোগ করেন। তবে দুলালবাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “বাম জমানাতেও আমার বিরুদ্ধে এমন চক্রান্ত করা হয়নি, যা পরিবর্তনের সরকারের আমলে হয়েছে।”তাঁর অভিযোগের তির স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে। বাগদার বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক তথা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।” জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “একটা অভিযোগ হয়েছে। আমরা আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর দুই আগে ভবানীশঙ্করবাবু দুলালবাবুর অবসরপ্রাপ্ত বাবা দিলীপবাবুর কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা ধার নেন। অভিযোগ, দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও তিনি ওই টাকা শোধ করেননি। ভবানীবাবু পুলিশকে জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি স্থানীয় বৈকোলা বাজারে এক জনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তাঁর ফেরার পথে দুলালবাবু কয়েকজনকে নিয়ে এসে তাঁকে মাটিতে ফেলে মারধর করেন বলে অভিযোগ। তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করা হয় বলেও তাঁর দাবি। তাঁর গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের সোনার চেন ও ৫১ হাজার টাকা দুলালবাবু ছিনতাই করে তাঁকেই চোর সাব্যস্ত করে থানায় নিয়ে যান বলে অভিযোগ।
দুলালবাবুর পাল্টা দাবি, “বাবার পেনশনের টাকা থেকে ওঁকে ধার দেওয়া হয়েছিল। বৈকোলা বাজারে দেখা হয়েছিল ঠিকই। ওঁকে থানায় নিয়ে আসি। মারধর করিনি। পরে রাত ৮টা নাগাদ তৃণমূলের কয়েকজন গিয়ে ওকে দিয়ে থানায় মিথ্যে অভিযোগ করান।” পুলিশের এক কর্তা জানান, অভিযোগকারীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে বিধায়ক থাকলেও ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দলের টিকিট পাননি দুলালবাবু। ওই সময়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এক মহিলাকে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এর পরে উপেন বিশ্বাস বিধায়ক হওয়ার পরে দলের কাছে তাঁর গুরুত্ব অনেকটাই কমে যায়। পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারেও তাঁকে সেভাবে দেখা যায়নি। তবে দুলালবাবু জেলা ও রাজ্য স্তরের দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেন বলে স্থানীয় তৃণমূলের একাংশ সূত্রে জানা গিয়েছে। |