|
|
|
|
হোটেল থেকে উদ্ধার তারুর-পত্নীর দেহ
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি
১৭ জানুয়ারি |
ফেসবুকে শেষ বার্তায় জানিয়েছিলেন তাঁরা সুখী। কিন্তু সেই বার্তা লেখার পর দিনই দিল্লির লীলা প্যালেস হোটেলের ঘর থেকে পাওয়া গেল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুরের স্ত্রী সুনন্দা পুষ্করের দেহ। তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা দিল্লি পুলিশের।
পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িতে রংয়ের কাজ চলায় গত কাল থেকে দিল্লির লীলা প্যালেস হোটেলের ৩৪৫ নম্বর ঘরে থাকছিলেন তারুর দম্পতি। আজ সন্ধ্যা সাড়ে আটটা নাগাদ কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক সেরে হোটেলে ফেরেন শশী। সুনন্দা দরজা না খোলায় শশী হোটেল কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। দরজা ভাঙার পরে বিছানা থেকে সুনন্দার দেহ উদ্ধার হয়। আত্মহত্যা ছাড়া মৃত্যুর পিছনে অন্য সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন শশীর ব্যক্তিগত সচিব অভিনব কুমার। বিষয়টি নিয়ে সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, যক্ষ্মা ও অবসাদে ভুগছিলেন সুনন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, স্বাভাবিক মৃত্যুও হয়ে থাকতে পারে সুনন্দার। আপাতত কোনও সম্ভাবনাই বাতিল করা হচ্ছে না। ফরেন্সিক তদন্তের ভার আংশিক ভাবে সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে। কাল সুনন্দার দেহের ময়নাতদন্ত হবে। হোটেলকর্মীদের জেরা করার পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ ও সুনন্দার ফোনের কল রেকর্ড পরীক্ষা করছে দিল্লি পুলিশের টিম। |
|
তখন টিম কোচির মালিক। শশী ও সুনন্দা। —ফাইল চিত্র। |
পাকিস্তানি সাংবাদিক মেহর তারারের সঙ্গে শশীর সম্পর্ক নিয়ে গত দু’দিন ধরে টুইটারে একগুচ্ছ মন্তব্য তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। দিন দুয়েক আগে শশীকে পাঠানো মেহর তারারের কিছু অন্তরঙ্গ এসএমএস কেউ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে দিয়েছিল। পরে আবার সুনন্দা সেই মেসেজগুলি নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে জানান, মেহর কী ভাবে তাঁর স্বামীর পিছনে পড়েছেন, সেটাই তিনি দেখাতে চান! সুনন্দা তখন দাবি করেন, চিকিৎসার জন্য তাঁকে তিন-চার মাস বাইরে যেতে হয়েছিল। তখনই মেহর তাঁদের বিয়ে ভাঙার চেষ্টা করেন। আগে সুনন্দা দাবি করেছিলেন, মেহরের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন শশী। তাই বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করবেন তিনি। মেহরকে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের চরও বলেন সুনন্দা।
জবাবে মেহর টুইটারে বলেন, “ওঁর মাথা খারাপ! উনি নিজে কী, সেটাই বুঝিয়েছেন।” এর মধ্যেই কাল ফেসবুকে তারুর দম্পতি জানান, তাঁরা সুখী। তার পরেই আজ এই ঘটনা।
|
হায় ভগবান! সুনন্দা! আমি এই মাত্র ঘুম থেকে উঠেই খবরটা দেখলাম।
পুরোপুরি বির্পযস্ত। কী বলব, ভেবে পাচ্ছি না। শান্তিতে ঘুমোও সুনন্দা।
মেহর তারার |
|
এ দিন সুনন্দার দেহ উদ্ধারের খবর জানাজানি হতেই একের পর এক প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে তারুর দম্পতির বন্ধুদের কাছ থেকে। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রাক্তন আন্ডার-সেক্রেটারি ও সাহিত্যিক শশীর পরিচিতি যথেষ্ট। মিলিন্দ দেওরা, শিল্পা শেট্টি, অনুপম খের-সহ তারুর পরিবারের একাধিক বন্ধু জানান, সুনন্দার এমন পরিণতি তাঁরা ভাবতেও পারছেন না। প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন খোদ মেহর তারারও। টুইটারে তাঁর বক্তব্য, “হায় ভগবান! সুনন্দা! আমি এই মাত্র ঘুম থেকে উঠেই খবরটা দেখলাম। পুরোপুরি বির্পযস্ত। কী বলব, ভেবে পাচ্ছি না। শান্তিতে ঘুমোও সুনন্দা।”
ব্যক্তিগত জীবনে ঝড় ৫৭ বছরের শশী বা ৫২ বছরের সুনন্দার কাছে নতুন নয়। দু’বার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে দু’জনেরই। শশীর আগের পক্ষের ছেলে ঈশানের আবেদন, “সকলকে অনুরোধ, এখন আমাদের পরিবারের গোপনীয়তাকে সম্মান করুন।”
২০১০-এর অগস্টে কেরলে বিয়ে হয় শশী-সুনন্দার। শশীর সঙ্গে বিয়ের আগেই আইপিএলের একটি টিমে তাঁর আংশিক মালিকানা ও সেই টিমের সঙ্গে শশীর সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক বাধে।
জীবনে পিছু ছাড়েনি। মৃত্যুতেও সেই বিতর্ক পিছু ছাড়ল না সুনন্দা পুষ্করের। |
|
|
|
|
|