ফরাসি আল্পসে স্কি করতে করতে পড়ে গিয়ে কি চিরকালের মতো কোমায় চলে গেলেন মাইকেল শুমাখার?
জার্মানির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটা অংশের আশঙ্কা, শুমাখারের মস্তিষ্কে যে ধরনের চোট লেগেছে, তাতে আর হয়তো কোনও দিনই কোমা থেকে জেগে উঠতে পারবেন না ফর্মুলা ওয়ান কিংবদন্তি।
জার্মানির কাগজে এই খবর বেরনোর পর থেকে আশঙ্কাটা ঘুম কেড়েছে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রত্যেক শুমাখার অনুরাগীর। গত এক সপ্তাহ ফ্রান্সের গ্রেনোবল হাসপাতাল শুমাখারের শারীরিক অবস্থা নিয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি। সঙ্গে তাঁর পরিবার ও প্রচারবিদও চুপ করে থাকায়, উদ্বেগটা আরও গভীর হয়েছে।
গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে ওষুধের মাধ্যমে কোমায় রেখে চিকিৎসা চলছে শুমাখারের। মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছে দু’বার। কিন্তু আঠারো দিন পরেও তাঁর জ্ঞান ফেরানোর উদ্যোগ নেননি গ্রেনোবল-এর চিকিৎসকেরা। এখানেই অশনি সঙ্কেত দেখছেন জার্মানির বিশিষ্ট নিউরোসার্জেন আন্দ্রিয়াস জিগার বা ইনস্টিটিউট অব এমার্জেন্সি মেডিসিনের ডিরেক্টর হেইঞ্জ পিটার মোয়েকে। দু’জনেই জানিয়েছেন, রোগীকে সাধারণত কৃত্রিম উপায়ে পনেরো দিনের বেশি কোমায় রাখা হয় না। কারণ তার পরে মস্তিষ্ক বা লিভার ফুলে রোগীর স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আঠারো দিন পরেও জ্ঞানে ফেরানো হয়নি। মানে মস্তিষ্কের চোট অসম্ভব গুরুতর। |
মোয়েকে বলেছেন, “যত দ্রুত জ্ঞানে ফেরানো হবে, তত তাড়াতাড়ি শ্বাসপ্রশ্বাস-সহ শরীরের বাকি সব প্রক্তিয়া স্বাভাবিক হবে। সেটা না হলে উদ্বেগের কারণ।” আন্দ্রিয়াস জিগার অবশ্য কিছুটা আশ্বস্ত করার সুরে বলেছেন, “যতক্ষণ না আমরা চোটের ধরন এবং চিকিৎসার আগ্রগতি নিয়ে স্পষ্ট করে জানছি, ততক্ষণ কিছু বলা ঠিক নয়।”
আর এক মস্তিষ্ক বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক রিচার্ড গ্রিনউড আবার বলেছেন, “সুস্থ হয়ে উঠলেও ও হয়তো আর মাইকেল শুমাখার থাকবে না। অনেক বেশি সীমাবদ্ধতার মধ্যে বাঁচতে শিখতে হবে ওকে। যা সবসময় এই ধরনের রোগীর জন্য অসম্ভব কঠিন কাজ।”
বিল্ড কাগজ আবার হাসপালের বুলেটিন বোর্ডের লেখা তুলে জানিয়েছে, “শুমাখারের অবস্থা স্থিতিশীল, সঙ্কটজনক নয়।” তবে একই সঙ্গে এ-ও লেখা হয়েছে যে, তাঁকে আগামী কয়েকদিনে জ্ঞানে ফেরানোর কোনও পরিকল্পনা নেই চিকিৎসকদের।
এ দিকে, শুমাখারের জন্য নতুন করে প্রার্থনা শুরু করেছে ফেরারি। নিজেদের ওয়েবসাইটে শুমাখারের জন্য বিশেষ বুলেটিন বোর্ড তৈরি করে সেখানে প্রকাশ করা হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আসা আরোগ্য কামনায় প্রতিটি শুভেচ্ছা বার্তা। ফেরারি প্রেসিডেন্ট মন্তজেমোলো নিজে সেখানে লিখেছেন, “আমরা তোমার পাশে আছি। পিট লেন থেকে নজর রাখছি। এবং জানি এ বারও তুমি রেসটা জিতেই ফিরবে।” |