‘জ্বলছে’ ওপেন, খেলা বন্ধ ঘণ্টা চারেক

১৬ জানুয়ারি
কে রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর!
অস্ট্রেলীয় ওপেনে এ বার টেনিস তারকাদের কাছে মেলবোর্নের অসহনীয় আবহাওয়া বৃহস্পতিবার অন্তত এ রকমই!
অস্ট্রেলীয় ওপেনের তাপমাত্রা তো ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস চড়েছেই, সঙ্গে দুপুরের দিকে একটা সময় শহরে প্রবল তাপপ্রবাহের সঙ্গে ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলসানি হতে থাকে আকাশে! যার জেরে উদ্যোক্তারা স্থানীয় সময় রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত এ দিনের খেলা স্থগিত রাখতে বাধ্য হন। সব মিলিয়ে ঘণ্টা চারেক খেলা বন্ধ থাকে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, “অস্ট্রেলীয় ওপেনের চূড়ান্ত গরমের নিয়ম বলবৎ করা হল।” অথচ টুর্নামেন্টের প্রথম দিন থেকেই মেলবোর্নের পার্কের কোর্টগুলো এ রকম দাবদাহে পুড়লেও উদ্যোক্তারা নাছোড় ছিলেন। গত তিন দিন তাঁদের একটাই কথা ছিল কোনও প্লেয়ারকে কিন্তু কোর্টে ডাক্তারের শুশ্রূষা নিতে হয়নি!
এ দিন উদ্যোক্তাদের সে কথা বলারও জো ছিল না। মেয়েদের দ্বিতীয় রাউন্ডে আমেরিকার ভারভারা লেপচেঙ্কো ম্যাচ চলাকালীন অসহ্য গরমে এমন কাহিল হয়ে পড়েন যে, মেডিক্যাল টিমকে কোর্টে নেমে তাঁর রক্তচাপ এবং পালস্-বিটের হার পরীক্ষা করতে হয়। কোর্ট এতটাই মারাত্নক গরম হয়ে উঠেছিল যে, ওই প্লেয়ারকে মাটিতে শুইয়ে শুশ্রূষা করা পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। কয়েকটা চেয়ার পাশাপাশি রেখে তার উপর শোয়ানো হয় তাঁকে।

মেলবোর্নে লড়াইটা গরমের সঙ্গেও। ‘ওয়াটার ফ্যানের’ সামনে পোল্যান্ডের জর্জি জানোভিচ।
মেলবোর্ন শহরের কিছু ট্রামলাইন যে দিন প্রচণ্ড বেশি তাপমাত্রায় বেঁকেও গিয়েছে, শহরের কোথাও কোনও আগুন ধরানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সে রকম দিনে অস্ট্রেলীয় ওপেনে খেলার পর ফ্রান্সের আলেঁ কর্নেট বলেছেন, “এ রকম অসহ্য গরমে কোনও ফিজিক্যাল এক্সারসাইজই করা অমানবিক, অবিশ্বাস্য! এমনকী দর্শকদের পক্ষেও এই রোদে গ্যালারিতে বসে থাকাই কঠিন।”
সবচেয়ে তাৎপর্যের মন্তব্য ভারতীয় ডাবলস তারকা রোহন বোপান্নার। পাকিস্তানি পার্টনার আইসাম কুরেশিকে নিয়ে খেলে ইন্দো-পাক এক্সপ্রেস দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পর বোপান্নার টুইট, “কোর্টে কাঁচা ডিম রেখে দিলে বোধহয় কিছুক্ষণের মধ্যে চমৎকার ডিমভাজা পেয়ে যেতাম!” সাংবাদিক সম্মেলনে বোপান্না বলেছেন, “গোটা বিশ্বে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু এ দিনের মতো গরমে কোথাও খেলিনি। একটা ম্যাচ জিতেই যেন মনে হচ্ছে, কয়েক বছর বয়স বেড়ে গিয়েছে।”
পুরুষ ও মহিলা সিঙ্গলসে মহাতারকাদের মধ্যে নাদাল, ফেডেরার, মারে, সঙ্গা, শারাপোভা, আজারেঙ্কা, রাডওয়ানস্কা প্রতিপক্ষের চেয়েও বেশি করে অসহ্য গরমের চ্যালেঞ্জ সামলে তৃতীয় রাউন্ডে উঠলেও অঘটন পঞ্চম বাছাই দেল পোত্রো-র হার। ফ্রান্সের বেনোয় পায়ের জিতে ওঠেন স্থানীয় সময় রাত দেড়টায়। অসহনীয় আবহাওয়ার ধাক্কায় উদ্যোক্তারা বাধ্য হন এক ডজন ম্যাচ বাতিল করতে। যার মধ্যে ডাবলসে পঞ্চম বাছাই লিয়েন্ডার পেজ-রাদেক স্টেপানেকের প্রথম রাউন্ড ছিল। তবে সপ্তম বাছাই বোপান্নাদের মতো মেয়েদের ডাবলসে ষষ্ঠ বাছাই সানিয়া মিজা-কারা ব্ল্যাক প্রথম রাউন্ড টপকেছেন।

বজ্রপাত ও তাপপ্রবাহ নিয়েই এ বারের অস্ট্রেলীয় ওপেন।
উদ্যোক্তাদের অবশ্য স্বস্তির বিশেষ কারণ দেখা যায়নি। শারাপোভার মতো টেনিসের গ্ল্যামার গার্ল অসহ্য গরমে প্রায় তিন ঘণ্টা কোর্টে কাটিয়ে চূড়ান্ত সেট আঠারো গেম খেলে জিতে কারিন ন্যাপের চ্যালেঞ্জ ৬-৩, ৪-৬, ১০-৮ টপকানোয় একহাত নেন উদ্যোক্তাদের। “সকাল এগারোতেই তাপমাত্রা একশো ডিগ্রি ফারেনহিটের বেশি যেখানে, তখন ম্যাচটা মাঝপথে বন্ধ করে দিয়ে ওরা আমার সুবিধের চেয়ে অসুুবিধে করল বেশি। কিছু সময় খেলতে না হলেও ম্যাচ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিয়ম মতো কোর্টেই থাকতে হয়েছে। উল্টে তিন ঘণ্টা রোদে পুড়তে হল!” উদ্যোক্তারা আরও সমালোচিত হচ্ছেন, প্রচণ্ড গরমে একই সময় এক মহাতারকার ম্যাচ খোলা কোর্টে ফেলে এবং অন্য মহাতারকার ম্যাচ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কোর্টে রেখে! এ দিন ভরদুপুরে শীর্ষ বাছাই নাদাল খেললেন রড লেভার সেন্টার কোর্টে। আর প্রায় সেই সময়ই বত্রিশের ফেডেরার এয়ারকন্ডিশনড্ হাইসেন্স এরিনার কোর্টে খেলেন।
এহেন বিশৃঙ্খল অবস্থায় শুক্রবার থেকে তাপমাত্রা আরও চড়ার পূর্বাভাস রয়েছে। ছুঁতে পারে ৭৭ বছর আগের মেলবোর্নের কুখ্যাত ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’র তাপমাত্রাকেও (৪৫.৬ ডিগ্রি)! তাতে শহরে ‘বুশফায়ার’ লাগবে কি না সময় বলবে, তবে অস্ট্রেলীয় ওপেন ‘জ্বলতেই’ পারে।
“কোর্টে কাঁচা ডিম রেখে দিলে বোধহয় কিছুক্ষণের মধ্যে
চমৎকার ডিমভাজা পেয়ে যেতাম!” —

ছবি: গেটি ইমেজেস।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.