দাবি-সর্বস্ব শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা আর নেই, খেদ পার্থর
খন শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়েই ব্যস্ত। এতটাই যে, তাঁদের প্রতি ছাত্রছাত্রীদের শ্রদ্ধা নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে মনে করেন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, নিজেদের দাবিদাওয়া জানানোটাই কোনও সংগঠনের মুখ্য উদ্দেশ্য হতে পারে না। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাজ করাটাই আসল। বুধবার তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন পার্থবাবু।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত না-থাকলেও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু পরে পার্থবাবুর বক্তব্য সমর্থন করেন। তিনি বলেন, “মনে হচ্ছে, বাম জমানার ব্যাধির দিকে ইঙ্গিত করেছেন পার্থদা। আমরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতির বিরোধিতা করে আসছি। ওঁর বক্তব্যের যৌক্তিকতা আছে।”
পার্থবাবু এ দিন নিজের এক শিক্ষকের সাদামাঠা জীবনের উল্লেখ করে বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি আগের মতো শ্রদ্ধাটা আর নেই। তাঁরা টিএ (ভ্রমণ ভাতা), ডিএ (মহার্ঘ ভাতা), পিএইচডি-র সঙ্গে যুক্ত সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত দাবিদাওয়া নিয়েই ব্যস্ত।” তাঁর অভিযোগ, শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেরা তো রাজনীতি করছেনই। সেই সঙ্গে অন্যদের, এমনকী ছাত্রছাত্রীদেরও রাজনীতি করার জন্য প্রভাবিত করছেন। মন্ত্রী বলেন, “রাতারাতি কিছু পাল্টানো যাবে না। তবে দেখতে হবে, ওঁরা যে-পথে হেঁটেছেন, আমরা যেন সেই পথে না-হাঁটি।”
শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের আর্থিক পাওনা, পদোন্নতি, ছুটি, অবসরকালীন সুবিধা ইত্যাদি দাবিতে বিভিন্ন সময়ে সরব হন। এই সব দাবিতে ক্লাস বয়কট করে পথে নেমে আন্দোলনের নজিরও বিরল নয়। এই অবস্থায় পার্থবাবুর মন্তব্য মোটেই ভিত্তিহীন নয় বলে মনে করেন শিক্ষক-ছাত্রদের একটা বড় অংশ।
এ দিন অনুষ্ঠানে আলোচ্য ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংগঠনের ভূমিকা। পার্থবাবু শুরু থেকেই বাম জমানাকে নিশানা করেন। বলেন, “আগের সাড়ে তিন দশকে অধ্যাপকেরাও ধরে নিয়েছিলেন যে, শিক্ষক সংগঠনও বোধ হয় শ্রমিক ইউনিয়নের মতো চলবে। কেবল দাবিদাওয়া, চাহিদার কথা বলা হত। গড়ার কথা কেউ বলেননি।” অনুষ্ঠানের পরেও তিনি বলেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-স্কুল, সর্বস্তরের শিক্ষকদেরই মানসিকতা বদলানো দরকার। সকলকেই মনে রাখতে হবে যে দাবির থেকে দায়বদ্ধতা থাকাটা বেশি জরুরি।
মন্ত্রীর মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে পশ্চিমবঙ্গ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা)। সংগঠনের সভাপতি তরুণ পাত্র বলেন, “কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে লিপ্ত, তার উদাহরণ কি কেউ দেখাতে পারবেন? বরং শাসক দলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-ই সেটা করছে।”
ওয়েবকুপার জন্ম তৃণমূল ভবনে। নিষ্ক্রিয়তা, একপেশে মনোভাব, বাম আধিপত্য ইত্যাদি কারণে ওয়েবকুটা থেকে বেরিয়ে এই শিক্ষক সংগঠন গড়া হয়েছে বলে জানান নেতারা। যদিও শাসক দলের ছাতার তলাতেই কেন এই সংগঠন, সেই প্রশ্নের সদুত্তর নেই। যদিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি রাজনীতি করার কথা মানতে রাজি নয় ওয়েবকুপা। সংগঠনের সভাপতি কৃষ্ণকলি বসু বলেন, “ওয়েবকুপা নিজেদের দাবিদাওয়ার বাইরে গিয়ে সামাজিক কাজকর্মের প্রতি দায়বদ্ধ।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.