খোদ নির্যাতিতা দফায় দফায় অভিযোগ করা সত্ত্বেও পুলিশ প্রথম থেকেই দ্বিতীয় বারের গণধর্ষণের কথা অস্বীকার করে আসছিল। মধ্যমগ্রামে গণধর্ষিতা কিশোরীর জীবদ্দশায় তারা তা মানতে চায়নি। আগুনে পুড়ে কিশোরীটির মৃত্যুর পরে ঘটনাটি নিয়ে রাজ্য জুড়ে শোরগোল শুরু হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তার দ্বিতীয় বার ধর্ষণের অভিযোগটি মেনে নিল পুলিশ।
মেয়েটি বারে বারেই বলেছিল, পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানানোর পরেও দ্বিতীয় বার তাকে ধর্ষণ করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তিন-তিন বার দেওয়া গোপন জবানবন্দিতেও দ্বিতীয় বার ধর্ষণের অভিযোগ করেছিল ওই কিশোরী। কিন্তু পুলিশ তাতে কান দেয়নি। এমনকী প্রথম বারের গণধর্ষণ নিয়ে চার্জশিট পেশ করা হলেও দ্বিতীয় বারের অভিযোগ নিয়ে চার্জশিটও দেওয়া হয়নি। ২৫ অক্টোবরের প্রথম গণধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ চার্জশিট পেশ করে ১৭ ডিসেম্বর।
আগুনে পুড়ে কিশোরীটির মৃত্যুর পরে ঘটনাটি নিয়ে রাজ্য জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ ওঠে পুলিশের উদাসীনতার। তার পরেই পুলিশ স্বীকার করে নিল যে, দ্বিতীয় বারেও কিশোরীটিকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। সেই অনুসারে গত ৮ জানুয়ারি আদালতে দ্বিতীয় বারের গণধর্ষণের চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে। প্রথম বারের ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল ছোট্টু-সহ ছ’জন। দ্বিতীয় বারের ধর্ষণের ঘটনায় তদন্তকারীরা চার্জশিটে শুধু ছোট্টুকেই অভিযুক্ত করেছেন।
ধর্ষণের সঙ্গে সঙ্গে ধৃত সব অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ওই নাবালিকার উপরে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইনেও মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট থেকে বিশেষ আদালতে মামলাটি সরানো হয়েছে। এখন থেকে বারাসত আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের এজলাসে মামলাটি চলবে।
মেয়েটির বক্তব্য অনুযায়ী দ্বিতীয় বারের গণধর্ষণের অভিযোগটিও সঙ্গে সঙ্গে গ্রহণ করা হয়নি কেন?
উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘মেয়েটি প্রথমে পুলিশের কাছে দ্বিতীয় বার ধর্ষণের অভিযোগই করেনি। পরে তার অভিযোগ অনুসারে তদন্ত চালিয়েই দ্বিতীয় বার ধর্ষণের অভিযোগে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।” |