সাগরের টান আর মদনের হুমকিতে বাস অমিল শহরে
কে অনেক বাস গঙ্গাসাগর-মুখো। তার উপরে অভিযোগ, পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের হুমকির কারণে রাস্তায় বেরোচ্ছে না বহু বাস। দুইয়ে মিলে কলকাতা শহর ও শহরতলি এলাকায় মঙ্গলবার এবং বুধবার দিনভর কার্যত বাস রাস্তা থেকে উধাও হয়ে গেল। অফিস-স্কুল-কলেজে ঠিক সময়ে পৌঁছতে নাভিশ্বাস উঠে গেল নিত্যযাত্রীদের।
বুধবার পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র অবশ্য দাবি করেন “গঙ্গাসাগরের জন্য বাস সে ভাবে কমেনি। কিছু বাস দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নেওয়া হয়েছে।” এর পাশাপাশি, যে সব বাসমালিকেরা বাস বার করছেন না, তাঁদের মন্ত্রীর পরামর্শ, “বাস বার করুন। না হলে পুলিশ বাস আটক করবে।”
গঙ্গাসাগরের মেলায় যোগ দিতে আসা পর্যটকদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে সরকারি এবং বেসরকারি প্রচুর বাস এ সময়ে ওই রুটে বাস চালায়। যার ফলে এমনিতেই কলকাতা ও শহরতলির অন্যান্য এলাকায় বাসের সংখ্যা কমে যায়। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, রাজ্য পরিবহণ দফতরের তিনটি নিগম— কলকাতা ট্রাম কোম্পানি (সিটিসি), কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (সিএসটিসি) এবং দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এসবিএসটিসি)-এর প্রায় সাড়ে সাতশো বাস গঙ্গাসাগরের মেলায় যুক্ত হয়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে বেসরকারি প্রচুর বাসও।
কিন্তু পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রতি বছরই গঙ্গাসাগর মেলার জন্য প্রচুর বাস পুলিশ তুলে নেয়। ফলে কলকাতা ও শহরতলি এলাকায় বাস কমে যায়। কিন্তু এ বার চিত্রটা আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। তার দু’টি কারণ রয়েছে বলে দাবি পরিবহণ-কর্তাদের। এক, এমনিতেই বাসের সংখ্যা কমে গিয়েছে। এখন সরকারের ‘নুন আনতে পান্তা ফুরোনো’র অবস্থা। ফলে, কোনও এক দিকে বাস বাড়াতে গেলেই অন্য দিকে বাসের আকাল দেখা দিচ্ছে। দুই, ভাড়া না বাড়ানো এবং পরিবহণমন্ত্রীর হুমকির কারণে বেসরকারি অনেক মালিকই বাস পথে বার করছেন না।
বাসের জ্বালানি ডিজেলের দাম গত দেড় বছরে লিটার-পিছু প্রায় আট টাকা বেড়েছে। কিন্তু তার পরেও গত প্রায় দেড় বছর ধরে বাসের ভাড়া এক বারও বাড়েনি। ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে বাসমালিকেরা ধর্মঘট ডেকেছেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে রাজ্য জুড়ে গত ৬ জানুয়ারি সর্বাত্মক বাস ধর্মঘট হয়েছে। তার পরেও অবশ্য সরকার বাসভাড়া বাড়াতে নারাজ। উপরন্তু অভিযোগ, ধর্মঘটী বাসমালিকদের পাল্টা হুমকি দিয়ে পরিবহণমন্ত্রী জানিয়েছেন, যে সব বাসমালিকেরা ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁদের বাস আটক করে জরিমানা করা হবে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি জায়গায় এ ধরনের বাস আটক করেছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবারই মদনবাবু বলেছেন, যদি আটক করা বাসের মালিকেরা ভবিষ্যতে এই ধরনের কোনও রকম ধর্মঘটে যোগ না দেওয়ার হলফনামা দেন, তা হলে তাঁদের জরিমানা করা হবে না। বুধবার হাইকোর্টে গিয়ে এই মামলার ব্যাপারে গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রী।
বাসমালিকদের দাবি, সরকারের এই কড়া অবস্থানের কারণে অনেক বাসমালিকই বাস বার করছেন না। ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস’-এর নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভাড়া না বাড়ানোয় হতাশ হয়ে অনেকেই আর বাস বার করছেন না। বাস বার করে লোকসান করার চেয়ে বসিয়ে রাখাই ঠিক বলে অনেক মালিক মনে করছেন। তার উপরে মন্ত্রীর হুমকির কারণেও অনেক বাসমালিক বাস বার করছেন না। নতুন করে কেউ পরিবহণ ব্যবসায় আসতেও চাইছেন না। কয়েকটি রুটে নামমাত্র কিছু বাস চলছে।”
বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট-এর নেতা দীপক সরকার বলেন, “এত কিছুর পরেও রাজ্য সরকারের ঘুম ভাঙছে না। এর পরে এ রাজ্যে হয়তো পরিবহণ শিল্পটাই উঠে যাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.