ট্রেনের ধাক্কায় ৩ যুবকের মৃত্যু
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
|
অসতর্ক ভাবে রেললাইন ধরে হাঁটতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল তিন বন্ধুর।
তবে বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুর স্টেশনের কাছে ওই দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে রেল পুলিশের দাবির সঙ্গে মিলছে না প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য। রেল পুলিশ বলছে, কানে মোবাইলের হেডফোন থাকায় পিছন থেকে ধেয়ে আসা ট্রেনের শব্দ শুনতে পাননি বিপ্লব সরকার, অভিজিৎ দাস ওরফে মিষ্টু এবং আশিস সাউ। দুর্ঘটনাস্থল থেকে তিনটি মোবাইলও মিলেছে।
তবে দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হরিশঙ্কর যাদব, রমেশ সাউ, অশোক হেলাদের বক্তব্য, “বেলা ১১টা নাগাদ তিন যুবক গল্প করতে করতে ২০ নম্বর রেল গেটের আগে, রেললাইন ধরে হাঁটছিলেন। ওঁদের কানে মোবাইল বা হেডফোন ছিল না। সেই সময় চার নম্বর লাইন ধরে আসছিল ডাউন কল্যাণী লোকাল। আমরা চিৎকার করে ওঁদের সরতে বলি। কিন্তু গল্পে ব্যস্ত থাকায় ওঁরা সে কথা শুনতেই পাননি। চোখের পলকে ট্রেনটা ধাক্কা দিল। প্রায় ৫০ মিটার দূরে ছিটকে পড়ে তিনটি দেহ।” স্থানীয় লোকজনই রেল পুলিশে খবর দেন।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বিপ্লবের বাড়ি পলতার সরকারপুকুর এলাকায়। শান্তিনগর বয়েজ স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র বিপ্লব ক্যাটারিং-এর কাজও করতেন। তাঁর বাবা বিমল সরকার পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা নেই। দিদি চুমকি সরকার বলেন, “এ দিন সকালে বন্ধু অভিজিতের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ভাই। মঙ্গলবার রাতে অভিজিৎ আমাদের বাড়িতে ছিল। ক্যাটারিং-এর কাজ আছে বলে তাড়াতাড়ি খাবার তৈরি করতে বলেছিল ভাই। কিন্তু আর খেতে আসেনি। বেলা ১২টা নাগাদ খবর আসে, ভাই আর নেই।”
একাদশ শ্রেণির ছাত্র অভিজিতের মামাবাড়ি সরকারপুকুরের কাছেই সেবাগ্রামে। নদিয়ার তাহেরপুরে তাঁর আসল বাড়ি হলেও মামাবাড়িতেই ছোটবেলা কেটেছে। সেই সুবাদেই বিপ্লব এবং আশিসের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব ছিল। এ দিন তাঁর সঙ্গেই ক্যাটারিং-এর কাজে যাওয়ার কথা ছিল অভিজিতের। পেশায় রংমিস্ত্রি আশিসের বাড়ি স্থানীয় লকগেটের কাছে। তাঁর মা সুপ্রিয়া সাউ জানিয়েছেন, আশিস সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ কাজে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরোন। বেলার দিকে আশিসেরই মোবাইল থেকে কেউ এক জন ফোন করে তাঁর মৃত্যুসংবাদ দেয়। |