|
|
|
|
মোবাইলে রেকর্ড হল ঘুষের কথা, ধৃত যুগ্ম বিডিও-সহ ২
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
স্কুলের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের যুগ্ম বিডিও-সহ দুই সরকারি অফিসারকে গ্রেফতার করল রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্লক অফিসে হানা দিয়ে যুগ্ম বিডিও সন্দীপ ধাড়া এবং ব্লক অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ আধিকারিক সুপ্রভাত মুখোপাধ্যায়কে হাতেনাতে ধরা হয় বলে দাবি।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, “ওই দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রশাসনিক তদন্তে আমরা পূর্ণ সহযোগিতা করব। যদি কেউ দোষ করে থাকেন, তবে শাস্তি পাবেন।”
বুধবার কলকাতার বিচার ভবনে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখার বিশেষ আদালতে অভিযুক্তদের হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক সঞ্চিতা সরকার তাঁদের শর্তাধীনে অন্তর্বর্তী জামিন দেন। মামলার তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে অভিযুক্তদের নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মিড-ডে মিল চালানোয় অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে গত ২৭ ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের খোদামবাড়ি ইউনিয়ন হাইস্কুলে তদন্তে যান সন্দীপ ও সুপ্রভাতবাবু-সহ তিন জন। ওই স্কুলের তৃণমূল প্রভাবিত পরিচালন সমিতির সম্পাদক সুবিমল মাজি জানান, মিড-ডে মিলের জন্য বরাদ্দ প্রায় ২১ বস্তা চাল গুদামে জমা ছিল। আধিকারিকেরা স্কুলে এসে সব কিছু খুঁটিয়ে দেখেন। কয়েকদিন পরে সন্দীপবাবু প্রধান শিক্ষক দিলীপ দাসকে নিজের অফিসে ডেকে পাঠান। ৬ জানুয়ারি যুগ্ম বিডিও-র অফিসে যান প্রধান শিক্ষক দিলীপ দাস। তাঁর অভিযোগ, “উনি আমাকে মিড-ডে মিল নিয়ে বেআইনি কাজ করেছি বলে ভয় দেখান। বলেন, আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। এর থেকে রেহাই পেতে হলে দেড় লক্ষ টাকা দিতে হবে। আমি এক সপ্তাহ সময় চাই। স্কুলের সম্পাদককে বিষয়টি জানাই।”
সুবিমলবাবু রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখায় যোগাযোগ করেন। তাঁর দাবি, “ওই দফতরের পরামর্শে গত ১১ জানুয়ারি আমি এবং প্রধান শিক্ষক ফের যুগ্ম বিডিও-র সঙ্গে দেখা করি। ৯০ হাজার টাকায় রফা হয়। ঠিক হয়, দু’দফায় টাকা দেব। এ বার টাকা লেনদেনের পুরো আলোচনাটাই মোবাইলে রেকর্ড করেছিলাম আমরা। রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকদের ওই রেকর্ড দিই। ”
দিলীপবাবু জানান, পুলিশ অফিসারদের নির্দেশমতো ১৪ জানুয়ারি, প্রথম দফার ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে যুগ্ম বিডিও-কে জানানো হয়। অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে তাঁকে একাধিকবার ফোন করে যুগ্ম বিডিও টাকার জন্য তাগাদাও দেন। সুবিমলবাবুর দাবি, “দুর্নীতি দমন শাখার চার সদস্যের দল সাধারণ পোশাকে এসেছিল। তাদের দেওয়া রাসায়নিক ঘুষের টাকায় মিশিয়ে নিয়ে যাই। বেলা ৩টে নাগাদ আমি ও প্রধান শিক্ষক ব্লক অফিসে গিয়ে যুগ্ম বিডিও-র নির্দেশমতো সুপ্রভাতবাবুকে ৪০ হাজার টাকা দিই।”
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এরপরই দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা নন্দীগ্রাম-২ ব্লক অফিসে হানা দিয়ে ওই ৪০ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করেন। দুই অফিসারকে গ্রেফতার করা হয়। বহু চেষ্টা করেও সন্দীপবাবু এবং সুপ্রভাতবাবুর সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। |
|
|
|
|
|