পিকনিকে বাজি ফাটানো নিয়ে দু’পক্ষের বচসা থেকে সংঘর্ষের জেরে প্রাণ গেল এক জনের। জখম অন্তত ছ’জন। মঙ্গলবার দুপুরে ওই অশান্তি হয় শ্রীরামপুরের পিয়ারাপুর পঞ্চায়েতের মিল্কি-বাদামতলা গ্রামে। এক পক্ষ কংগ্রেস এবং অন্য পক্ষ তৃণমূল হওয়ায় রাজনীতির রং লাগে। প্রতাপ খাঁ (২৪) নামে আহত তৃণমূল কর্মী বুধবার মারা যান শ্রীরামপুর ওয়ালশে। গোলমালের ঘটনায় পুলিশ কেষ্ট খাঁ নামে এক কংগ্রেস নেতা-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, এক পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেছে। তিন জনকে ধরা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মিল্কি-বাদামতলা গ্রামের একটি খালের ধারে মঙ্গলবার কিছুটা তফাতে কংগ্রেস ও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা পিকনিক করছিলেন। কংগ্রেস সমর্থকেরা সেই সময়ে বাজি ফাটানোয় প্রতিবাদ করে তৃণমূলের লোকজন। এ নিয়ে দু’পক্ষের বচসা বাধে। কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে দুপুরেই ফিরে যান। ঘণ্টা খানেক বাদে দলে ভারী হয়ে ব্যাট, রড, লাঠি নিয়ে ফিরে এসে খেতে বসা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উপরে তাঁরা হামলা চালান বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের মারামারি বাধে। প্রতাপ-সহ জখম হন ছ’জন। তাঁদের মধ্যে এক কংগ্রেস সমর্থকও রয়েছেন।
জখমদের শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রতাপ তৃণমূলের বুথ কমিটির সদস্য ছিলেন। প্রতাপের দাদা অষ্টম খাঁ পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতা কেষ্ট খাঁ-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে। বুধবারই কেষ্ট এবং কংগ্রেস সমর্থক হিসেবে পরিচিত উত্তম পাকিরা ও সুরজ খাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কেষ্ট এবং উত্তমকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে শ্রীরামপুর আদালত। এ দিনই ময়না-তদন্তের পরে প্রতাপের দেহ নিয়ে মোটরবাইক মিছিল করে গ্রামে ফেরেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা।
পিকনিকে প্রতাপের সঙ্গে অষ্টম ছাড়াও তাঁর দুই ভাই এবং মা-ও ছিলেন। সকলেই জখম হন। অষ্টম বলেন, “ওরা বাজি ফাটাচ্ছিল, বারণ করায় তখনকার মতো মিটেও যায়। কিন্তু ওরা ফিরে এসে কোনও কথা বলার সুযোগ না দিয়েই আমাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ভাইকে ব্যাট দিয়ে মাথার পিছনে মারে।” বৈদ্যবাটি পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান তৃণমূলের পিন্টু মাহাতো বলেন, “কংগ্রেস জেলায় অশান্তি ফেরাতে চাইছে। তৃণমূল ওখানে বিভিন্ন সামাজিক কাজ করছে। মানুষ সাড়া দিচ্ছেন। সেটাই কংগ্রেসের গাত্রদাহের কারণ।” কংগ্রেস ওই ঘটনায় দলীয় কারও জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। জেলা কংগ্রেস নেতা দিলীপ নাথের দাবি, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই গোলমাল হয়। অথচ, সেটা নিয়েই ওরা রাজনীতি শুরু করেছে। আমাদের কেউ ওখানে ছিলেন না।”
|