সিপিএম নেতা তথা আরামবাগ পুরসভার টানা প্রায় তিন দশকের পুরপ্রধান গোপাল কচকে বহিষ্কার করল সিপিএম। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর ভূমিকাতেও অসন্তুষ্ট দল।
এ দিকে, টানা আঠাশ বছর দলের হয়ে পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামালানোর পরে বর্ষীয়ান নেতাকে বহিষ্কার করার দলীয় স্তরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে আরামবাগের সাংসদ অনিল বসুকে বহিষ্কার করায় সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ে বলে এক সময়ে দলের একাংশের সমালোচনা শুনতে হয়েছে নেতৃত্বকে। আবারও আরামবাগের এক প্রথম সারির নেতাকে বহিষ্কার করায় সংগঠন ফের ধাক্কা খাবে কিনা, সেই আশঙ্কায় ভুগছেন স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশ। যদিও যদিও প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি।
সিপিএমের একটি সূত্রের খবর, সম্প্রতি আরামবাগ পুরসভা সিপিএমের হাত ছাড়া হয়। সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের বেশ কিছু কাউন্সিলর নিজেদের দল ছেড়ে তৃণমূলকে সমর্থন করেন। তার জেরেই তিন দশক পর সিপিএম ক্ষমতাচ্যুত হয় আরামবাগ পুরসভা থেকে। কিন্তু ওই ঘটনায় গোপালবাবুর ভূমিকা ভাল ভাবে নেয়নি তাঁর দল। অভিযোগ ওঠে, পুরসভায় ক্ষমতা ধরে রাখতে গোপালবাবু সে ভাবে ভূমিকা পাল করেননি। বিষয়টি নিয়ে দলকেও সময় মতো অবহিতও করেননি। পরোক্ষে তিনি বিষয়টি নিয়ে ‘গা-ছাড়া’ মনোভাব নেন। যার ফলশ্রুতিতেই সেখানে ক্ষমতা হারায় সিপিএম নেতৃত্ব।
এরপরেই বিষয়টি দলীয় স্তরে খোঁজখবর শুরু হয়। গোপালবাবুর সঙ্গে কথাও বলেন দলের নেতারা। সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চোধুরী এ ব্যাপারে বলেন, “দলে শৃঙ্খলা এবং ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় দলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” আরামবাগ পুরসভা সিপিএমের হাতছাড়া হওয়াতেই কী দল ওই প্রবীন নেতার বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্ত নিল? এ প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য জেলা সম্পাদক উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন।
দলের অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, অতীতেও গোপালবাবুর নানা পদক্ষেপে দল বিরক্ত হয়েছে। তাঁকে সর্তকও করা হয় বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু পুরসভা নিয়ে তাঁর সাম্প্রতিক ভূমিকা অতীতের সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে। তাই এ বার দল কড়া অবস্থান নিল। কী বলছেন প্রবীন নেতা গোপালবাবু? সরাসরি উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন তিনিও। শুধু বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে দল ঠিক ঠিক কোনও অভিযোগ এনেছে, সে সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত হয়েই আমি এ ব্যাপারে কিছু বলব।”
|