শহরকে যানজট মুক্ত করতে বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র স্যার বিজয় চন্দ্র রোড বা বিসি রোডে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নিষিদ্ধ হচ্ছে স্কুল বাস। মঙ্গলবার বর্ধমান থানার নব নির্মিত হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও নাগরিক কমিটির মধ্যে অনুষ্ঠিত ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্ধমান থানার আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বিসি রোড দিয়ে আটটি স্কুলের প্রায় ১৫-১৬টি বাস যাতায়াত করে। এর ফলে ওই রাস্তায় প্রায়ই ব্যাপক যানজট হয়। মাঝে মধ্যেই আটকে যায় পুলিশের গাড়ি। তাই আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বিসি রোডে স্কুলবাস চলাচলকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। স্কুলের প্রতিনিধিদের এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছি আমরা।” |
তবে সূত্রের খবর, ওই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বিসি রোডে স্কুল বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত স্কুলের প্রতিনিধিরা সহজে মেনে নিতে চাননি। বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধিদের অনেকে বলেন, বিসি রোডের ফুটপাথ জুড়ে বসে থাকা হকারদের না সরিয়ে পুলিশ স্কুল বাসের যাতাযাত বন্ধ করছে কেন? শহরের অনেক রাস্তায় মোটর বাইক নিয়ে যে যুবকেরা যানজট তৈরি করেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি ওঠে। কয়েকটি স্কুলের প্রতিনিধিরা অভিযোগ করেন, বহিরাগত যুবকেরা পাঁচিল টপকে স্কুলে ঢুকে ছাত্রীদের বিরক্ত করে। এই সব বিষয়ে পুলিশকে সচেতন হতে হবে। অভিযোগ শোনার পরে স্কুলের প্রতিনিধিদের দিলীপবাবু বলেন, “আপনারা অভিযোগগুলি লিখিত আকারে জানান। পুলিশ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।”
তবে শেষ পর্যন্ত বৈঠকে উপস্থিত সবাই প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। বিদ্যার্থী ভবন গার্লসের প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমার স্কুলের কোনও বাসই বিসি রোড ব্যবহার করে না। তবে এ কথা ঠিক, বিসি রোড দিয়ে স্কুলবাসের যাতায়াত বন্ধ করা জরুরি।” মডেল স্কুলের অধ্যক্ষ অচিন্ত্য মণ্ডল বলেছেন, “শহরের মানুষের স্বস্তির কথা ভেবে সকলকে এই সিদ্ধান্তের কথা মানতে হবে। বর্ধমান শহরের ভাল মন্দ আমাদেরই বুঝতে হবে।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানের বিসি রোডে চলাফেরা করাই দায়। ফুটপাথগুলি চলে গিয়েছে হকারদের দখলে। ফলে পথচারীরা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে বাধ্য হন। কিন্তু রাস্তার মাঝে নানা জায়গায় আবর্জনা ফেলবার ভ্যাট, সাইকেল স্ট্যান্ড ইত্যাদি গড়ে ওঠায় রাস্তার আয়তন কমছে। এই রাস্তাতেই প্রতি দিন দু’বার করে যাতায়াত করত বিভিন্ন স্কুলের বাস।
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত শহরের বিজয় তোরণ, শূলীপুকুর, ও রানিসায়রের উত্তর দিকে তিনটি পিকআপ পয়েন্ট চালু করা হচ্ছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই পয়েন্টগুলিতেই ছাত্রছাত্রীদের বাসে তুলতে ও নামাতে হবে। প্রাথমিক ভাবে এই ব্যবস্থা চলবে ১৫ দিন। এর পর স্কুলগুলির তরফে কোনও সমস্যা দেখা দিলে ফের আলোচনায় বসা হবে। |