সব কিছু ঠিক থাকলে কাল, বৃহস্পতিবার দিল্লির এইমস হাসপাতালে দক্ষিণ দিনাজপুরের অতিকায় তরুণী সিদ্দিকা পারভিনের অস্ত্রোপচার হবে। প্রদেশ কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক ওমপ্রকাশ মিশ্র জানিয়েছেন, স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ আশিস সুরির নেতৃত্বে সিদ্দিকার পিটুইটারি গ্রন্থির টিউমার অস্ত্রোপচার হবে। অস্ত্রোপচারে সাহায্য করতে আমেরিকা থেকে দু’জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও দিল্লিতে আসছেন বলে জানা গিয়েছে। জেলা কংগ্রেসের উদ্যোগে ১০ নভেম্বর বিকেলে দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারির শ্রীরামপুর গ্রামের বাড়ি থেকে সিদ্দিকাকে নিয়ে অভিভাবকেরা দিল্লি গিয়েছিলেন। গত ১৩ নভেম্বর প্রদেশ কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক ওমপ্রকাশ সিদ্দিকাকে এমইসে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেন। তাঁর অভিভাবকদের দিল্লির অতিথিশালায় থাকা ও খাওয়ার ব্যাবস্থাও তিনি করেছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। জেলা কংগ্রেস সূত্রে জানানো হয়েছে, গত একবছর ধরে বিভিন্ন সময়ে সিদ্দিকার ভরণপোষণ বাবদ পরিবারের হাতে প্রায় ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, “সিদিক্কার উন্নত চিকিৎসার জন্য দলের প্রদেশ মুখপাত্র ওমপ্রকাশবাবু উদ্যোগী হয়েছিলেন।” |
সিদ্দিকা পরভিন। —ফাইল চিত্র। |
পিটুইটারি গ্রন্থিতে টিউমারের আক্রান্ত দরিদ্র পরিবারের তরুণী সিদ্দিকার শরীর ক্রমশ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে সে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না। সারাদিন শুয়ে বসে তাঁর দিন কাটে। বর্তমানে তাঁর দৈর্ঘ্য ৮ ফুট ছাড়িয়েছে। অসুস্থ সিদ্দিকার চিকিৎসার সমস্ত ভার রাজ্য সরকার নেবে বলে গতবছরের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন। বালুরঘাট হাসপাতাল থেকে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের উদ্যোগে সিদ্দিকাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসাপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয় বলে পরিবারের পক্ষে বলা হয়েছিল। এসএসকেএমে সাধারণ রোগীদের শয্যায় রাখা হয় সিদ্দিকাকে। ৮ ফুট লম্বা সিদ্দিকার পা ভাঁজ করে কষ্টের মধ্যে থাকতে হচ্ছিল। হাসপাতাল থেকে চাহিদা মতো খাবারও সিদ্দিকাকে দেওয়া হত না বলে পরিবারের তরফে অভিযোগ করে তাঁর বাবা আফাজুদ্দিন অসুস্থ মেয়েকে কলকাতা থেকে বংশীহারির বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। গত বছরের শেষে প্রদেশ কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক ওমপ্রকাশ মিশ্র এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায়ের নেতৃত্বে কংগ্রেসের একটি দল সিদ্দিকার বাড়িতে গিয়ে তার উন্নত চিকিৎসা এবং ভরণপোণের দায়িত্ব গ্রহণের আশ্বাস দেয়।
এ দিন দিল্লি থেকে সিদ্দিকার বাবা বলেন, “মেয়েটাকে চোখের সামনে মরতে দেখা ছাড়া এক সময়ে কোনও উপায় ছিল না। ওমপ্রকাশবাবুরা আন্তরিকতা নিয়ে পাশে দাঁড়ানোয় আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।”
চিকিৎসার বিষয়ে প্রথমে উদ্যোগ নিয়েও পরে সরে আসার অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেছেন, “এসএসকেএমে গুরুত্ব দিয়েই সিদ্দিকার চিকিৎসা চলছিল। অস্ত্রোপচারের দিনও ঠিক হয়েছিল। কিন্তু পরিবারই রাজি হয়নি। ফলে আমাদের তরফে আর কিছুই করার ছিল না।” সিদ্দিকার সঙ্গে তার বাবা ও মামা দিল্লিতে রয়েছেন।
এ দিন সিদ্দিকার মামা মোক্তারুল ইসলাম টেলিফোনে বলেন, “প্রথমে ১৫ জানুয়ারি অস্ত্রোপচারের দিন ঠিক হয়। কিন্তু আমেরিকা থেকে দু’জন চিকিৎসক আসবে বলে পরে এক দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
|