অ্যাসিড বেচাকেনা নিয়ে কড়া পুলিশ, নজরে স্বর্ণকারেরা
স্বরূপনগরের বাসিন্দা গীতা গাইন অ্যাসিড আক্রমণে গুরুতর আহত হওয়ার পর অ্যাসিড বিক্রির ক্ষেত্রে কড়াকড়ি শুরু করছে পুলিশ। পুলিশের কাছে জেরায় ধৃত অতুল স্বীকার করেছে, সে স্থানীয় এক সোনার দোকানের কর্মচারির কাছ থেকে ওই অ্যাসিড কিনেছিল। এর সূত্র ধরেই পুলিশ বসিরহাটের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতিকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছে। বেআইনি ভাবে কেউ যাতে অ্যাসিড কিনে ব্যবহার না করতে পারে সে দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
কাহারপাড়ায় গীতাদেবীর বাড়িতে ও সে দিন তাঁর সঙ্গে থাকা আরও চার মহিলার বাড়িতে পুলিশ পাহারা বসেছে। মঙ্গলবার গীতাদেবীর মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অসীমা বলে, “এখন পুলিশকাকুরা পাহারা দিচ্ছে। চাল, সব্জি, কেরোসিন কিনে দিচ্ছে। আগে যখন জানিয়েছিলাম তখন সজাগ হলে এমনটা ঘটত না।” ঘটনার দিন গীতাদেবীর সঙ্গে থাকায় অ্যাসিডে অল্পবিস্তর জখম হওয়া রীতা মণ্ডল, ভারতী মণ্ডল ও সুধা মণ্ডল বলেন, “রাতে ভয়ে ঘুমোতে পারছি না।”
অ্যাসিড আক্রমণ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর রাজ্য কড়া পদক্ষেপ করে। এক নির্দেশে বলা হয়, ১৮ বছরের নীচে কাউকে অ্যাসিড বিক্রি করা যাবে না। অ্যাসিড ক্রেতার ঠিকানা, ফোন নম্বর লিখে রাখতে হবে। যারা অ্যাসিড বিক্রি করে, সেই সব দোকানে গিয়ে পুলিশ অ্যাসিডের স্টক ও বিক্রির পরিমাণ পরীক্ষা করবে। জেলাগুলিতে এসডিপিও, এসডিও এই নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন। কিন্তু স্বরূপনগরের ঘটনায় সেই নজরদারি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নজরদারি ছিলই। তদন্তে দেখা গিয়েছে অনেকেই বেআইনি ভাবে অ্যাসিড বিক্রি করেন। সোনার দোকানের ক্ষেত্রেই এই অনিয়ম বেশি। বেআইনি অ্যাসিড কেনা-বেচা বন্ধ করতে মাইক প্রচার শুরু করা হয়েছে। স্বর্ণ সমিতিকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।”
তবে গাইঘাটা, কামদুনি, মধ্যমগ্রাম ও হাবরা কাণ্ডের মতো স্বরূপনগরেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের দাবি, জেরায় অতুল জানায়, সে গীতাদেবীকে মারতেই অ্যাসিড কিনেছিল। ঘটনার দিন সকালে স্থানীয় এক সোনার দোকানের কারিগরের কাছ থেকে সে ১৫ টাকায় দেড়শো গ্রাম অ্যাসিড কেনে। অ্যাসিড কেনাবেচার তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, মূলত কলকাতা ও মধ্যমগ্রামের কারখানাগুলি থেকে অ্যাসিড কিনে ব্যবসায়ীরা বসিরহাটের বাজারগুলিতে বিক্রি করে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, বসিরহাটে ৬ হাজারের উপর সোনার দোকান রয়েছে। গয়না পালিশের দোকান রয়েছে দেড়শোর উপর। এ ছাড়াও সোনা গলানোর কারাখানা রয়েছে তিনটি। সব ক্ষেত্রেই অ্যাসিডের বহুল ব্যবহার রয়েছে। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সোনার দোকানগুলিতে অ্যাসিড কেনা-বেচা হয় কোনও রসিদ ছাড়াই। স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অশোক ভদ্র বলেন, “আমাদের যেমন ট্রেড, ফায়ার ও পলিউশন লাইসেন্স রয়েছে, তেমনই যাঁরা অ্যাসিড বিক্রি করতে আসেন তাঁদেরও লাইসেন্স থাকার কথা।”

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.