মধ্যরাতে অ্যাসিড-দগ্ধকে পিজিতে সরাল পুলিশ
বারবার আর্জি জানিয়েও মধ্যমগ্রামে গণধর্ষণের পরে অগ্নিদগ্ধ কিশোরীকে আরজিকর থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি তার পরিবারের। বাদুড়িয়ায় অ্যাসিডে দগ্ধ মহিলাকে সেই আরজিকর থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে সরানো গেল পুলিশের কয়েক ঘণ্টার তৎপরতায়।
কামদুনির পর থেকে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়েই এত দিন প্রশ্ন উঠেছিল। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই দায়িত্ব নেওয়ার বদলে পিঠ বাঁচাতে ব্যস্ত থেকেছে পুলিশ-প্রশাসন। রবিবার রাতে পুলিশেরই অন্য রকম চেহারা দেখলেন মহিলার পরিবারের লোকজন।
ধৃত অতুল মণ্ডল।
রবিবার বিকালে মহিলার মাথায় অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ায় অতুল মণ্ডল নামে এক জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। গুরুতর জখম অবস্থায় মহিলাকে ভর্তি করানো হয়েছিল কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রাত ১টা নাগাদ পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়, তাঁর যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না। ভর্তির পর থেকে কার্যত একই অবস্থায় পড়ে থেকে তিনি যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে চলে যান জেলা পুলিশের লোকজন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের দেখা না পেয়ে তাঁরা কর্মীদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, সেখানে পোড়া রোগীর চিকিৎসার যথাযথ পরিকাঠামো নেই। রাত ১টা নাগাদ হাসপাতালে যান পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী। অবস্থা বুঝে মহিলাকে তড়িঘড়ি এসএসকেএম হাসপাতালে সরানোর জন্য তদ্বির শুরু করে পুলিশ। রাতেই খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তার শরণাপন্ন হন পুলিশ সুপার। সোমবার খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “পুলিশ সুপারের ফোন পেয়ে আমরা সঙ্গে-সঙ্গে রোগিণীকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করি। সকালে প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতালের সাধারণ ও পরে বার্ন ওয়ার্ডে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শরীরের অনেকটা অংশ পুড়ে গেলেও মহিলার অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
পুলিশের দাবি: রবিবার গভীর রাতে অশোকনগরের রাজীবপুর থেকে গ্রেফতারের পরে জেরায় অতুল জানিয়েছে, বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই সে মহিলাকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল। বাড়ি থেকেই অ্যাসিড ভর্তি বোতল সঙ্গে নিয়ে বেরিয়েছিল সে। রবিবার বিকেলে বাদুড়িয়ায় ইছামতীর পারে খাসপুরে কাঠ কুড়োতে যাওয়ার সময়ে মহিলাকে সে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। রাজি না হওয়ায় সে তাঁর মাথায় অ্যাসিড ঢেলে দেয়। তাঁর সঙ্গী আরও তিন মহিলা জখম হন। তাঁরা স্থানীয় শাঁড়াপুল হাসপাতালে ভর্তি। রাতে মহিলার স্বামী থানায় অভিযোগ করেন। এ দিন বসিরহাট এসিজেএম আদালতে তোলা হলে অতুলকে পাঁচ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। এ দিন সকালে এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অতুলের বাড়ি স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়ার খালপাড়ে কাহারপাড়ায়। মনসা ভাসান দলে গান গাইতে গিয়েই তার সঙ্গে মহিলার সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল। মহিলাকে সে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তিনি ও তাঁর স্বামী অনেক বার অতুলকে নিরস্ত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিবাহিত অতুল নাছোড় ছিল। মহিলার মেয়ে বলেন, “বারবার বারণ করা সত্ত্বেও নানা ছুতোয় অতুল মাকে ডাকত। না গেলে খুনের হুমকি দিত।” তার স্ত্রী প্রতিবাদ করলে অতুল তাঁকেও মারধর করত বলে জেরায় স্বীকার করেছে। এ নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েক বার সালিশি বসলেও লাভ হয়নি।
রবিবার মরিয়া হয়ে অতুল এলাকার একটি দোকানের কর্মচারীর থেকে এক বোতল নাইট্রিক অ্যাসিড কেনে। পুলিশ জানিয়েছে, কার কাছ থেকে সে নাইট্রিক অ্যাসিড পেল, তার খোঁজ করা হচ্ছে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.