ছাউনি হাউসফুল, পুণ্যির বাজারে ভাড়ায় প্লাস্টিকও
কাল থেকেই মেজাজ খারাপ বসিদ চাচার। যা-ও একটা ভাড়া মিলেছিল, ফসকে গেল। বিড়বিড় করে গালমন্দ করছিলেন নিজের ভাগ্যকেই।
হারান দাস অবশ্য বেশ খুশি। রাত তিনটের পর থেকে তাঁর বাজার জমে গিয়েছে। একের পর এক পুণ্যার্থী আসছেন তাঁর কাছে।
রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলাপ্রাঙ্গণে তেমন পুণ্যার্থীর ভিড় ছিল না। কিন্তু রাত যত বেড়েছে কচুবেড়িয়া থেকে সাগরে আসা পুণ্যার্থীর সংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছে। আর তাতেই বিপত্তি। রাত বাড়ার সঙ্গেই সরকারি ছাউনি ‘হাউসফুল’।
কেশচর্চা। সোমবার গঙ্গাসাগরে স্বাতী চক্রবর্তীর তোলা ছবি।
তা হলে পুণ্যার্থীরা যাবেন কোথায়? তাঁদের জন্যই মাথা গোঁজার ঠাঁই নিয়ে হাজির মহম্মদ বসিদ, হারান দাসেরা। প্রতি বছরই থাকে এই ব্যবস্থা। যদিও ব্যাপারটা বেআইনি বলেই জানান দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক শান্তনু বসু। তিনি বলেন, “বিষয়টি দেখতে হবে।” বসিদ-হারানেরা অবশ্য মনে করেন, পুণ্যার্থীদের মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করে দেওয়াও একটা পুণ্যির কাজ। ৫০ থেকে ১০০ টাকার বিনিময়ে মেলে থাকার ব্যবস্থা। সোমবার সকালে বসিদের মেজাজ খারাপ সেই ভাড়ার টাকা না মেলায়। উত্তরপ্রদেশ থেকে শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে এসেছিলেন এক যুবক। দেড় হাজার টাকায় বসিদের দেওয়া পলিথিনের ছাউনির নীচে রবিবার রাতে আশ্রয় নেন। কিন্তু সোমবার সকালে তাঁদের দেখা পাননি বসিদ।
বসিদের কথায়, “মাসে চারশো টাকা বেকার ভাতা পাই। মেলার ক’দিনই যা একটু বেশি উপার্জন হয়। ওরা দু’দিনের জন্য দেড় হাজার টাকা দেবে বলল। ভোর হতেই হাওয়া। এই নাকি ভদ্রলোক!”
হারানও স্থানীয় বাসিন্দা। বছরের অন্যান্য সময়ে ডাব বিক্রি করে তাঁর সংসার চলে। রবিবার রাত পর্যন্ত তাঁর ছাউনিতে লোক না আসায় তাঁরও মেজাজ তিরিক্ষি ছিল। কিন্তু সোমবার সকালে অন্য ছবি। ছ’টি ছাউনি বানিয়েছেন। সব ক’টিতেই ছ’সাত জন করে পুণ্যার্থী ঠাঁই নিয়েছেন।
এ দিন মেলায় আসেন স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি জি এম পি রেড্ডি। সন্ধ্যা পর্যন্ত সাড়ে চার লক্ষ পুণ্যার্থী সাগরে এসেছেন বলে দাবি পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। তিনি জানান, নিরাপত্তার কারণে হেলিকপ্টার পরিষেবা মেলার দিনগুলিতে স্থগিত রাখা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগরে এ দিন এক ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে স্নান সেরে উঠে হরিয়ানার ফতেয়াবাদের বাসিন্দা নরসিরাম (৪৬) নামে ওই ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মেলার অ্যাম্বুল্যান্সে করে সাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের অনুমান, হৃদ্রোগে তিনি মারা যান।

সংক্রান্তিতে শীতের আশা
পৌষসংক্রান্তিতে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে শীত। তবে তার ব্যাটে দাপটের ইঙ্গিত দেখছে না হাওয়া অফিস! সোমবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি বেশি। আজ, মঙ্গলবার মকরসংক্রান্তিতে সেটা ১৪ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকবে বলে আবহবিদদের পূর্বাভাস। বাঁকুড়া-বীরভূমে রাতের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রিতে পৌঁছতে পারে। দক্ষিণ ভারতের পুবালি হাওয়া ঢুকে পড়েছে বাংলায়। হাওয়া অফিস জানায়, পুবালি হাওয়ার জোর কিছুটা কমলেও উত্তুরে হাওয়া এখনও দুর্বল। উত্তর ভারতের ঠান্ডা হাওয়া তেমন আসছে না। ফলে মাঘের শুরুতেও কাঁপুনি দেওয়া শীত মালুম হবে না বলেই মনে করছে তারা।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.