একের পর এক কর্মী-নেতা দল ছাড়ায় আপাতত কোণঠাসা রাজ্য কংগ্রেস। অথচ একলা লড়ে লোকসভা ভোটে নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি পরীক্ষা করতে চায় তারা। সেই লক্ষ্য মাথায় রেখেই লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যে জনসমর্থনের ভিত্তি প্রসারিত করতে সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে ঝাঁপাতে চাইছে কংগ্রেস।
পথে-ময়দানে রাজনৈতিক সমাবেশ, মিছিলে আসা দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বাইরেও আম জনতা, বিশেষত তরুণদের মধ্যে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেসের বার্তা পৌঁছে দিতে চান দলের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। তার জন্য গড়া হয়েছে আলাদা শাখা ‘কংগ্রেস সাইবার আর্মি’। রাহুলের নির্দেশিত পথে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রণকৌশল ঠিক করতে সোমবার এ রাজ্যে সাইবার আর্মি-র প্রথম কর্মশালা হল প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি বা রাজ্য সরকারের নেতিবাচক ভূমিকার সমালোচনায় কী ভাবে কংগ্রেস নিজের বক্তব্য তুলে ধরবে, তা হাতে-কলমে বোঝালেন এআইসিসি-র সোশ্যাল মিডিয়ার ইন-চার্জ রোহন গুপ্ত এবং প্রশিক্ষক অসীম বড়াল। দু’জনই গত দু’বছর ধরে রাহুলের নির্দেশে নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কংগ্রেসের জনসমর্থন বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করছেন। মোদীর বিজেপি-র মতো এ রাজ্যে তৃণমূল এখন সোস্যাল নেটওয়ার্কে খুবই সক্রিয়। একই কৌশলে তৃণমূল-বিরোধী জনসমর্থন বাড়াতে এ বার এ রাজ্যের জেলায় জেলায় প্রশিক্ষণ শিবির করবে এআইসিসি।
দলের এই শাখার কর্মীদের কেউ কেউ কংগ্রেসের মতাদর্শে উৎসাহী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কেউ চাকরিজীবী। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে অভ্যস্ত। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কর্মীদের নিয়ে কর্মশালার পরে এ দিন রোহন বলেন, “এই কর্মীরা মমতা-সরকারের ঘোষিত বিভিন্ন তথ্য ও দাবির সত্যতা যাচাই করবে পাল্টা তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে। ছবির কোলাজ, ভিডিও-র মাধ্যমে তুলে ধরবে সরকারের ব্যর্থতা। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পও প্রচার করবে।” এ ভাবেই রাজ্য বা জেলার স্থানীয় কোনও ঘটনা সম্পর্কে রাজ্য সরকারের ভূমিকা এবং তা নিয়ে কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া নিমেষে ঘরে বসে বা পথ চলতে চলতেই পেয়ে যাবেন রাজনীতির বৃত্তের বাইরে থাকা আম-ভোটার। এ রাজ্যে কংগ্রেসের প্রচার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের বিষয়ে কেন্দ্রের বা রাজ্য কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বক্তব্যও সোশ্যাল মিডিয়া মারফত ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।” জানানো হবে জেলায় বা কলকাতার আনাচ-কানাচে কংগ্রেসের দৈনিক কর্মসূচিও। সে সভা-সমাবেশের বক্তব্য আবার ছবি-সহ তুলে ধরা হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কংগ্রেসের দাবি, এ রাজ্যে ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২০-২২টিতে বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারে সোশ্যাল মিডিয়া। সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই নেট-দুনিয়ায় সক্রিয় হতে চাইছে কংগ্রেস। |