শিন্দের বিরুদ্ধে তোপ প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিবের

১৩ জানুয়ারি
ন্ত্রীর সঙ্গে সচিবের বিশেষ বনিবনা হচ্ছে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অন্দরমহলে কান পাতলেই এক সময় এ কথা শোনা যেত। সচিব নাকি মন্ত্রীকে বিশেষ পাত্তা দেন না। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতামত নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না। আবার সচিবের কাজেও সন্তুষ্ট নন মন্ত্রী।
এ বার সেই প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব রাজকুমার সিংহের দাবি, টুজি কাণ্ডে অভিযুক্ত এক ব্যবসায়ীকে জেরা করায় বাধা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে। সেই ব্যবসায়ী দাউদ ইব্রাহিম-ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ।
স্বরাষ্ট্রসচিবের পদ থেকে অবসর নিয়ে রাজকুমার যোগ দেন বিজেপিতে। তার পর থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিন্দের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগে চলেছেন তিনি। তাঁর দাবি, দিল্লি পুলিশের তদন্ত ও নিয়োগ-বদলিতেও নাক গলাতেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যার ধাক্কায় শিন্দে পড়েছেন মহা সমস্যায়। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে যে তাঁর বনিবনা ছিল না, তা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর আক্রমণের কী জবাব দেবেন, তা খুঁজে পাচ্ছেন না।
রাজকুমারের অভিযোগ, টু-জি স্পেকট্রাম দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত এক ব্যবসায়ীকে জেরা করতে দিল্লি পুলিশকে বাধা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিন্দে। ওই ব্যবসায়ীর নাম না করলেও রাজকুমার বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি শাহিদ বালওয়ার কথা বলছেন। শিন্দের রাজ্য মহারাষ্ট্রেরই বাসিন্দা বালওয়া দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ বলেও অভিযোগ। রাজকুমার জানান, দিল্লি পুলিশ যাতে বালওয়াকে জেরা না করে, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দফতর থেকে নির্দেশ গিয়েছিল।
আরও একটি অভিযোগ তুলেছেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব। তাঁর দাবি, দিল্লি পুলিশের একেবারে ইনস্পেক্টর থেকে উঁচু পদের অফিসারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে নাক গলাতেন শিন্দে। কাকে কোথায় নিয়োগ করা হবে, কে কোথায় বদলি হবেন, তার নির্দেশ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিরকুট পাঠাতেন। রাজকুমার বলেন, “ওঁর বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি ছিল। তা জানিয়েছিলাম।”
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের পদ থেকে অবসর নিয়েই রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার নমুনা সাম্প্রতিক অতীতে নেই। কংগ্রেসের তরফে বলা হচ্ছে, রাজকুমারের অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, শিন্দের বিরুদ্ধে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিবের অভিযোগ গুরুতর। অভিযোগের জবাব শিন্দে দিচ্ছেন না। কিন্তু তাঁর সঙ্গে সচিবের বনিবনা যে ছিল না তা স্বীকার করে নিয়েছেন। শিন্দে জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রসচিবের কাজে তিনি অখুশি ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে ক্যাবিনেট সচিবের কাছেও অভিযোগ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন রাজকুমার। শিন্দে বলেন, “প্রশাসন ভাল করে চালাতে হয়। কারও কাজে খামতি থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি বাধ্য।” রাজকুমারের বক্তব্য, “আমার সঙ্গে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমেরও মতপার্থক্য ছিল। কিন্তু তিনি আমার কাজে অখুশি ছিলেন না।”
শিন্দের ঘনিষ্ঠ শিবির থেকে বলা হচ্ছে, দু’টি ঘটনায় প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব ও দিল্লি পুলিশের তৎকালীন কমিশনার নীরজ কুমারের বিরুদ্ধে চটেছিলেন শিন্দে। এক, ২০১২-র ডিসেম্বরে নির্ভয়া কাণ্ডের পর পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবি উঠলে স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবে তাঁর প্রশংসা করেছিলেন রাজকুমার। এরপর এপ্রিলে জাঠ বিক্ষোভকারীরা দিল্লিতে শিন্দের বাসভবনে ঢুকে পড়েন। শিন্দে তখন বিদেশে ছিলেন। এর পরেই দিল্লিতে ফিরে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশ কমিশনারকে ডেকে কড়া ধমক দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
শিন্দে জানিয়েছেন, তিনি সচিব ও পুলিশ কমিশনারকে সত্যিই ধমক দিয়েছিলেন। কিন্তু দিল্লি পুলিশের তদন্ত ও নিয়োগে নাক গলানো নিয়ে অভিযোগ এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। রাজকুমার এরপর আর কী হাঁড়ি ভাঙেন, তা নিয়েই এখন জল্পনা চলছে নর্থ ব্লকে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.