কেএলওদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরাতে রাজ্য সরকার আলোচনায় বসলে, তৃণমূল কংগ্রেস কেন মধ্যস্থতার ভূমিকা নেবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। রবিবার জলপাইগুড়িতে বিমানবাবু বলেন, “কেএলও জঙ্গিদের সঙ্গে সরকারের আলোচনার জন্য তৃণমূল কেন মধ্যস্থতার ভূমিকা নেবে? উত্তর ভারতেও অনেক ঘটনা ঘটেছে সেখানে কোথাও কংগ্রেস অথবা বিজেপি মধ্যস্থতার দায়িত্ব নেয়নি। ওই কাজ করেন সাংবাদিক, শিল্পী আর লেখকরা। সেটা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব নিতে হবে। দল দায়িত্ব নিলে অনেক অস্বস্তিকর প্রশ্ন উঠবে।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলী ও জেলা কমিটির সভায় যোগ দিতে এ দিন জলপাইগুড়ি আসেন বিমানবাবু। সেখানেই কেএলও জঙ্গিদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের আলোচনার ব্যবস্থা করার জন্য তৃণমূল নেতৃত্বের দায়িত্ব গ্রহনের প্রস্তাবের কটাক্ষ করেন তিনি। গত শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছিলেন, কেএলও জঙ্গিরা যদি সন্ত্রাসের পথ ছেড়ে উন্নয়নের কাজে সামিল হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইলে তাঁরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসানোর ব্যবস্থা করবেন। সে প্রসঙ্গেই বিমানবাবুর প্রশ্ন, “চন্দন দস্যু বীরাপ্পানের সঙ্গে রাজ্য সরকারের আলোচনার ব্যবস্থা করাতে কোনও রাজনৈতিক দল করেছিল?” এর পরেই তিনি দাবি করেন, বামফ্রন্ট সরকারে থাকার সময় নিয়ম মেনেই যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। তিনি জানান, শুধুমাত্র পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে জঙ্গি তপরতা বন্ধ করা সম্ভব নয়। সমান ভাবে রাজনৈতিক প্রচারও জরুরি। কেপিপির সঙ্গে তৃণমূলের যোগসাজশের অভিযোগ তুলে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেন, “দুর্ভাগ্যের বিষয় কোচবিহারের গ্রেটার, কেপিপি-র সঙ্গে তৃণমূলের মাখামাখি অনেক দিনের। ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় স্লোগান দেওয়া হয়েছিল দক্ষিণে মমতা উত্তরে কামতা। এখনও ওঁদের মধ্যে সেই বোঝাপড়া রয়েছে।” দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ সোমবার পর্যন্ত দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলী ও জেলা কমিটির বৈঠক চলবে। এ দিন সকালে কোচবিহারেও দলের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে সাধারণ বাসিন্দাদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে এলাকায় প্রচারে নামার নির্দেশ দিয়েছেন। সকালে জেলা সিপিএম দফতরে দলের জেলা কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে জেলার লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ১৩টি জোনাল কমিটির রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই দলীয় নেতৃত্বকে ভোটারদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার নির্দেশ দেন তিনি। শনিবার কোচবিহার রাস মেলা ময়দানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সঙ্গে বামেদের ডাকা এক সভায় যোগ দিতে জেলায় আসেন বিমানবাবু। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “জেলা কমিটি বৈঠকে বিমানবাবুর উপস্থিতিতে জেলার সামগ্রিক রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।” |