বাংলার পুনর্জন্ম
মুম্বইকে হারিয়ে ওঠা মহারাষ্ট্র চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে লক্ষ্মীদের
য়াংখেড়ের ড্রেসিংরুমে জাহির খান। তবু গ্যালারি থেকে আওয়াজ উঠছে, “বিজয়...বিজয়... কেদার...কেদার”। সবাই ডেকে ডেকে সই নিচ্ছে এটাই এ বারের রঞ্জি ট্রফিতে তাঁদের কাছে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে স্মরণীয় ছবি।
তবে সেই ছবিটাও মুছে ফেলতে চান তাঁরা। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে প্রায় অবিশ্বাস্য জয় পাওয়ার পর মহারাষ্ট্রের ক্রিকেটারদের পাখির চোখ এখন একটাই। রঞ্জি ট্রফি। আর তার জন্য ‘অপারেশন সেমিফাইনাল’-এর মানসিক প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। মহারাষ্ট্রের কোচ সুরেন্দ্র ভাবের চ্যালেঞ্জ, “এর পর সেমিফাইনালে যাদের সঙ্গেই দেখা হোক না কেন, আর পরোয়া নেই। আমরা যে কোনও দলকে হারাতে পারি।”
ভাবে শনিবার যখন কথাটা বলছিলেন, সেমিফাইনালে বাংলা না রেল কাকে পাবেন, ঠিক ছিল না। ২৪ ঘণ্টা বাদে তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী ঠিক হয়ে যাওয়ার পর ফোনে ধরা গেল মুম্বই-বধের প্রধান নায়ককে। সেমিফাইনালে বাংলাকে খেলতে হবে শুনে পুণে থেকে কেদার যাদব বলছিলেন, “যে কোনও দলের বিরুদ্ধে খেলতে আমরা প্রস্তুত। জাহির খানকেই তো সামলে দিলাম। মনে হয় না বাংলার বোলারদের খেলতে কোনও সমস্যা হবে বলে।”

থেমে গেল রেল। শিকারি সৌরভ সরকার।
মহারাষ্ট্রের ব্যাটিং লাইনে ফর্মে আছেন অনেকেই। তবে ওয়াংখেড়েতে জাহির খান-ইকবাল আবদুল্লাহদের সামলে অবিচ্ছিন্ন ২১৫ রানের জুটি গড়েছেন যে দু’জন, মহারাষ্ট্র স্বপ্ন দেখছে তাঁদের নিয়েই। এঁদের এক জন অপরাজিত ১২০ রান করা কেদার যাদব হলে, অন্য জন বিজয় জোল। যিনি শারজায় সদ্যসমাপ্ত অনূর্ধ্ব ১৯ এশিয়া কাপে সেঞ্চুরি করে ভারতকে জিতিয়েছেন। দলকে সেমিফাইনালে তুলে বিজয় বলছিলেন, “শারজার ইনিংসটা অবশ্যই আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। আমার একটা খুব সহজ ফর্মুলা আছে ব্যাট করার। যেটা কোচ শিখিয়েছে। বলের মান অনুযায়ী খেলো। মারার বল হলে মারো। ডিফেন্স করার হলে করো। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে সে ভাবেই ব্যাট করেছি। সেমিফাইনালেও সে রকম ভাবেই খেলব।” মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ৯ রানের জন্য সেঞ্চুরি পেলেন না। আফসোস হচ্ছে না? জোলের পরের কথায় কিন্তু আফসোস নয়, আত্মবিশ্বাস ঠিকরে বেরোচ্ছে, “দলকে জিতিয়েছি, সেটাই বড় কথা। সেঞ্চুরিটা নয়। সেঞ্চুরিটা না হয় পরের ম্যাচে করা যাবে।”
এ বারের রঞ্জি মরসুমে হাজারের উপর রান হয়ে গিয়েছে কেদার যাদবের। তাঁর এই সাফল্যের পিছনে যে আইপিএলের অভিজ্ঞতা, বলছিলেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। “আইপিএল-ই শিখিয়েছে দুনিয়ার যে কোনও বিধ্বংসী বোলারের বিরুদ্ধে কী করে খেলতে হয়। সেরাদের বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতাটা এখন ঘরোয়া ক্রিকেটে কাজে দিচ্ছে।”

শেষ উইকেট পড়তে বাংলার গর্জন। রবিবার।
গ্রুপ ‘সি’ থেকে উঠে এসে মুম্বইয়ের মতো হেভিওয়েট টিমকে হারিয়ে সেমিফাইনালে। বাংলার মতোই এ বারে মহারাষ্ট্রের উত্থানটাও রূপকথার মতো। সেমিফাইনালের লড়াই শুরু ১৮ জানুয়ারি। টিম গতকালই ফিরে গিয়েছে পুণে। সেখানে দু’দিন প্র্যাকটিস করে চলে যাবে ইন্দৌর। পুণে থেকে ফোনে ভাবে বলছিলেন, “এত দিন বাংলা দল নিয়ে তেমন খোঁজ খবর নিইনি। এ বার শুরু করব। তবে সেমিফাইনালে যখন উঠেছে, তখন নিশ্চয়ই ভাল দল। মুম্বইকে যতটা গুরুত্ব দিয়ে খেলেছি, বাংলাও আমাদের কাছে ততটাই গুরুত্ব পাবে।”
উইকেট নিয়েও আশাবাদী শোনাচ্ছে ভাবেকে। মহারাষ্ট্র কোচ বলছিলেন, “ওখানকার উইকেটও শুনছি ওয়াংখেড়ের মতো স্পোর্টিং হবে। এমন উইকেটে যারা ভাল খেলবে, তারাই জিতবে। আর ভাল খেলার জন্য আমরা প্রস্তুত।”

শেষ চারের দুই কাঁটা
কেদার যাদব
ম্যাচ ৯ রান ১০৩৪ সর্বোচ্চ ২০৪ গড় ৯৪ সেঞ্চুরি ৫ হাফসেঞ্চুরি ২
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে অপরাজিত ১২০
“জাহির খানকেই তো সামলে দিলাম। মনে হয় না বাংলার বোলারদের খেলতে কোনও সমস্যা হবে বলে।”
বিজয় জোল
ম্যাচ ৭ রান ৫১৬ সর্বোচ্চ ২০০ ন.আ. গড় ৫৭.৩৩ সেঞ্চুরি ১ হাফসেঞ্চুরি ২
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে অপরাজিত ৯১
“মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দলকে জিতিয়েছি, সেটাই বড় কথা। সেঞ্চুরিটা নয়। সেঞ্চুরিটা না হয় পরের ম্যাচে করা যাবে।”

ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.