ইটাহারের কলেজে টুকলিকান্ডে অভিযুক্ত প্রথম বর্ষের ছাত্রী তথা তৃণমূল নেতার স্ত্রীর পরীক্ষার ফলকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তি ছড়াল শনিবার। এদিন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পাস কোর্স ও অনার্সের ফল প্রকাশ হতে দেখা যায়, তালিকায় পম্পাদেবী ‘পাশ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। টুকলির অভিযোগে একটি পরীক্ষা বাতিল হওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে তা সম্ভব, এ নিয়ে হইচই শুরু হলে তালিকাটি খুলে নেয় কলেজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো দ্বিতীয় তালিকায় পম্পাদেবী অনুত্তীর্ণ বলে লেখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এই ত্রুটিকে প্রযুক্তিগত গোলমাল বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু কেবল ওই একটি ছাত্রীর ক্ষেত্রেই কেন প্রযুক্তির গোলযোগ হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
ডক্টর মেঘনাদ সাহা কলেজের পাস কোর্সের ছাত্রী পম্পা পাল জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য গৌতম পালের স্ত্রী। গত বছরের ২৭ অগস্ট পম্পাদেবী সমাজবিদ্যার প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় টুকলি করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই টুকলি আটকাতে গিয়ে পম্পাদেবী তাঁর স্বামী গৌতমবাবু, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা বাবুসোনা মোহান্ত-সহ তাঁদের কয়েকজন অনুগামী অধ্যক্ষা স্বপ্নাদেবী, বাংলার শিক্ষক সুদেবকুমার রায়, রসায়নের শিক্ষিকা সেঁজুতি দে ও শিক্ষাকর্মী জাফর সাদেককে মারেন বলে অভিযোগ। অধ্যক্ষা-সহ তিন শিক্ষক শিক্ষিকা ও ওই শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধেও পম্পাদেবীকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে।
শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের অধীনে থাকা সমস্ত কলেজে ফলাফলের একটি তালিকা পাঠান। ডক্টর মেঘনাদ সাহা কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই তালিকা টাঙানো মাত্রই পম্পাদেবীর ফলাফলকে ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়ায়। কলেজ সূত্রের খবর, ফলাফলের তালিকায় গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রথমে পম্পাদেবী পাশ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। পড়ুয়াদের মধ্যে হইচই শুরু হয়। কারণ, টুকলির অভিযোগে পম্পা দেবীর একটি পরীক্ষা বাতিল হয়েছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই তালিকাটি খুলে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তড়িঘড়ি একটি নতুন ফলাফলের তালিকা পাঠানো হয়। সেই তালিকায় অবশ্য পম্পাদেবী অনুত্তীর্ণ বলে লেখা হয়।
কলেজের অধ্যক্ষা স্বপ্না মুখোপাধ্যায় বলেন, “টুকলি ও নিগ্রহে অভিযুক্ত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পরামর্শ নিয়ে পম্পার একটি পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও এদিন ফলাফলের তালিকায় তিনি পাশ করেছেন দেখে বিস্মিত হই। কিছু পড়ুয়া বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানান। এর পরেই কলেজের তরফে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।” বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক সনাতন দাস বলেন, “প্রযুক্তিগত ক্রুটির কারণে ফলাফলের তালিকায় ভুল করে পম্পাদেবী পাশ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের জানানো মাত্রই কলেজে সংশোধিত তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়।” |